ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

নট ইউজিং ‘ইউজ মি’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৬
নট ইউজিং ‘ইউজ মি’

তূর্ণা এক্সপ্রেস থেকে: পুরো রেলওয়ে স্টেশনে কয়েক কদম পরপর ‘ইউজ মি’ লেখা নীল রঙা ডাস্টবিন রাখা। কিন্তু সেই ডাস্টবিন যেন চোখে পড়ে না কারও।

সে জন্যই স্টেশনে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে বাদামের খোসা, পাউরুটি-কেক-চানাচুরের প্যাকেট এবং কলার খোসা। এমনকি ঠিক যে জায়গায়টায় ডাস্টবিন রাখা, তার পাশেই পড়ে থাকতে দেখা গেল চানাচুর-চিপসের প্যাকেট।

বুধবার (১২ অক্টোবর) রাত ১২টা ০২ মিনিটে ঢাকার বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে যাত্রা, তূর্ণা নিশীথা এক্সপ্রেসে। ট্রেনে চেপে বসার আগে স্টেশন ঘুরে দেখা গেল ময়লা-আবর্জনা ফেলার ক্ষেত্রে যাত্রী সাধারণের অসচেতনতার এমন চিত্র।

স্টেশন প্রবেশের পর হাতের ডান দিকে শোভন শ্রেণী, প্রথম শ্রেণী (স্নিগ্ধা/এসি) ও ভিআইপি বিশ্রামাগার। ট্রেনের অপেক্ষায় এই কক্ষগুলোতে বিশ্রাম নিচ্ছেন যাত্রীরা। শোভন-প্রথম শ্রেণীর বিশ্রামাগারে যাত্রী গমগম করলেও কোনো ভিআইপি যাত্রী না থাকায় সেই কক্ষকে তালাবদ্ধই দেখা গেলো।

শোভন শ্রেণীর বিশ্রামাগারের ঠিক সামনে রাখা ‘ইউজ মি’ ডাস্টবিন। সেই ডাস্টবিনের নিচে পড়ে আছে কয়েকটি চানাচুর-চিপসের প্যাকেট। আছে সিগারেটের প্যাকেটও।

এই বিশ্রামাগার থেকে কিছুটা দূরে যাত্রী বসার আসনের নিচেই বাদামের খোসা। অপেক্ষারত যাত্রী যেন ইচ্ছে করেই ফেলে রেখেছেন এখানে, যদিও তার ঠিক পাশে রাখা ‘ইউজ মি’। কিন্তু ওই যাত্রী যেন সেটিকে দেখেননি।

তারও কিছুটা দূরে আরেকটি ডাস্টবিনের নিচে পড়ে আছে কফি পানের ওয়ানটাইম প্লাস্টিকের কাপ ও কয়েকটি প্যাকেট।
বিশ্রামাগার ও শৌচাগারের পর স্টেশনের ডানপাশের শেষ দিকে কিছুটা খোলামতো জায়গা। যা দেখে মনে হয়েছে যেনো স্টেশনের ভাসমান লোকজনের মূত্রত্যাগের-ই মোক্ষম স্থান এটি।

ডাস্টবিন থাকা সত্ত্বেও এভাবে ময়লা-আবর্জনা যত্রতত্র ফেলে রাখার বিষয়টি চোখে লাগে সচেতন মানুষের। অনেক যাত্রী আক্ষেপও করেন।

যেমন আক্ষেপ ঝাড়লেন চট্টগ্রামগামী যাত্রী হাবিব উল্লাহ। তিনি বলছিলেন, এখানে কর্তৃপক্ষের আর কিছু করার নেই। তারা ডাস্টবিন দিয়ে রেখেছে। এরপরও যাত্রীরা যদি এর ব্যবহার না করে পরিবেশ নষ্ট করেন, তার দায়ভার যাত্রীদেরই।

যত্রতত্র ময়লা ফেলার ক্ষেত্রে ভাসমান মানুষের চেয়ে ট্রেনের যাত্রীদেরই বেশি দোষ দিতে চান হাবিব। তার মতে, কফি বা চা যাত্রীরাই পান করেন বেশি। চানাচুর-চিপসের প্যাকেটও ছোড়েন শোভন বা প্রথম শ্রেণীর বিশ্রামাগার কিংবা প্লাটফর্মে অপেক্ষারত যাত্রীরা।

শোভন শ্রেণীর বিশ্রামাগারের সামনের ডাস্টবিনের নিচে পড়ে থাকা আবর্জনা দেখিয়ে তিনি বলেন, এই চিপস-চানাচুরের প্যাকেট ওই বিশ্রামাগার থেকেই ফেলা হয়েছে। ডাস্টবিন থাকা সত্ত্বেও এভাবে ময়লা-আবর্জনা ছুড়ে ফেলে আমরা সাধারণ যাত্রীরাই পরিবেশ নষ্ট করছি।

তবে, বিপরীত আশাবাদের চিত্রও দেখা গেল। হতাশার এই চিত্র যখন ধরা পড়ছিল ক্যামেরায়, তখন এক যাত্রীকেই দেখা গেল কিছুটা পথ হেঁটে ‘ইউজ মি’ ডাস্টবিনে বিস্কুটের প্যাকেট ফেলে তার সঠিক ‘ইউজ’ করতে।

এ বিষয়ে স্টেশনে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য আবদুল হালিম বলেন, সবার আগে আমাদেরই সচেতন হতে হবে। সরকার কিংবা রেলওয়ে স্টেশনে ডাস্টবিন দিয়েছে। এখন তা ব্যবহার না করে অনেকেই প্লাটফর্মে ময়লা ফেলেন। যা খুবই গর্হিত কাজ। আমাদের অভ্যাস চেঞ্জ করা উচিৎ।

বাংলাদেশ সময়: ০৬১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৬
এইচএ/এমএ/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ