শ্রীমঙ্গলের টি হ্যাভেন রিসোর্ট থেকে: সিলেটে পর্যটনের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে বাংলানিউজের এডিটর ইন চিফ আলমগীর হোসেন বলেন, সিলেটে পর্যটনের যে এতো সম্ভাবনা আছে আমাদের অনেকেরই তা জানা নেই। এখানকার পর্যটন সম্ভাবনা প্রচার করতে আমরা এ উদ্যোগ নিয়েছি।
রোববার (২৪ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে শ্রীমঙ্গলের টি হ্যাভেন রিসোর্টে ‘সিলেটে পর্যটন’ শীর্ষক বাংলানিউজ আয়োজিত বিশেষ আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
দেশের শীর্ষ নিউজপোর্টাল বাংলানিউজের ‘বছরজুড়ে দেশ ঘুরে’ কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় কক্সবাজারের পর এবার ‘সিলেটে পর্যটন’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন।
স্বাগত বক্তব্যে আলমগীর হোসেন বলেন, সরকার ঘোষিত পর্যটন বর্ষকে আরো সাফল্যমণ্ডিত করতে আমাদের এ আয়োজন। কক্সবাজারের পর সিলেটে এবারের আয়োজনেও আমরা অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি। যা চিন্তাই করা যায় না, বলতে হবে সবার অংশগ্রহণ। বাংলানিউজ উদ্যোগ নিয়েছে, সেখানে সবাই অংশ নিয়েছেন।
‘বিশেষ করে পর্যটনমন্ত্রী সঙ্গে না থাকলে আমাদের পক্ষে এতো বড় কাজ করা সম্ভব হতো না। ’
তিনি বলেন, ‘গত ১৪ জুলাই থেকে আমাদের একটা টিম সিলেট এলাকা চষে বেড়িয়েছে। এতে পর্যটন মন্ত্রণালয়ের বড় একটা সুবিধা হবে কোন কোন জায়গায় উন্নয়ন দরকার, বিশেষ করে ট্যুরিস্টদের জন্য। আমাদের ইনকামের বড় একটি খাত ট্যুরিজম। এদিক দিয়ে আমাদের দেশ এখনও শিশু। ’
‘আমরা কুইক নিউজ দেই, এটাই আমাদের ঐতিহ্য। আমাদের প্রায় ১৭০ জন কর্মী রয়েছে, যারা ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই সঠিক খবরটি প্রচার করতে কাজ করছেন। ’
অনলাইনের প্রসার প্রসঙ্গে বাংলাদেশে অনলাইনের জনক আলমগীর হোসেন বলেন, আজ যে নিউজ দেখছেন কাল খবরের কাগজে দশ মিনিটেই পড়া শেষ, কেননা আপনার যদি আর্টিকেল নির্দিষ্ট করা থাকে তাহলে পড়তে কতক্ষণ লাগবে? তরুণ প্রজন্ম এখন হ্যান্ডসেটেই খবর পড়ছে, তারা খবরের কাগজ পড়ে না।
নিজের দীর্ঘ সাংবাদিকতা জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ১৯৭৪ সালে শ্রীমঙ্গলে এসেছিলাম। তখন কেউ লাউয়াছড়া যেতে চাইলে ভাবতো যাওয়া যাবে না, বাঘে খাবে! কিন্তু এখন সেখানে মানুষ যাচ্ছেন, প্রকৃতিকে কাছ থেকে দেখছেন।
বাংলানিউজের পর্যটন বিষয়ক অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে আলমগীর হোসেন বলেন, আমরা এ অনুষ্ঠান ঢাকায় করতে পারতাম। কিন্তু ঢাকার জীবনাচার আর এখানকার জীবনাচার সম্পূর্ণ ভিন্ন। এ ভিন্নতা তুলে ধরতেই চায়ের রাজধানী শ্রীমঙ্গলে আমাদের এ আয়োজন।
‘আমাদের এ আয়োজনে স্থানীয় প্রশাসন অভূতপূর্ব সহযোগিতা করেছে। একই সঙ্গে সহযোগিতা করেছেন হোটেল রিসোর্টের মালিক এবং এলাকার মানুষ। এজন্য আমি সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই,’ যোগ করেন তিনি।
বাংলানিউজের এডিটর ইন চিফ আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন- মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মাসুকুর রহমান সিকদার, ট্যুরিস্ট পুলিশের সিনিয়র এএসপি এ কে এম মোশাররফ হোসেন, শ্রীমঙ্গলের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) বিশ্বজিৎ কুমার পাল, শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান, টি-হ্যাভেন রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুলতান মো. ইদ্রিস লেদু, পরিচালক আবু সিদ্দিক মো. মুসা, শ্রীমঙ্গল ইনের চেয়ারম্যান ছায়েদ আলী, শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এম ইদ্রিস আলী, শ্রীমঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ভানুলাল রায়, সিলেট জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সিকান্দর আলী, ইউএসএইড-এর ক্লাইমেট রেসিলিয়েন্ট ইকোসিস্টেমস অ্যান্ড লাইভলিহুডস (ক্রেল) প্রকল্পের কমিউনিকেশনস ম্যানেজার ওবায়দুল ফাতাহ তানভীর প্রমুখ।
এছাড়া ছিলেন-স্থানীয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বন বিভাগের কর্মকর্তাসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার প্রতিনিধিরাও। এর আগে শুক্রবার (২২ জুলা্ই) একই রিসোর্টে ‘সিলেটে পর্যটন’র সম্ভাবনা ও এর নানা সমস্যার চিত্র নিয়ে বিশেষজ্ঞ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রজেক্টরের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয় সিলেট বিভাগের চার জেলায় সরেজমিনে বাংলানিউজ কর্মীদের করা বিভিন্ন প্রতিবেদন। পরে বিশেষজ্ঞ আলোচনায় অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকসহ পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলানিউজের এ উদ্যোগে সহযোগিতা করে হোটেল শ্রীমঙ্গল ইন, টি হ্যাভেন রিসোর্ট, ইউএসএইড-এর ক্রেল প্রকল্প ও সিলেটের নির্ভানা ইন এবং এমএম ইস্পাহানি লিমিটেড। সার্বিক সহযোগিতা করেছেন সিলেট ও শ্রীমঙ্গলের শুভানুধ্যায়ীরা।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩০ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০১৬
এমএ/এসএ/এসএম/এসএনএস/এমজেএফ/এমআই/জেডএস