আগরতলা, (ত্রিপুরা): বর্তমান সরকার ত্রিপুরা রাজ্যে সিঙ্গেল উইন্ডো সিস্টেম চালু করেছে। এর ফলে শিল্প স্থাপনে উৎসাহ বাড়ছে রাজ্যের যুব প্রজন্মের মধ্যে।
যেখানে ৭ লাখের বেশি বেকারের সংখ্যা ছিলো এই ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর বর্তমানে এই সংখ্যা অনেকটাই নিচের দিকে নেমে এসেছে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন ত্রিপুরা রাজ্য শিল্প উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান টিংকু রায়।
তিনি বলেন, সহজ এই পদ্ধতি চালু করায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বেকাররা এখন আর বসে না থেকে এগিয়ে আসছে ছোট ছোট শিল্প-কারখানা গড়ে তোলার জন্য। রাজ্য সরকারও এক্ষেত্রে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে তাদেরকে। গত সাড়ে তিন বছরে শুধুমাত্র স্বাবলম্বন প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যে চার হাজারেরও বেশি ক্ষুদ্র এবং অন্যান্য শিল্প স্থাপন করা সম্ভব হয়েছে। এতে ১২ হাজারেরও বেশি নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে।
এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী সুনিশ্চিত কর্ম সংস্থান প্রকল্পে (পিএমইজিপি) প্রায় ৩ হাজারের বেশি ক্ষুদ্র শিল্প স্থাপন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ২০ হাজারেরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।
ত্রিপুরা শিল্প উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান টিংকু রায় আরো বলেন, বিগত দিনে যেখানে শিল্প স্থাপনের জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে জমি কিংবা প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহ করতে গিয়ে শিল্পোদ্যোগীদেরকে নানাভাবে হয়রানি করা হতো, সেখানে বর্তমান সময়ে তা আর করা হচ্ছে না। একেবারে অনায়াসে শিল্পোদ্যোগীদের যে কেউ তাদের শিল্প স্থাপনের ক্ষেত্রে অনলাইনে আবেদন করার সুযোগ যেমন পাচ্ছে তেমনি নানা দিক থেকে সরলীকরণ করা হয়েছে শিল্প স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় অন্য সব ক্ষেত্রেও। সিঙ্গেল উইন্ডো সিস্টেম চালু করার ফলে এখন আগ্রহী লোকেরা একেবারে অনায়াসে একই ছাদের তলায় শিল্প স্থাপনের প্রয়োজনি ছাড়পত্র, লাইসেন্সসহ সব ধরনের সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই উৎসাহ বেড়েছে তাদের মধ্যে। সরকার সেই অনুযায়ী তাদের কথা মাথায় রেখে সাবেক বাম আমলে যেসব শিল্প কারখানাগুলিকে অকেজো করে ফেলে রাখা হয়েছিলো এগুলিকে আবার সংস্কার করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৯৫ শতাংশ শিল্প-কারখানাই আবার চালু করা হয়েছে। বাকিগুলিকেও আবার কাজের উপযোগি করার কাজ চলছে।
টিংকু রায় বলেন, উত্তর জেলার ধর্মনগরের দুটি শিল্প-কারখানাকে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ করে রাখার ফলে যেখানে জঙ্গল গিয়েছিলো, এই কারখানাগুলিকে আবার চালু করার চেষ্টা চলছে। আগে সেখানে শুধুমাত্র একটি দুধ প্যাকেটজাত করার কারখানা থাকলেও এখন সেখানে রাজ্যের সর্ববৃহৎ ধান ভাঙানোর মিল তৈরির কাজ চলছে।
কিষান সম্প্রদায় যোজনায় ১৫ কোটি রুপি ব্যয়ে কারখানাটি গড়ে তোলা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
একইভাবে আগরতলার এডি নগরের বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা শিল্প-কারখানাসহ বাধারঘাটের শিল্প তালুকটি আবার চালু করার কাজ এখন এগিয়ে চলছে।
তাছাড়াও সাব্রুম, উদয়পুর, শান্তিরবাজার, বিলোনিয়ায় শিল্প স্থাপনের লক্ষ্যে গড়ে তোলা হচ্ছে নতুন নতুন শিল্প তালুকগুলি। ধলাই জেলার কমলপুরে এবং উত্তর ত্রিপুরা জেলার রাগনা এলাকায় দুটি সীমান্ত হাট স্থাপনের জন্য বাংলাদেশ সরকার সম্মত হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২১
এসসিএন/এএটি