ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

খেলায়-হেলায় সমুদ্র সৈকতকে আঘাত

সাব্বির আহমেদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০১৬
খেলায়-হেলায় সমুদ্র সৈকতকে আঘাত ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

পর্যটন মোটেল শৈবাল থেকে: আনন্দ-উচ্ছ্বাসের সমুদ্র সৈকত। এ সৈকতের সঙ্গে ঢেউ খেললেও মানুষ চেতনে-অবচেতনেই আঘাত করে যাচ্ছে।

পর্যটকদের পানির বোতল, ওয়ানটাইম প্লাস্টিকের গ্লাস, চানাচুরের প্যাকেট, কাগজের টুকরো, বস্তাভর্তি ময়লার স্তূপ, ককশিট অথবা ভাসমান জুতার আঘাতে যেন কেঁদে কেঁদে উঠে বিশ্বের সবচেয়ে বড় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। এর সঙ্গে সৈকতজুড়ে ঘোড়ার দাপুটে ছোটাছুটি তো রয়েছেই।

সৈকতের প্রহরী ও সার্ফার সিফাত বলছিলেন, গেল কয়েকদিন আগে একটি পানীয় কোম্পানি বিচ কার্নিভাল করে গেছে। কিন্তু সৈকত রক্ষার জন্য বা পরিষ্কারে তারা একদম উদ্যোগী ছিল না। আর সৈকতে মানুষ আসে সমুদ্র স্নানে। সৈকতে হাঁটতে হাঁটতে গায়ে সমুদ্রের হাওয়া লাগাতে। অথচ এখানে ঘোড়ার ছোটাছুটি।
পৃথিবীর সবস্থানে সৈকত তীরে যে কাঠামো গড়ে তোলা হয়, তাতে ভবনের উচ্চতা কেবল ‘ট্রি-লেভেল’ পর্যন্ত থাকে। অর্থাৎ একটি গাছের উচ্চতা সমান ভবন হতে পারে, এর বেশি নয়। আরও ভালো হয়, প্রকৃতিবান্ধব অথবা প্রকৃতির মধ্যেই কোনো আবাস গড়ে তোলা। কিন্তু কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে যেন এর উল্টোচিত্র।
 
বাংলানিউজের পর্যটন আয়োজনে কক্সবাজারে এক বিকেল ঘুরে লাবনী থেকে কলাতলী পর্যন্ত অন্তত অর্ধশত ভবনের দেখা মেলেছে, যেগুলো ট্রি-লেভেল ছাড়িয়ে গেছে। যেন সৈকত নয়, প্রাসাদের শহর। আর এর সবগুলোই হোটেল-মোটেল রিসোর্ট।
তবে ভিন্নতাও আছে। কক্সবাজার শহর ছাড়িয়ে গেলে মারমেইডসহ কয়েকটি রিসোর্ট প্রকৃতিকে ধারণ করেছে প্রাকৃতিকভাবে। প্রকৃতির নিবিড়তাকে আলিঙ্গন করে তারা গড়ে তুলেছেন একেকটি পর্যটনবান্ধব প্রকৃতি নিবাস।

কক্সবাজারের পর্যটন নিয়ে দীর্ঘদিন কাজের অভিজ্ঞতা আছে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের ‘ন্যাশনাল হোটেল অ্যান্ড ট্যুরিজম ট্রেনিং ইনস্টিটিউট’র অধ্যক্ষ পারভেজ আহমেদ চৌধুরীর।
তিনি বলছিলেন, ‘সৈকতপাড়ে কোনো ভবনই ট্রি-লেভেলের ওপর হওয়া উচিত নয়। কিন্তু এখন আমরা কী দেখি?

সৈকত ঘুরে দেখা যায়, এখন সরকারিভাবে সমুদ্র তীর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়। কিন্তু কোনো কাজই ঠিকভাবে হচ্ছে বলে মনে করছেন না পর্যটকরা।
২০০৫ সালে সৈকতে একটি বেসরকারি সংস্থার হয়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করতে এসে আজকের সার্ফার হিসেবে পরিচিত সিফাত।
 
তিনি বলেন, ‘আমরা যখন কাজ করতাম তখন সারাদিন বিচ পরিষ্কার করতাম। কোনো ভাসমান বর্জ্য দেখলে দ্রুত সরিয়ে নিতাম। এখন সমুদ্রে এত ভাসমান ময়লা যে, নামলে পায়ে এসে বাধে। ’
সিফাতের বক্তব্য, সৈকতজুড়ে যে হকাররা চানাচুর-পানি সহ বিভিন্ন দ্রব্য বিক্রি করে, বেশিরভাগ ময়লা তাদেরই ফেলা। এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি কর্তৃপক্ষেরও সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
 
ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজারের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান মিল্পির পরামর্শ, সৈকতে পর্যটকদের মধ্যে এমন সচেতনতা জাগিয়ে তুলতে হবে যেন কোনো ময়লা-আবর্জনা ফেলার আগে অবশ্যই ভাবতে বাধ্য হন যে কেউ।



বাংলাদেশ সময়: ১৪৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০১৬
এসএ/এইচএ/

** বাংলানিউজ, ওয়েলকাম টু কক্সবাজার

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ