রিয়াদ: অগ্রহায়ণ এলেই বাংলার ঘরে ঘরে নতুন ধানের মৌ মৌ গন্ধ, ফসল তোলা আর নবান্নের গান। পৌষের শীতে পিঠা-পুলির ধুম।
বৃহস্পতিবার (৮ জানুয়ারি) রোদ্দুর সাহিত্য পরিষদের আয়োজনে এ পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। জেদ্দার উপকণ্ঠ দাহবানের একটি পিকনিক স্পটে শীতের পিঠার এ উৎসবের আয়োজন করা হয়।
সাহিত্য-সংস্কৃতি-সমাজভাবনা লালনের প্রত্যয়ে জেদ্দায় দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে রোদ্দুর সাহিত্য পরিষদ। শীত পড়েছে, আর পিঠা উৎসব হবে না? রোদ্দুরের বিবেচনায় তেমনটি হবার নয়। আয়োজকদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে অংশগ্রহণকারী গৃহিনীরা আসেন পিঠা হাতে। এ পিঠা উৎসব যেন তাদের মধ্যে নীরব প্রতিযোগিতার সৃষ্টি করেছে। সাত-আট রকমের পিঠা নিয়ে উপস্থিত হন একেকজন প্রবাসী গৃহিনী।
লম্বা টেবিল জুড়ে তাই পিঠা আর পিঠা। কি নেই এখানে? ভাপা পিঠা, পাটি সাপটা, পাকন, পুলি পিঠা, মিঠা পিঠা, ক্ষীর পুলি, নারকেল পুলি, আনারকলি, দুধ সাগর, চিতই কই, এমনি কতো শতো নামের পিঠা। এতো এতো পিঠা দেখে জিভে জল আসে!
তবে রসনা তৃপ্তির আগে আছে যাচাই-বাছাই। পুরস্কার দিতে হবে উত্তম পিঠা প্রস্তুতকারীকে। বিচারের সুবিধার্থে কারো নাম না লিখে কোড নম্বর দেওয়া হয় পিঠা রাখার পাতিলে। পাঁচজন বিচারক পিঠা দেখে, খেয়ে, নম্বর দিয়ে, আটজনকে পুরস্কৃত করেন।
প্রতিযোগিতায় বিজয়ীরা হলেন গুলশান আক্তার হেনা, সিফাত জাহান, মাসুমা আক্তার মণি, তাহা, কাকলী আক্তার।
বিচারকার্য শেষ হতেই চলে পিঠা খাওয়ার ধুম। পর্যাপ্ত পিঠা। তাই সবাই ইচ্ছেমত খেয়ে খুঁজে নেয় প্রবাসে স্বদেশের স্বাদ। প্রবাসে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্ম তৃপ্ত হয় বাংলার ঐতিহ্যে ভরপুর বাহারি সব পিঠার সমাহারে।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রোদ্দুর সম্পাদক আবুল বাশার বুলবুল। প্রধান অতিথি ছিলেন প্রকৌশলী মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন, বিশেষ অতিথি ছিলেন কাজী নেয়ামুল বশির।
কেএসএম শাহজাহানের সঞ্চালনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সৈয়দ আবদুজ জাহের জালাল, কাজী শাফায়েত, হোসেন, হুমায়ুন কবির, আনিসুর রহমান, জিয়াউল ইসলাম শাহিন, ইঞ্জিনিয়ার গোলাম সারোয়ার, জাকির হোসেন, মোজাম্মেল হক মোল্লা।
রাতের শেষ প্রহরে শীত জেঁকে বসেছে। তারপরও ‘রোদ্দুর শীতের পিঠা ২০১৫’এর উষ্ণতায় ঘরে ফেরার তাগাদা নেই যেন কারো। পিঠা উৎসব শেষ, অনুষ্ঠান শেষ। তবে শেষ হয়েও হয়নি শেষ, পিঠা-পুলির রেশ!
বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৫