ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আগরতলা

ক্যানসার প্রতিরোধক ‘ননী ফলের’ বাণিজ্যিক চাষ সম্ভব

সুদীপ চন্দ্র নাথ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৯ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২০
ক্যানসার প্রতিরোধক ‘ননী ফলের’ বাণিজ্যিক চাষ সম্ভব গাছের ঝুলছে ননী ফল। ছবি: বাংলানিউজ

আগরতলা (ত্রিপুরা): অনলাইন শপিং সাইট এবং বড় বড় শপিংমলের দৌলতে বর্তমানে আমরা সবাই জানি যে ‘ননী ফল’ হচ্ছে শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য এক মহৌষধ। তাই বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য ও ওষুধ নির্মাণকারী সংস্থা ‘ননী ফলের’ জুস বোতল ভর্তি করে বাজারজাত করছে।

রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং সুস্বাস্থ্য এবং সুন্দর শরীর গঠনের জন্য বর্তমানে এ ফলটির প্যাকেটজাত জুস যুব সমাজের একটা বড় অংশ পান করে থাকেন।

আধুনিক গবেষণায় দেখা যায়, ‘ননী ফলের’ রস ক্যানসার প্রতিরোধেও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

এছাড়া প্রাচীন আয়ুর্বেদ শাস্ত্র ‘ননী ফলের’ ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে।

ধর্মনগর কলেজের বায়োলজি বিভাগের অতিথি অধ্যাপক এবং পিএইচডির রিচার্জ স্কলার উমা দাস বাংলানিউজকে জানান, ‘ননী ফলের’ বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে ‘গ্রেভিওলা’। এই গাছটি মূলত ক্রান্তীয় অঞ্চলে অর্থাৎ ভারত উপমহাদেশে জন্মায়। এই অঞ্চলের আবহাওয়া গাছটির বেড়ে ওঠার জন্য খুবই উপযোগী।  এমনকি ত্রিপুরাসহ উত্তর পূর্ব ভারতের বিভিন্ন এলাকার জঙ্গলে প্রাকৃতিকভাবে গুল্মজাতীয় এই গাছটি জন্মায় বলেও জানান তিনি।

গাছের ঝুলছে ননী ফল।  ছবি: বাংলানিউজউমা দাস জানান, বহু জায়গায় এটির উপকারিতা চিন্তা করে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হচ্ছে। ত্রিপুরা রাজ্যের মাটি ননী চাষের জন্য উপযুক্ত হলেও এখন পর্যন্ত কেউ বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু করেননি। তবে বিভিন্ন সময় বনমহোৎসব রাজধানী আগরতলা এবং রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় রাস্তার পাশে ও পার্কে ননীর গাছ রোপন করা হয়েছিল। খুব একটা যত্ন না করলেও এই গাছগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ননী ফল ধরতে দেখা যায়। তবে বিশ্বজুড়ে যেভাবে ‘ননী ফলের’ উপকারিতার কথা নতুন করে ছড়িয়ে পড়ছে আগামীদিনে ত্রিপুরা রাজ্য এই ফলের গাছ চাষ হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন উমা দাস।

এই গাছের কাণ্ডে প্রথমে ঘন সবুজ রঙের ডিমের মতো একটি ফল ধরে। এটি বড় হলে দানাদার মতন হয় এবং এই দানাগুলোর মধ্য থেকে সাদা রঙের ছোট ছোট ফুল ফুটে। ফলের মধ্যে এই ফুলগুলোর গোড়ায় বীজ ধরে। ননী ফলের প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ‘বি১’, ভিটামিন ‘বি২’, ভিটামিন ‘বি৩’, ভিটামিন ‘বি১২’, ভিটামিন ‘সি’, ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন এবং ফসফরাসসহ আরও বেশ কিছু উপাদান রয়েছে।

ননী ফল।  ছবি: বাংলানিউজঅনেক লোক বিশেষ করে জনজাতি অংশের মানুষ এই ফলটিকে রান্না করে খায়। আধুনিক গবেষণায় নতুন করে ননীকে অনেক উপকারী একটি ফল বলে উল্লেখ করা হলেও বহু প্রাচীন কাল থেকে আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে এই ফলের ব্যবহার রয়েছে। হাড়ের সমস্যা সমাধানে, ইউরিক অ্যাসিড, সর্দি-কাশির সমস্যা এবং রক্তচাপ ও ক্লান্তি দূর করার জন্য ননী ফলের ব্যবহার হয়ে আসছে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৪ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২০
এসসিএন/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।