আগরতলা (ত্রিপুরা): ত্রিপুরা সরকারের প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতর পশ্চিম জেলার বোজংনগর থানাধীন আর কে নগর এলাকায় তৈরি করেছে সবুজ ঘাসের পার্ক। মূলত উন্নত মানের বিভিন্ন প্রজাতির ঘাস চাষ করা হচ্ছে পার্কের প্রায় ৭০ একর জায়গা জুড়ে।
এই পার্কে মূলত কাম্বো নেপিয়ার, কঙ্গো সিগনাল, গিনি, প্যারা ইত্যাদি উন্নত প্রজাতির ঘাস চাষ করা হচ্ছে বলে বাংলানিউজকে জানান প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের অধীকর্তা ডি কে চাকমা। তিনি আরও জানান, উন্নত প্রজাতির এই ঘাসগুলো একবার জমিতে চাষ করলে বহু বছর এগুলো থেকে গবাদিপশুর খাবারের জন্য ঘাস সংগ্রহ করা সম্ভব। বর্ষা কালে বৃষ্টির পানি পেয়ে ঘাসগুলো বড় হয় এবং শীতের মৌসুমে জমিতে পানি সেচ দিলে সারা বছর ধরে ঘাস পাওয়া সম্ভব। কঙ্গো সিগনাল একবার চাষ করলে বহুদিন ঘাস পাওয়া যায়। কাম্বো নেপিয়ার, গিনি, প্যারা ইত্যাদি ঘাস কাটিং বা চারা লাগিয়ে চাষ করা হয়। অপর দিকে কঙ্গো সিগনাল ঘাসের বীজ দিয়ে চাষ করা হয়।
জানা যায়, সবুজ ঘাসের পার্কে উৎপাদিত ঘাস আর কে নগরেই প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের খামারে পালিত গরু, ছাগল খরগোশসহ অন্যান্য প্রাণিদের খাওয়ানো হয়। এছাড়া রাজ্যের খামারিদের মধ্যে বিতরণ করার জন্য ঘাসের চারা, বীজ উৎপাদন করা হয়। সরকারি বিভিন্ন প্রকল্প, মহাত্মা গান্ধী রাষ্ট্রীয় গ্রামীণ রোজগার প্রকল্পসহ বন দফতরের পতিত জমিতে ঘাস লাগানোর জন্য প্রয়োজনীয় চারা ও বীজ সরবরাহ করা হয়।
অন্যান্য বছরের মতো এবছরও এই সবুজ পার্ক থেকে ২০ লাখ ঘাসের কাটিং চারা উৎপাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে বলেও জানান প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের অধীকর্তা।
জানা যায়, রাজ্যের বিভিন্ন এলাকার খামারিরা নগদ মূল্যে সবুজ ঘাস ও চারা কিনে নিয়ে যান। এ বছরের জুন মাসে ৩২ হাজার রুপির ঘাস ও চারা বিক্রি করা হয়েছে পার্ক থেকে।
আর কে নগরের সবুজ ঘাসের পার্ক ছাড়াও ত্রিপুরা সরকারের প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের অধীনে দেবীপুর, গান্ধীগ্রাম, নালকাটা, নালীছড়া, ধর্মনগরসহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় ঘাসের খামার রয়েছে। সেখান থেকেও সবুজ ঘাস ও ঘাসের চারা বিক্রি করা হয়।
ডি কে চাকমা জানান, পার্কে যেসব প্রজাতির ঘাস চাষ হয় সেগুলো অন্যান্য সাধারণ প্রজাতির ঘাসের চেয়ে অনেক বেশি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। সাধারণ ঘাসে যেখানে প্রোটিন মান ৩ থেকে ৪ শতাংশ থাকে সেখানে উন্নত প্রজাতির এই ঘাসগুলোতে প্রোটিন মান থাকে ৮ থেকে ১২ শতাংশ এবং সেই সঙ্গে প্রচুর পরিমাণ ধাতব লবণ থাকে। এই প্রজাতির ঘাসগুলো বিঘা প্রতি ১৫ থেকে ৩৫ মেট্রিক টন পর্যন্ত উৎপাদিত হয়ে থাকে। তাই দফতর খামারিদের উৎসাহিত করছে উন্নত প্রজাতির এই ঘাস চাষের জন্য।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০২০
এসসিএন/এইচএডি