প্রায় ১০ বর্গ কিলোমিটারের এই দ্বীপটিতে এখনো কোনো জনবসতি গড়ে ওঠেনি, কিংবা নেই কোনো গাছপালা। বর্ষার ছয় মাস পানিতে ডুবে থাকে এ চরটি আবার শীতের মৌসুমে ধু-ধু বালুচর।
কুয়াকাটা থেকে ট্যুরিস্ট বোটে যেতে সময় লাগে প্রায় দুই ঘণ্টা। এ সময় পর্যটকগণ উপভোগ করতে পারবেন সমুদ্রের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য। বিস্তীর্ণ জলরাশি ও সমুদ্রের বিশালতা ভ্রমণে ভিন্ন মাত্রা যোগ করবে।
দ্বীপের কাছাকাছি গেলেই স্বাগত জানাবে অসংখ্য পরিযায়ী পাখি। বোট থেকে নামলেই লাল গালিচা সংবর্ধনা জানাবে লাল কাঁকড়ায় জড়ানো দ্বীপ। দ্বীপের স্বচ্ছ জলে সামুদ্রিক মাছের ছোটাছুটি নিমেষেই আপনার সারাদিনের ক্লান্ত মনকে ভরিয়ে দেবে অন্যরকম আনন্দে। তবে এ দ্বীপে কোনো দোকানপাট নেই, তাই কুয়াকাটা থেকেই খাবার ও পানিসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংঙ্গে নিয়ে যেতে হবে। সকালে গিয়ে বিকেলেই ফিরে আসা যায়।
কুয়াকাটার সি ট্যুরিজমের উদ্যোগে ট্যুরিস্ট বোট নিয়ে গত কয়েক দিন আগে নতুনের সন্ধানে ঢাকার পর্যটক আর স্থানীয় কুয়াকাটা বঙ্গবন্ধু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের একটি দল বের হলে দেখা মেলে এ চরটির। বিজয়ের মাসকে কেন্দ্র করে এ ভ্রমণ প্রেমিকরা 'চর বিজয়' নামে আখ্যায়িত করেন নতুন চরটিকে।
কলাপাড়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) অনিপ দাস জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে চরটির স্থায়ীত্বের জন্য কাজ করা হচ্ছে। তবে আনুষ্ঠনিকভাবে কোনো নামের স্বীকৃতি দেয়নি সরকার। তাই দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে চরটিকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলতে ও নিরাপদ ভ্রমণের সম্ভাব্যতা নিশ্চিত করতে ২০১৭ সালে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন, কুয়াকাটা পৌর প্রশাসন, বন বিভাগ, ট্যুরিস্ট পুলিশ, নৌ পুলিশ, হোটেল মালিক সমিতি, সামাজিক, স্বেচ্ছাসেবী এবং পরিবেশ সংগঠন ও সাংবাদিকদের প্রতিনিধি, পর্যটন ব্যবসায়ীরাসহ বিভিন্ন সংগঠনের লোকজন চরটি পরিদর্শন করে।
বাগান সৃজনে রোপণ করা হয় ম্যানগ্রোভ প্রজাতির প্রায় ২ হাজার গোল, ছইলা, কেওড়া ও সুন্দরী গাছের চারা। যার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা ওড়ানো ও সরকারের পক্ষে সাইনবোর্ড টানিয়ে দেয়া হয়।
সবমিলিয়ে 'চর বিজয়' এক অপার সম্ভাবনাময় পর্যটনস্থল। এই শীতে আপনিও ঘুরে আসতে পারেন বিজয়ের নামাঙ্কিত অপরূপ চরটিতে।
বাংলাদেশ সময়: ০০৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০১৯
আরএ