আগরতলা, (ত্রিপুরা): কাঁঠালের পর এবার ত্রিপুরার বাঁশ পাতার তৈরি চা পাড়ি দিয়েছে যুক্তরাজ্যে। আগরতলার সমীর নামে এক যুবক এই প্রথম বাঁশের পাতা দিয়ে চা তৈরি করেছেন।
বাঁশ পাতা দিয়ে চা তৈরির পরিকল্পনা এলো কীভাবে? জানতে চাইলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমি বেম্বো সোসাইটি অব ইন্ডিয়ার একজন আজীবন সদস্য। এই সংস্থার প্রতিনিধি হিসেবে একাধিকবার চীনসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে গিয়েছিলাম। তখন সেখানকার বাঁশ সংক্রান্ত কর্মশালায় যোগ দিয়েছিলাম। তখন বাঁশের পাতার চা দেখেছি। প্রাচীনকাল থেকে তো চীনে বাঁশ পাতা দিয়ে চা তৈরির প্রচলন রয়েছে। মূলত নানা ওষুধিগুন রয়েছে ওই পাতায়। এই গুনের জন্য এই চায়ের চাহিদা রয়েছে।
বাঁশ পাতার চায়ের রং এবং স্বাদ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রং সাধারণ চায়ের মত লাল এবং স্বাদও একই রকম। এতে সাধারণ চা থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি সুগন্ধি রয়েছে। এখন বিশ্বের অনেক দেশে শুধু বাঁশ পাতার চা বিক্রি হয়। আবার কিছু কিছু সংস্থাগুলো আদা ও গোলমরিচসহ অন্যান্য সামগ্রী দিয়েও বাজারজাত করে থাকে ওই চা। তবে আমি শুধু বাঁশ পাতার চা তৈরি করে পাঠিয়েছি।
ত্রিপুরা রাজ্যে প্রায় ৩০ প্রজাতির বাঁশ রয়েছে। এর মধ্যে কোনো প্রজাতির বাঁশ পাতা দিয়ে এই চা তৈরি করেছেন এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সব প্রজাতির বাঁশ পাতা দিয়েই এই চা তৈরি সম্ভব। তবে এই পাতাগুলো কনককাইচ বাঁশের পাতা দিয়ে তৈরি করেছি। বাঁশ বাগানের নিচের দিকে যেসব পরিপক্ক পাতা থাকে এগুলোকে সংগ্রহ করে বিশেষ পদ্ধতিতে শুকিয়ে চা পাতা তৈরি করেছি। বাঁশ পাতার মধ্যে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিবায়োটিক এবং অ্যান্টিক্যানসার ওষুধিগুন রয়েছে। এছাড়া চুল, ত্বক, দাঁতের রোগপ্রতিরোধ করে, হাড় ও দাঁত শক্তিশালী করতে সহায়তা করে এবং আরও অনেক উপকারী গুন রয়েছে বাঁশ পাতার চায়ের। সমীর বলেন, ত্রিপুরাসহ সমগ্র উত্তর-পূর্বভারতের বাঁশ বাগানে কোনো ধরনের রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয় না। সম্পূর্ণ জৈব পদ্ধতিতে এই বাঁশগাছ লাগানো হয়েছে। তাই তার আশা এই পাতা যুক্তরাজ্যের গবেষণাগারে পরীক্ষা করা হলে তা আবার প্রমাণিত হবে এবং এর ব্যাপক চাহিদা হবে। এখন বিশ্বের অনেক দেশে ও চীনে বাঁশ পাতার চা বিক্রি করছে। যদি বিদেশে ত্রিপুরার বাঁশ পাতার চায়ের বাজার তৈরি হয়। তবে ব্যবসার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৬ ঘণ্টা, মে ২২, ২০২১
এসসিএন/এএটি