অতীতে জমিতে চাষ দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হতো গরু মোষের টানা লাঙ্গল, ধান সহ অন্যান্য সামগ্রী এমনকি মানুষজন এক স্থান থেকে অন্যস্থানে চলাচলের জন্যও গরুর গাড়ি ব্যবহার হতো। অন্য সকল এলাকার মত ত্রিপুরা রাজ্যের সব জায়গাতেই গরুর গাড়ির প্রচলন ছিলো।
কিন্তু আধুনিক যন্ত্র সভ্যতার অগ্রগতির কারণে এখন গরুর গাড়ি ইতিহাসের পাতায় স্থান নিয়েছে, সেই জায়গায় এসেছে মোটর চালিত যানবাহন ও যন্ত্রপাতি। এখন চাইলেই গরুরগাড়ি পাওয়া যায় না। অন্যান্য জায়গার মত ত্রিপুরাতেও এখন গরুর গাড়ি নেই বললেই চলে। তাই নব প্রজন্মের শহর কেন্দ্রিক ছেলেমেয়েদের কাছে এটি আভিধানিক শব্দ হিসেবে পরিচিত।
তবে আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়ার মত ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলা থেকে প্রায় ৩৩ কিমি দূরে পশ্চিম জেলার অন্তর্গত মোহনপুর মহকুমার কাঠালতলী গ্রামের চাষি সুভাষ দেবনাথকে গরুরগাড়ি ব্যবহার করতে দেখা গেল। সুভাষ বাংলানিউজকে জানান তার বাপ দাদারা কৃষি কাজ সহ বাড়ির বিভিন্ন কাজে গরু ও গরুরগাড়ি ব্যবহার করতেন। উত্তরাধিকার সূত্রে তিনি এই প্রথা আজও ধরে রেখেছেন। এর কারণ হিসেবে তিনি জানান গরুগুলিকে জমিতে যেমন হাল চাষের কাজে ব্যবহার করা হয় আবার এই গরুগুলিকেই গাড়ি টানার কাজে ব্যবহার করেন। তাই খরচ অনেকটা কম। তিনি আরো জানান তার মত নিম্নবিত্ত চাষিদের পক্ষে কৃষি কাজে ট্রাক্টর ব্যবহার করার মত আর্থিক সঙ্গতি নেই।
এই গাড়িটি বেশ পুরনো। এই এলাকায় শুধুমাত্র তারই একটি গরুর গাড়ি রয়েছে। ত্রিপুরায় এখন গরুর গাড়ি দেখা যায় না বলেও জানান, তাই শহরাঞ্চল থেকে আসা লোকজন তাকে গরুর গাড়ি নিয়ে চলাচলের সময় মোবাইলে সেলফি তোলেন। তখন কেমন লাগে এই প্রশ্নের উত্তরে সুভাষ জানান বেশ ভালো লাগে এই ভেবে যে প্রাচীন একটি ব্যবস্থাকে তিনি ধরে রেখেছেন।
এখন গরুরগাড়ি বানানোর মত কারিগর নেই বললেই চলে তাই চাইলেই আর গরুর গাড়ি তৈরি সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।
এই গাড়িতো একদিন চালানোর অযোগ্য হয়ে পড়বে তখন কি করবেন? এর উত্তরে তিনি জানান তখন হয়তো বাধ্য হয়ে বিকল্প ব্যবস্থা অবলম্বন করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০২০ ঘণ্টা, আগস্ট ০১, ২০১৭
এসসিএন/আরআই