ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আগরতলা

ত্রিপুরার খোয়াই জেলায় বাড়ছে মৌ চাষ

সুদীপ চন্দ্র নাথ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯০৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০২১
ত্রিপুরার খোয়াই জেলায় বাড়ছে মৌ চাষ

আগরতলা (ত্রিপুরা): ত্রিপুরা খাদি ও গ্রামোদ্যোগ পর্ষদের বর্তমান কমিটি রাজ্যের মানুষের আর্থিক অবস্থার উন্নতির জন্য ব্যাপক কাজ করছে। শুধুমাত্র খোয়াই জেলাতে প্রতি বছর নতুন করে ১৫০ জন লোককে মৌমাছি পালনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে বলে বাংলানিউজকে জানালেন মাস্টার ট্রেনার নেপাল দেবনাথ।

 

ত্রিপুরা খাদি ও গ্রামোদ্যোগ পর্ষদ (কেবিআইসি) গত দুই বছরে খোয়াই জেলাতে প্রশিক্ষণ এবং বক্সসহ মধু সংগ্রহের সামগ্রী বিনা মূল্যে সরবরাহ করেছে। কেবিআইসি প্রতি বছর ২৫০টি নতুন বক্স সুবিধাভোগীদের মধ্যে বিতরণ করছে। এই খালি বক্সগুলোতে মৌমাছির নতুন কলোনি দিতে হয় খোয়াই জেলার কল্যাণপুরের কমলনগরের বাসিন্দা নেপাল দেবনাথকে।  

কারণ তিনি গত ৩ বছর ধরে কেবিআইসির মৌমাছি পালন বিভাগের খোয়াই জেলার মাস্টার ট্রেনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। নতুন নতুন সুবিধাভোগীদের মধ্যে মৌমাছিসহ বাক্স সরবরাহ করার পাশাপাশি মৌমাছি পালন সংক্রান্ত কোনো সমস্যা দেখা দিলে তিনি নিজে তাদের বাড়িতে গিয়ে সমস্যা সমাধান করে আসেন। তার নিজ বাড়িতেই ২২টি মৌমাছির বক্স রয়েছে।  

অন্যদের মৌমাছি পালন এবং মধু সংগ্রহের বিষয়ে কাজ করলেও তার বাড়ির এই বক্সগুলো থেকে খুব কম মধু সংগ্রহ করেন নেপাল। নতুন নতুন কলোনি তৈরির জন্য তিনি এই বক্সের মৌমাছিগুলোকে ব্যবহার করেন। তার মতে, মৌমাছি পালনের জন্য বেশি অর্থের প্রয়োজন হয় না। নিয়মিত ভাবে পরিচর্যা করলে পর্যাপ্ত পরিমাণ মধু আহরণ করা সম্ভব এবং মৌমাছির নতুন কলোনিও তৈরি করা যায়।  

শীত মৌসুম মধু সংগ্রহের জন্য সবচেয়ে় আদর্শ সময়। কারণ শীতকালে নানা ধরনের সবজি ও সর্ষের ফুল হয়ে থাকে। এই ফুলগুলো থেকে রেণু সংগ্রহ করে মৌমাছিরা। তাই শীতকালে বেশি পরিমাণে মধু পাওয়া যায়। বর্তমান সময়ে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মৌমাছি পালনের নানা উপকরণ ও নানা কৌশল খুঁজে বের করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এই পদ্ধতিগুলোর অবলম্বন করলে খুব সহজে এবং দ্রুত মৌমাছির বক্স থেকে মধু সংগ্রহ করা যায়।  

এর মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে ফাউন্ডেশন সিটের ব্যবহার। অনেক সময় নতুন কলোনিকে নতুন একটি বক্সে প্রতিস্থাপিত করলে মৌমাছি খোপের মধ্যে চাক তৈরি করতে পারে না। তখন মৌচাক তথা ফাউন্ডেশন সিট দিলে শ্রমিক মৌমাছি খুব দ্রুত চাক তৈরি করে নেয় ও সহজেই মধু সংগ্রহ, বাচ্চা উৎপাদন ইত্যাদি কাজ শুরু করে।

নেপাল দেবনাথ জানান, গত তিন বছর ধরে কেবিআইসির মাস্টার ট্রেনার হিসেবে কাজ করলেও দীর্ঘ ২৬ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি নিজের আগ্রহ থেকে মৌমাছি পালন করে আসছেন। আগামী দিনেও যদি এভাবে কেবিআইসি কাজ করে যায় তবে গ্রামীণ এলাকার মানুষের আর্থিক অবস্থার ব্যাপক উন্নতি হবে শুধু মৌমাছি পালনের মধ্য দিয়ে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০২১
এসসিএন/এইচএডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।