আগরতলা (ত্রিপুরা): আগরতলার দুর্গাবাড়ী টি এস্টেট ওয়ার্কার্স কো-অপারেটিভ প্রাইভেট লিমিটেডের চা-প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রটি কিছুদিন আগেও গমগম করতো মেশিনের শব্দে ও কর্মীদের কোলাহলে। আর কারখানার কয়লার চুল্লির ধোঁয়ায় দূর থেকেই জানান দিতো চা-পাতা প্রক্রিয়াকরণ করা হচ্ছে।
কেবল বাইরে থেকে কারখানার ভেতরে টুংটাং শব্দ শোনা যায়। কারণ বর্তমান শুষ্ক মৌসুমে চা-গাছে পাতা উৎপাদন কমে যায়। তাই টি বোর্ড অব ইন্ডিয়া ভারতের সব বাগানে নির্দেশ পাঠায় শুষ্ক মৌসুমে চা-পাতা তোলা ও প্রক্রিয়া করার কাজ বন্ধ রাখার জন্য।
প্রতি বছরের মতো এবছরও টি বোর্ড অব ইন্ডিয়ার দেওয়া নির্দেশ মেনে গত ২১ ডিসেম্বর চা-প্রক্রিয়াকরণ বন্ধ করা হয়েছে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন দুর্গাবাড়ী টি এস্টেট ওয়ার্কার্স কো-অপারেটিভ প্রাইভেট লিমিটেডের চা-প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রের ম্যানেজার প্রশান্ত দেব।
তিনি বলেন, বর্তমানে চা-পাতা তোলার কাজ বন্ধ থাকলেও শ্রমিকরা বসে নেই। তারা গাছের প্রুনিং এর কাজ করছেন। অর্থাৎ বাগানের চা-গাছের সবুজ পাতার নিচের ডালের একটি নির্দিষ্ট অংশ কেটে দেওয়া ফেলা হচ্ছে। যাতে আগামী মার্চ মাস নাগাদ বৃষ্টি হলে গাছের কাটা অংশে আবার নতুন করে বেশি পরিমাণ কুঁড়ি আসে। অপরদিকে কারখানার কয়লার চুল্লি থেকে শুরু করে সব মেশিন মেরামত করা হচ্ছে। যাতে সারা বছর মেশিনে কোনো ধরনের সমস্যা ছাড়া ভালো ভাবে মেশিন গুলো কাজ করে। যদি কোনো ধরনের অঘটন অথবা প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হয় তাহলে আগামী বছরের এপ্রিল মাসের শুরু থেকে চা-পাতা পুরোদমে প্রক্রিয়াকরণের কাজ শুরু করা যায়।
জানা যায়, করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে অন্যান্য শিল্পের মতো চা-শিল্পের উৎপাদনেও প্রভাব পড়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর শুধুমাত্র দুর্গাবাড়ী টি এস্টেট ওয়ার্কার্স কো-অপারেটিভ প্রাইভেট লিমিটেডের চা-প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রেই তিন লাখ ১৭ কেজি সবুজ কাঁচাপাতা কম এসেছে। এর ফলে উৎপাদনও কম হয়েছে। এ বছর কারখানাটিতে বিভিন্ন বাগান থেকে আসা মোট ২১ লাখ ৯২ হাজার ৪১২ কেজি কাঁচাপাতা থেকে মোট চার লাখ ৮২ হাজার ৩০০ কেজি চা-পাতা প্রক্রিয়াজাত করা হয়েছে।
কারখানাটিতে দৈনিক চা-পাতা প্রক্রিয়াকরণ করার ক্ষমতা রয়েছে ৩০ হাজার কেজি। আশা করা হচ্ছে আগামী বছর সব বাধা কাটিয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ চা উৎপাদন করা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০২০
এসসিএন/আরআইএস