রিয়াদ: সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে পরিচ্ছন্নকর্মী হিসেবে আছেন বাংলাদেশি আব্দুল করিম। সামান্য বেতন।
হয়তো সেই আফসোস নিয়েই একদিন কাজের ফাঁকে একটি স্বর্ণের দোকানে গিয়ে অপলক তাকিয়ে থাকেন গহনাগুলোর। এই ভঙ্গিটাই বন্দি হয়ে যায় কারও ক্যামেরায়। তারপর সেই আকুল ভঙ্গির ছবি উপহাসভরে পোস্ট হয় এক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্টে। কিন্তু এই উপহাসেই যেন মোড় ঘুরলো আব্দুল করিমের জীবনের।
এই ছবি নিয়ে অনেক উপহাস বা হাসি-তামাশা হয় প্রথম দিকে। একজন দরিদ্র পরিচ্ছন্নকর্মীর মহামূল্যবান স্বর্ণের গহনার দিকে তাকিয়ে থাকা নিয়ে উপহাসের কড়া নিন্দাও হতে থাকে। এই ছবিসহ আবেদনমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ হয় সিএনএন ও ডেইলি মেইলসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পত্রপত্রিকায়।
এরমধ্যে আব্দুল্লাহ আল-কাহতানি নামে একজন তার ‘ইনসানিয়াত’ নামের টুইটার অ্যাকাউন্টে ছবিটি পোস্ট করে আব্দুল করিমের পক্ষে মানবতাবাদীদের সমর্থন কামনা করেন।
তার ওই পোস্ট সাড়ে ৬ হাজারেরও বেশিবার রিটুইট হয়। টুইটার ব্যবহারকারীরা খুঁজে বের করে ফেলেন আব্দুল করিমকে। তাকে ভাসাতে থাকেন উপহারের পর উপহারে। তিনি পেয়েছেন স্বদেশে ঘুরে আসার প্লেন টিকিট, আইফোন ৭, স্যামসাং গ্যালাক্সি মোবাইল হ্যান্ডসেট গহনা সেট। পাচ্ছেন নগদ অর্থ, মধু ও চালও।
রিয়াদে কর্মরত ৬৫ বছর বয়সী এই বৃদ্ধ মাসে বেতন পান মাত্র ৭০০ রিয়াল (বাংলাদেশি ১৫ হাজার টাকা)। আলাপ করলে আব্দুল করিম বাংলানিউজকে জানান, তিনি বুঝতে পারেননি যে তার ছবি তোলা হয়েছে।
বলেন, “আমি আসলে আমার কাজ করছিলাম। পৌরসভা এলাকায় পরিচ্ছন্নতার কাজ। কাজ করতে করতে একটা সময় স্বর্ণের দোকানের কাছে চলে যাই। এখন উপহার পেয়ে খুব খুশি এবং কৃতজ্ঞ। ’
আব্দুল করিমের পক্ষে পোস্ট দেওয়া আল-কাহতানি জানান, এখন বাংলাদেশি এই বৃদ্ধ উপহারের পর উপহারে ভাসছেন। একজন টুইটার ব্যবহারকারী তাকে নগদ ২০০০ ডলার উপহার দেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি উপহাসের বদলে এখন কেবল উপহারই পেতে থাকবেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৬
এইচএ/