ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

‘ড্রিম পয়েন্টে’ বিচ বাইকে পুলিশের ‘চাঁদা’ একশো!

সাব্বির আহমেদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৬
‘ড্রিম পয়েন্টে’ বিচ বাইকে পুলিশের ‘চাঁদা’ একশো! ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ইনানী সৈকত (কক্সবাজার) ঘুরে: সাগরকে কাছ দেখা কিংবা সাগর তীরের মিষ্টি হাওয়া- এ উপলব্দি যেখানে মিলবে এর নাম ইনানী। পর্যটকের কাছে যা ইনানী ‘ড্রিম পয়েন্ট’।

এখানে কেউ আসেন ছাতার নিচে বসে সৈকত বা সমুদ্রের বিশাল ঢেউ দেখা, কেউ জোয়ার শেষে ভেসে ওঠা প্রবালের সঙ্গে ছবি তুলতে। কেউবা আবার সৈকতের তীর ধরে বিচ বাইকে ঘুরতেও চান।

তবে প্রতিটি বাইক সৈকতে নামাতে হলে আগে পুলিশকে দিতে হয় ১০০ টাকা করে। টাকা দিতে হয় বিচ কর্মীকেও।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব বিচ বাইক সৈকতে চলাচল করায় এখানকার সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। অনেক সময় দুর্ঘটনাও ঘটছে। আর এ বাহনটিকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজি তো রয়েছেই।

এসব বাইক চলাচল বন্ধে সংশ্লিষ্টদের কঠোর নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন পর্যটকরা।

সৈকত ঘুরে দেখা যায়, সৈকতে চলাচলকারী বিচ বাইকগুলোতে চড়তে প্রতিজনকে ১০০ থেকে ২০০ টাকায় খরচ করতে হয়। এভাবে একেকজন বাইক মালিকের দিনে আয় হচ্ছে কমপক্ষে হাজার টাকা।

তবে বিচে নামার আগেই প্রতি বাইকের জন্যে ট্যুরিস্ট পুলিশকে দিতে হয় ১০০ টাকা করে। যে টাকার বখরা পান বিচ কর্মীও।
 
বিচ মালিকরা জানান, স্থানীয় জেলা প্রশাসন থেকে অনুমতি নিয়ে ইনানী সৈকতে বিচ বাইক সার্ভিস শুরু হয়। দেড়লাখ টাকায় একটি বাইক (এটিভি) কিনে বিচে ভালোই ব্যবসা চলে।

তবে এসব বাইক বিচের পরিবেশের সঙ্গে বেমানান বলে মনে করেন অনেক পর্যটক।
 
জেলার চকোরিয়া উপজেলা থেকে বেড়াতে আসা আসিফ মৌলা বাংলানিউজকে বলেন, পরিবার নিয়ে বিচে গোসলের জন্য এসেছি। ছাতার নিচে কিছুক্ষণ বসে থেকে যখন সমুদ্র  উপভোগ করছি তখন মাথার পেছন দিয়ে ভনভন শব্দে বিচ বাইকগুলো সুখটাই নষ্ট করে দেয়।
 
‘আবার কোনো কোনো বিচ বাইক একেবারে তীরে এসে অন্যদের হাঁটাচলায় বাধার সৃষ্টি করে,’ তার সঙ্গে যোগ করেন স্ত্রী জেরিনা।


আসিফ মৌলা বলেন, ইনানী সৈকত অন্যসব বিচের চেয়ে আলাদা। একটু একান্ত মনে হাঁটাচলা করবে বাচ্চারা। সেই সুযোগ নষ্ট করে দিচ্ছে এসব বিচ বাইক।
 
জেলা প্রশাসন সূত্র জ‍ানায়, নির্ধারিত ফি নিয়ে বিচ বাইক চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে শর্তে দেওয়া হয়- ছাতা কিটকটের ২০ ফুট পেছনে চালাতে হবে। কোনো অবস্থাতেই কিটকটের কাছাকাছি বা সামনে পর্যটকদের বাধা দেওয়া যাবে না।

আর এসব নিয়ম না মানলে ৫ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা  হয়েছে।
 
তবে বিচ বাইকের মালিকরা জানান, নিয়ম না মানলেও অসুবিধা হয় না। কেননা সৈকতে নামার আগেই দায়িত্বরত পুলিশকে ১০০ টাকা দেওয়া হয়েছে। তাই পরবর্তীতে কেউ কিছু বলে না।

এটিভি বিচ বাইকের মালিক মাহবুবুল আলম বাংলানিউজকে জানান, ৬ মাস আগে যখন জেলা প্রশাসনের লাইসেন্স ছিলো না তখন পুলিশকে দিনে ২০০ টাকা দিতে হতো। অনুমোদনের পর দিতে হয় ১০০ টাকা।
 
এ নিয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে নালিশ দিয়েও কোনো কাজ হয় না বলে জানান তিনি।

মাহবুবুল আলম বলেন, ‘শুধু পুলিশ-ই নয়, বিচ কর্মীকেও সবাই মিলে টাকা দিয়ে খুশি রাখতে হয়। ’
 
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শুক্রবার (০৮ এপ্রিল) দুপুরে ইনানী সৈকতে দায়িত্বরত ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশ সদস্যরা বলেন, ‘বিচ বাইকের মালিকদের কাছ থেকে কোনো টাকা নেওয়া হয় না। ’


বাংলাদেশ সময়: ১৮৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৬
এসএ/জেডএস

** টেট্রাপডে রক্ষা সমুদ্র তীর, সৌন্দর্যের হাতছানি
** নো নিড টু গো অ্যাবরোড
** সাগর তীরে, পাহাড়ের ধারে স্বপ্নের মেরিন ড্রাইভ
**বিশ্বসেরা সার্ফিং ভিলেজ কক্সবাজার
**সম্ভাবনার ‘হিমছড়ি পিক’ অবহেলিত
** শিশুদের জন্য সেন্টমার্টিন নয়!
**‘বাবা, গোয়া সৈকতের সঙ্গে যে দারুণ মিল’
** নতুন পরিকল্পনায় সাজছে কক্সবাজার
** উত্তাল সাগর, উপচে পড়া রূপ
** সৈকতের প্রহরী, সাগরের যোদ্ধা
** খেলায়-হেলায় সমুদ্র সৈকতকে আঘাত
** সেন্টমার্টিনের বাহন ‘ভ্যানগাড়ি’
** সেন্টমার্টিন হারিয়ে যাবে!
** ছেঁড়া দ্বীপের মৌসুমী!
** সেন্টমার্টিন যেভাবে যাবেন
** তৃতীয় ধাপে চট্টগ্রাম টিম এখন কক্সবাজারে
** কক্সবাজারে বাংলানিউজের দ্বিতীয় টিম
** বছরজুড়ে দেশ ঘুরে: কক্সবাজারে বাংলানিউজ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ