ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

কোম্পানিগুলোর প্রলোভনে পর্যটন নগরীতে তামাক চাষ!

আবু খালিদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০১৬
কোম্পানিগুলোর প্রলোভনে পর্যটন নগরীতে তামাক চাষ! ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

রামু, কক্সবাজার থেকে ফিরে: কক্সবাজার জেলার রামু ও উখিয়া উপজেলার কৃষি জমির দিকে তাকালেই চোখে পড়বে একরের পর একর জমিতে তামাক চাষের চিত্র। এ অঞ্চলে তামাকের বাইরে অন্য ফসল চাষাবাদ লাভজনক হলেও তামাক কোম্পানির প্রলোভনে পড়ে তামাক চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা।

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, পর্যটন নগরী খ্যাত কক্সবাজারে এভাবে অবাধে তামাক চাষ নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এছাড়া কৃষি জমি ও কৃষকের ওপরও প্রভাব পড়ছে।
কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বাংলানিউজের সরেজমিনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
রামু উপজেলার কাওয়ারখোপ ইউনিয়নে পা দিতেই দেখা মিললো অবাধ তামাক চাষের চিত্র। এখানকার চাষিরা জমি থেকে তামাক পাতা সংগ্রহ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

 


এদের মধ্যে আজিজুল হক গত পাঁচ বছর ধরে দুই কানি জমিতে তামাক চাষ করছেন। তিনি জানান, তামাক চাষে কোম্পানি তাকে ঋৃণ দেয়। এ কারণেই তামাক চাষ করেন তিনি। প্রথম দুই বছর লাভ হলেও এ বছর লোকসানে পড়তে হবে। অধিকাংশ তামাক পাতাই নষ্ট হয়ে গেছে বলেও জানান তিনি।

এলাকাবাসীরা জানান, ঋণ পাওয়ার কারণেই তারা তামাক চাষ করেন। যে কোম্পানির কাছ থেকে ঋণ নেন তারা, সেই কোম্পানির কাছেই বিক্রি করতে হয়। অবশ্য বাজার দর অনুযায়ী দাম পান তারা। তবে লোকসানে পড়লে এর দায় কোম্পানি নেয় না।


পর্যটকরা এভাবে তামাক চাষকে নেতিবাচকভাবেই দেখছেন। কুমিল্লা থেকে আসা রাফি, সজল ও জুবায়ের বাংলানিউজকে বলেন, পর্যটন নগরীতে পরিবেশ বিরোধী তামাক চাষ সত্যিই দুঃখজনক।

তারা জানান, কক্সবাজারের প্রায় সব উপজেলাতেই দর্শনীয় স্থান রয়েছে। এসব স্থান পরিদর্শন করতে গিয়ে পর্যটকদের দেখতে হচ্ছে পরিবেশ সহায়ক নয় এমন পণ্যের চাষের চিত্র। এছাড়া বিভিন্ন উপজেলাতে তামাক পাতা প্রক্রিয়াজাতকরণ করায় পরিবেশের ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়ছে।

রামু উপজেলার তামাক চাষি মুনসুর মিয়া চলতি বছর একটি সিগারেট কোম্পানির কাছ থেকে এক লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ২০ কানি জমিতে তামাক চাষ করেছেন। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, অনেক দিন ধরে তামাক চাষ করায় এর ভেতর থেকে বের হতে পারছি না।

অন্যান্য কৃষি আবাদে লাভ হলেও ঋৃণের টাকা পরিশোধ করতে না পারার কারণে অনেকেই এই তামাক চাষ থেকে বের হতে পারছেন না বলেও জানান ওই তামাক চাষি।


তবে জেলায় তামাক চাষ নিরুৎসাহিত করতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পক্ষ থেকে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানালেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আ ক ম শাহরিয়ার।

এ কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমানে প্রায় এক হাজার হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হচ্ছে। তবে এর পরিমাণ কমতে শুরু করেছে। কিন্তু সিগারেট কোম্পানিগুলোর নানা প্রলোভনের কারণে কৃষকরা এই তামাক চাষ থেকে বের হয়ে আসতে পারছেন না।

সরেজমিনে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তামাক চাষ করা এসব চাষিদের শারীরিক অবস্থাও তেমন ভালো নয়। বছরের পর বছর তামাক চাষ করলেও আর্থিকভাবে আশানুরূপ লাভবান হতে পারছেন না এসব চাষিরা।

** সম্ভাবনাময় বাঁকখালী নদীর বুকে মেঘ জমছে!
** যেন স্বয়ং বুদ্ধ শুয়ে আছেন!
** পদ্ম বেচে সংসারে হাসি ফেরান আহমেদ হোসেন

বাংলাদেশ সময়: ১৩১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০১৬
একে/এমজেএফ/

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ