ঢাকা: ওকাভাঙ্গো অববাহিকার নাম অনেকেরই জানা। বোতসোয়ানা দক্ষিণ আফ্রিকার একটি দেশ।
ওকাভাঙ্গো নদী অববাহিকায় রয়েছে বোতসোয়ানার প্রাকৃতির সৌন্দর্যের নানান নিপুণ উৎস ও প্রাণী বৈচিত্র।
নদীর ওপর প্রতিফলন
বোতসোয়ানার উত্তরে রয়েছে প্রাচীন খাল সেলিন্ডা স্পিলওয়ে। আফ্রিকা মহাদেশের অসাধারণ প্রাকৃতিক আবাসস্থলের মধ্যে এটি একটি। সেলিন্ডা স্পিলওয়ে বোতসোয়ানার দক্ষিণে অবস্থিত। এটি মূলত দুইদিকে অববাহিত হয়েছে। পশ্চিমে বোতসোয়ানার ওকাভাঙ্গোর ওপরের অঞ্চলের সাথে মিলিত হয়েছে, অপরদিকে এসে মিশেছে পূর্বে নামিবিয়ার লিনিয়ানতি জলাশয়ের সঙ্গে। সেলিন্ডা রিজার্ভের মূল আকর্ষণ হলো এর ৩ লক্ষ বিশ হাজার একর জুড়ে থাকা অরণ্য, সমভূমি, উপহ্রদ এবং জলাভূমি।
স্পিলওয়ে পরিক্রমণ
সেলিন্ডা রিজার্ভে ঘুড়ে বেড়ানোর সবচেয়ে ভালো উপায় হলো ছোট নৌকা। স্পিলওয়েরে প্লাবণভূমিতে এটি ছিল পাঁচদিন, চার রাতের নৌ অভিযান। ৪৫ কিলোমিটারের নৌকা যাত্রা ওকাভাঙ্গো অববাহিকার উত্তর-পূর্ব থেকে পূর্বদিক পেরিয়ে পৌঁছে সেলিন্ডা ক্যাম্পে। সেলিন্ডা ক্যাম্প এই রিজার্ভের দুটি ক্যাম্পের একটি।
দর্শনীয় সাফারি
এই স্পিলওয়েটি ওকাভাঙ্গো অববাহিকা ও বোতসোয়ানার উত্তরের আফ্রিকার সর্বপ্রথম ন্যাশনাল পার্ক— ছব ন্যাশন্যাল পার্কের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ ঘটেছে। এটিই দেশটির সবচেয়ে জীববৈচিত্রপূর্ণ এলাকা। এখানটা সিংহ, কালাহারি হাতি ও মহিষের জন্য বিখ্যাত।
বোতসোয়ানার অসাধারণ মরুদ্যান
বোতসোয়ানার বিশেষ আকর্ষণ এর মরুদ্যান। গৃহযুদ্ধ ও অ্যাঙ্গোলার সীমান্ত দ্বন্দ্বের জন্য এই উপ-দ্বীপটি এখনও তেমন উন্নত নয়। এখন থেকে চারশ বছর আগে ওকাভাঙ্গো নদী বরাবর আবাদী জমি প্রসারিত হওয়ায় মানুষ এখানে বসবাস করছে। আর তারাই আফ্রিকার অবশিষ্ট আর্দ্র মরভূমির ধারক। এছাড়া জলাভূমি ও হাজার হাজার দ্বীপের সমন্বয়ে তৈরি হয়েছে আফ্রিকার এই আর্দ্র্ মরুভূমি।
সমৃদ্ধ জীবজগৎ
ওকাভাঙ্গো আববাহিকায় রয়েছে ১৬০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, রয়েছে ৫৩০ প্রজাতির পাখি, দেড়শ সরীসৃপ আর নানান প্রজাতির গাছগাছালি। এখানকার মূল আকর্ষণ হলো কালাহারি হাতি। এই এলাকায় এ প্রজাতির হাতির সংখ্যা প্রায় ৮ লাখ! এছাড়া সিংহ, বন্য কুকুর, চিতাবাঘ, মহিষ, জিরাফ, জলহস্তী, জেব্রা, হায়েনা এখানকার স্থায়ী বাসিন্দা। রাতে দেখা মিলে নিশাচর সব প্রাণী যেমন খাটাস, বন্য বিড়াল ইত্যাদি।
বিপন্ন প্রাণিকুল রক্ষা
ওকাভাঙ্গো অববাহিকা প্রাণী সম্পদে পরিপূর্ণ। আর শিকারও হতো নির্বিচারে। যার ফলে ১৯৯০ সালের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত অনেক প্রজাতির নব্বই শতাংশ প্রাণীই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। সম্প্রতি বছরগুলোতে প্রাণী সংরেক্ষণের প্রচেষ্টা জোরদার করা হচ্ছে। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য ও পর্যটকদের জীববৈচিত্রপূর্ণ এই এলাকায় আসায় আকৃষ্ট করতে ২০১৩ সালে বোতসোয়ানার প্রেসিডেন্ট ইয়েন খামা বন্যপ্রাণী শিকারের নতুন লাইসেন্স ইস্যু বাতিল করেন। ২০১৪ সালের জুনে ওকাভাঙ্গো অববাহিকা ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের এক হাজারতম স্থান পায়।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৫