আগরতলা (ত্রিপুরা): করোনা মহামারীর ফলে বড় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন তেলিয়ামুড়ার লেবু চাষিরা। অন্য সময় যে পরিমাণে লেবুর চাহিদা থাকতো করোনার কারণে গত এক বছর ধরে তার অর্ধেকও নেই বলে জানিয়েছেন চাষিরা।
আনারস ও কাঁঠালের মতো ত্রিপুরা রাজ্যের মাটি লেবু চাষের জন্যও বিখ্যাত। পাতি, কাগজি, এলাইচি, গন্ধরাজসহ নানা প্রজাতির লেবুর চাষ হয় ত্রিপুরা রাজ্যে। তবে সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে গন্ধরাজ লেবুর। এই লেবুতে প্রচুর পরিমাণে রস আছে আবার সুগন্ধির জন্যেও এর খ্যাতি রয়েছে। গন্ধরাজ লেবু সবচেয়ে বেশি পরিমাণে চাষ হয় খোয়াই জেলার তেলিয়ামুড়া মহকুমার হাওয়াই বাড়ি, পশ্চিম হাওয়াই বাড়ি, থ্যাংনাইসহ অন্যান্য এলাকায়।
তেলিয়ামুড়া থেকে এই লেবু রাজধানী আগরতলাসহ রাজ্যের প্রায় প্রতিটি প্রান্তে যায়। এমনকি পাইকারের এই লেবু অসমের শিলচারসহ আরও কিছু জায়গায় রপ্তানি করেন বলে জানান তেলিয়ামুড়া এলাকার লেবু চাষি সুভাষ দাস।
তিনি জানান, এই লেবু সারা বছর ধরে চাষ হয়। বর্ষার মৌসুমে প্রচুর পরিমাণে লেবুর উৎপাদন হয়। এই সময় চাষিদের কাছ থেকে পাইকাররা প্রতিটি লেবু এক থেকে দেড় রুপি করে কেনেন। তবে চাষিরা সবচেয়ে বেশি লাভবান হন শীতকালে। তখন লেবুর উৎপাদন পরিমাণে কম হলেও একটি লেবু ১৫ থেকে ২০ রুপি দামে বিক্রি হয় বলেও জানান তিনি।
তবে গত এক বছর ধরে তেলিয়ামুড়ার লেবু চাষিরা আর্থিক ভাবে ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন করোনা মহামারীর কারণে। যে পরিমাণ লেবু উৎপাদিত হচ্ছে সেই পরিমাণে চাহিদা নেই ত্রিপুরাসহ পার্শবর্তী রাজ্যে।
গত বছর করোনা মহামারীর মধ্যেও তেলিয়ামুড়া প্রাইমারি মার্কেটিং কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড স্থানীয় এলাকার লেবু চাষিদের কাছ থেকে ন্যায্য মূল্যে লেবু কিনে ছিল, ফলে করোনার মধ্যেও কিছুটা সহায়তা হয়েছিল কিন্তু এ বছর কো-অপারেটিভ সোসাইটি লেবু না কেনায় তারা চরম সমস্যায় পড়েছেন বলে জানান সুভাষ।
এমন অবস্থা শুধু মাত্র তারই নয়। তার মতো তেলিয়ামুড়ার শত শত লেবু চাষির একই অবস্থা। রাজ্য সরকার যদি রাজ্যে একটি লেবু প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র চালু করতো তবে তাদের কোনো সমস্যা থাকতো না। পাশাপাশি আরো অনেক মানুষ লেবু চাষে উৎসাহিত হত এবং নতুন করে প্রচুর সংখ্যায় মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হতো।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫০ ঘণ্টা, মে ২২, ২০২১
এসসিএন/কেএআর