ঢাকা: এক ঘন্টার ট্রেইল হাঁটার চেয়ে সাতছড়িতে পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্য হয়ে উঠছে ওয়াচ টাওয়ার। এতে একদিকে রক্ষা পাচ্ছে বন, অন্যদিকে এক পলকে দেখা যাচ্ছে পুরো সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান।
২৪৩ দশমিক ১০ হেক্টরের সাতছড়িকে ২০০৫ সালে জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করা হয়। তারও বহু আগে থেকে পর্যটকদের ভিড় ছিলো সাতছড়িতে। এখনও দিনে কয়েক হাজার পর্যটক ঘুরতে আসেন সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে।
অবস্থানে হিসেবে এ উদ্যান সাতছড়ি বিটের রঘুনন্দন পাহাড়ি সংরক্ষিত বনের একটি অংশ। ঢাকা থেকে এর দূরত্ব ১৩০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে। শ্রীমঙ্গল থেকে ৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলায় অবস্থিত এ বন। বিরল ২শ’ প্রজাতির উদ্ভিদ আর ২শ’ প্রজাতির পশু-পাখি মিলিয়ে হরেক জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ এই উদ্যান।
হবিগঞ্জ বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের তথ্যে দেখা গেছে, সাতছড়িতে উল্লেখযোগ্য প্রাণীর মধ্যে রয়েছে- উল্লুক, মুখপোড়া হনুমান, চশমাপরা হনুমান, কুলু বানর, লজ্জাবতী বানর, কাঠবিড়ালি, খরগোশ, ডাইনি বাদুড়, বনবিড়াল, মেছো বিড়াল, গন্ধগোকুল, হলদে গলা মারটিন, মায়া হরিণ ইত্যাদি।
এছাড়া রয়েছে কাউ ধানেশ, পাতি ময়না, লালমাথা কুচকুচি, উদয়ী, বামনরাঙ্গা, মেটে হাড়িচাচা, খয়রামাথা গুমচা, জুটিয়াল গোদাশিকরে, তুর্কিবাজ, সবুজ ঘুঘু, সবুজ ধুমকল, চিত্র হুতুম পেঁচা, তামাটে বেনে বউ, পাতি সবুজ তাউরা, নীলগলা নীলচুটকি, কালাগলা টুনটুনি, কালাঝুটি বুলবুল, এশিয় শ্যামপাপিয়া, বেগুনি পাপিয়া, বাসন্তি লটকন টিয়া, লালমাথা টিয়া, সিঁদুরে সাহেলী ইত্যাদি।
সরীসৃপ প্রাণীর মধ্যে সাতছড়িতে রয়েছে উড়ন্ত টিকটিকি, নীলগলা গিরগিট, তক্ষক, গোখরা সাপ, সবুজ বোরা সাপ, ধোরা সাপ, লাউডগা সাপ, পাহাড়ি সাপ ইত্যাদি।
উভচর প্রাণীর মধ্যে সোনাব্যাঙ, কোনাব্যাঙ, বেনপু ব্যাঙ, লালপিঠ লাউবিচি ব্যাঙ, মুরগি ডাকা ব্যাঙ, লাল পা গেছো ব্যাঙ ইত্যাদি।
বনে জন্ম এবং বেড়ে উঠেছেন ত্রিপুরা ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর চন্দ্র। বনরক্ষক ও গাইড হিসেবেও তিনি কাজ করছেন অনেক দিন ধরে।
তার ভাষায়, উল্লুক আগে পরিবার নিয়ে সাতছড়ি এখনকার পিকনিক স্পট এলাকায় ঘুরতো। তবে পিকনিক স্পট ও মানুষের চলাচল বেড়ে যাওয়ায় তারা ভেতরের দিকে চলে গেছে। এখন দুই কিলোমিটার গভীরে চাপালিশ গাছের উঁচুতে দেখা যায় এদের।
এছাড়া সচরাচর দেখা প্রাণীদের মধ্যে বানর ও হনুমানই বেশি। একটু বনের ভেতরে গেলে পাখির কলকাকলি বেশি শোনা যায়।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মিহির কান্তি বাংলানিউজকে জানান, পুরো উদ্যানটি এক পলকে দেখার জন্য ওয়াচ টাওয়ারই সবেচেয়ে উত্তম জায়গা।
সেখান থেকে বন খুব সহজে অথচ সুন্দরভাবে দেখা যায়। ওয়াচ টাওয়ারে ওঠার জন্য কিছু সিঁড়ির ধাপ পার হতে হয়। টেন্ডার করা হয়েছে, কয়েক মাসের মধ্যে পাকা সিঁড়িও হয়ে যাবে বলেও জানান তিনি।
** বাসে বিমানের ছোঁয়া!
**এসি বাস নেই সিলেট রুটে!
বাংলাদেশ সময়: ২৩১০ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৬
এসএ/এএসআর