রাবার উৎপাদনে ভারতের মধ্যে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ত্রিপুরা রাজ্য। রাবার গাছের লেটেক্স (কষ) থেকে এ রাজ্যে প্রতিবছর প্রায় ৭৫ হাজার মেট্রিক টন রাবার সিট উৎপাদিত হয়।
কিন্তু করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে বর্তমানে ভারতজুড়ে লকডাউন চলছে। যদিও কৃষিসহ শিল্পক্ষেত্রে সরকার লকডাউনের নিয়মকানুনে কিছুটা শিথিলতা আনা হয়েছে। এর ফলে রাবার উৎপাদন করতে পারলেও দাম কমায় এবং চাহিদা কমে যাওয়ায় হতাশায় রয়েছেন চাষিরা।
পশ্চিম জেলার অন্তর্গত মোহনপুর এলাকার রাবার চাষি লোকেশ তালুকদার বাংলানিউজকে বলেন, লকডাউনের আগে যেখানে প্রতি কেজি রাবার সিট সর্বোচ্চ ১২০ রুপিতে বিক্রি হতো। সেখানে এখন চাহিদা না থাকায় প্রতিকেজি রাবার সিট ৯০ থেকে সর্বোচ্চ ১০০ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু এরপরও আগের মতো রাবার সিটের চাহিদা নেই।
দাম কমে যাওয়ার পরও রাবার সিটের চাহিদা নেই কেন? এর উত্তরে তিনি বলেন, ত্রিপুরার ৯০ শতাংশের বেশি রাবার কিনেন অন্য রাজ্যের ব্যবসায়ীরা। কিন্তু লকডাউনের কারণে তারা আসতে পারছেন না। এ অবস্থায় রাবারের উৎপাদন খরচ তোলাও কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই অনেক চাষি রাবার গাছ থেকে লেটেক্স সংগ্রহ করছেন না। এর জেরে যে শুধু চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এমনটা নয়, লেটেক্স সংগ্রহের কাজের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকরাও কাজ পাচ্ছেন না। ফলে সব শ্রমিকদের পরিবারকে আর্থিক সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, তার বাগানে প্রায় ৫ হাজার গাছ রয়েছে। যেখানে প্রতিদিন প্রতিটি গাছ থেকে লেটেক্স সংগ্রহ করা হতো, কিন্তু এখন দিনে অর্ধেক সংখ্যক গাছ থেকেও লেটেক্স আহরণ করা হচ্ছে না।
কবে নাগাদ সবকিছু স্বাভাবিক হবে এবং রাবার রপ্তানি আগের মতো হবে এ বিষয়ে কেউ কিছু বলতে পারছেন না। তাই উৎকণ্ঠার মধ্যে অপেক্ষার প্রহরগোনা ছাড়া রাবার চাষি থেকে শুরু করে এর সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকদের আর কিছুই করার নেই। চাইলে রাজ্য সরকারও এ পরিমাণ রাবার কাজে লাগাতে পারবে না, কারণ ত্রিপুরায় বছরে ৭৫ হাজার মেট্রিক টন রাবার প্রক্রিয়াজাত করে পণ্য তৈরি করার মতো শিল্প কারখানা গড়ে ওঠেনি। তাই এ অবস্থায় রাজ্য সরকারেরও তেমন কিছু করার নেই। একই অবস্থা ত্রিপুরার প্রতিটি জেলার রাবার চাষিরা। -যোগ করেন লোকেশ তালুকদার
এ বিষয়ে জানতে শিল্প উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যানকে ফোন করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। লকডাউনের কারণে ত্রিপুরার অনেক অফিস বন্ধ রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৫ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০২০
এসসিএন/ওএইচ