ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আগরতলা

আগরতলায় শুরু হলো জি-২০ বিজ্ঞান সামিট

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩, ২০২৩
আগরতলায় শুরু হলো জি-২০ বিজ্ঞান সামিট

আগরতলা (ত্রিপুরা): আগরতলায় সোমবার (৩ এপ্রিল) শুরু হয়েছে গ্রুপ অব টুয়েন্টির (জি -২০) সামিট। এদিন স্থানীয় সময় সকাল ৯টা থেকে সদস্য দেশ থেকে আগত প্রতিনিধিদের নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।

 

রাজধানীর আগরতলার হাঁপানিয়া এলাকার আন্তর্জাতিক মেলা প্রাঙ্গণের ইনডোর অডিটোরিয়ামে এ আলোচনা শুরু হয়েছে। এরপর বেলা ১১টা নাগাদ ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা মানিক সাহা ইনডোর হলে এক্সিবিশন সেন্টারে প্রদর্শনী সূচনা করেন ও ঘুরে দেখেন।  

এই প্রদর্শনীতে ত্রিপুরা রাজ্যের কুটির শিল্পের বিভিন্ন সামগ্রী কৃষিজাত পণ্যসহ রাজ্যের উৎপাদিত বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী তুলে ধরা হয়েছে।

তারপর মুখ্যমন্ত্রী দেশ-বিদেশের প্রতিনিধিদের এবং ত্রিপুরা রাজ্যের ব্যবসায়ী ও শিল্প উদ্যোগীদের নিয়ে এক বৈঠক করেন। প্রায় দেড় ঘণ্টা চলে এই বৈঠক। এরপর মুখ্যমন্ত্রী এক সংবাদ সম্মেলনে মিলিত হন।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ছয়টি থিমকে সামনে রেখে ভারতের সামিট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। রাজ্য হচ্ছে বিজ্ঞান সামিট। মূল আলোচনার পাশাপাশি ত্রিপুরা রাজ্যের পর্যটন এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ত্রিপুরার রাজ্যে বিপুল পরিমাণ বায়োগ্যাস এবং বাঁশ রয়েছে। এই বাঁশগুলো কাজে লাগিয়ে জ্বালানি এবং শক্তি উৎপাদনের বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন প্রতিনিধিরা। রাজ্যে বাঁশ শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ভিয়েতনামকে মডেল করার পরামর্শ দিয়েছেন প্রতিনিধিরা। সেই সঙ্গে বাঁশ থেকে হাইড্রোজেন তৈরির বিষয়েও গুরুত্ব দিয়েছেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনায় ভারতের অন্যান্য রাজ্য এমনকি বিদেশ থেকে আগত ব্যবসায়ীরাও এখানে ব্যবসা এবং কারখানা স্থাপনের বিষয়ে উৎসাহ দেখিয়েছেন। হাসপাতাল স্বাস্থ্যপরিসেবা, ইলেকট্রিক গাড়ি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, পর্যটন, হোটেল, ওষুধ কারখানার স্থাপন, ইনফরমেশন এবং টেকনোলজি, চা রাবার আগর ইত্যাদি শিল্প খাতে বিনিয়োগের বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছেন বলে জানান।

এদিনের এই সংবাদ সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা সরকারের শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের মন্ত্রী সান্তনা চাকমা, জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা, রাজ্যের মুখ্য সচিব জে কে সিনহা প্রমুখ।  

মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) তাদের রাজ্যের বিভিন্ন পর্যটনস্থল ঘুরিয়ে দেখানো হবে। সেই সঙ্গে আরও কিছু কর্মসূচিতে অংশ নেবেন তারা। সবশেষে বুধবার (৫ এপ্রিল) প্রতিনিধিরা রাজ্য ত্যাগ করবেন।

গ্রুপ অব টুয়েন্টি (জি -২০) হলো আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সহযোগিতার প্রধান ফোরাম। এটি সমস্ত প্রধান আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ইস্যুতে বৈশ্বিক স্থাপত্য এবং শাসন গঠন এবং শক্তিশালীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জি-২০ মূলত ১৯টি দেশ নিয়ে গঠিত। এই দেশগুলো হলো  আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইতালি, জাপান, কোরিয়া প্রজাতন্ত্র, মেক্সিকো, রাশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, তুর্কিয়ে, যুক্তরাজ্য, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

১ ডিসেম্বর ২০২২ থেকে ৩০ নভেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত জি -২০ এর সভাপতিত্বে রয়েছে ভারত। সারা ভারতে ৫৬টি জায়গায় প্রায় ২০০টি বৈঠক এবং সামিট হচ্ছে। এসব বৈঠকে প্রায় ২৯টি দেশ ও ১৫টি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন। আগরতলা আয়োজিত  এই সামিটে জি-২০ দেশের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সংস্থা, নীতি আয়োগ, ভারতের বিভিন্ন সংস্থা থেকে প্রায় ৭৫ জন প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন। আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, ইন্দোনেশিয়া, ইতালি, জাপান, কোরিয়া, মেক্সিকো, রাশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য, বাংলাদেশ, মিশর, নাইজেরিয়া, মরিশাস, নেদারল্যান্ডস, সিঙ্গাপুর, স্পেন।

অংশগ্রহণকারী গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলো হলো ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল সায়েন্স একাডেমি, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স, ন্যাশনাল কেমিক্যাল ল্যাবরেটরি, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ওশান টেকনোলজি, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যাডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ, আইআইটি দিল্লি, আইআইটি রোপার, দা এনার্জি অ্যান্ড রিসোর্সস  ইনস্টিটিউট, ইন্টারন্যাশনাল মুদ্রা তহবিল, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ইত্যাদি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০২৩
এসসিএন/এসএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।