ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

জার্নি টু সাজেক

মবিনুল ইসলাম, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৬
জার্নি টু সাজেক ছবি: ডি এইচ বাদল

সাজেক থেকে ফিরে: ভোরের আলো ফোটার আগেই সকাল ছয়টায় খাগড়াছড়ির শাপলা চত্বরে হাজির সবাই। একটাই লক্ষ্য সাজেক ভ্যালি যাওয়া।

সাজেক রাঙ্গামাটি জেলায় অবস্থিত হলেও যোগাযোগের সুবিধার জন্য পর্যটক মাত্রই খাগড়াছড়ি রুটটি ব্যবহার করেন।

সাজেক যেতে সকাল সাড়ে সাতটায় রওয়ানা দিলেই হয়। কেননা সাড়ে দশটায় আর্মি ক্যাম্পে সাজেক যাওয়ার জন্য সিরিয়াল দিতে হবে। কিন্ত আমাদের উদ্দেশ্য একই পথে হাজাছড়া ঝর্ণা দেখে যাওয়া।

শাপলা চত্বর থেকে চান্দের গাড়ি, সিএনজি ও মোটরসাইকেল তিনভাবেই যাওয়া যায়। নিজস্ব যানবাহন থাকলে আরও ভালো।

খাগড়াছড়ি থেকে দীঘিনালা সড়ক দিয়ে সাজেক যাওয়ার এই একটিমাত্র পথ। পুরোটাই পাহাড়ি পথ, পাহাড়ের উপর দিয়ে উঁচু নিচু রাস্তা। কোনো কোনো স্থানে রাস্তা উঠে গেছে আকাশপানে আবার পরক্ষণেই নেমে গেছে পাতালে।

খাগড়াপুর, আটমাইল, বিয়ারৗং বোয়ালখালি পার হয়ে দীঘিনালা বাসস্ট্যান্ড। মাইনি নদীর বেইলি ব্রিজ পার হয়ে কবাখালি বাজার হয়ে পৌঁছে গেলাম হাজাছড়া। সেখান থেকে মাটির রাস্তায় পনের মিনিট হাঁটার পর পৌঁছে গেলাম হাজাছড়া ঝরনা। দৃষ্টিনন্দন এ ঝরনাটি সাজেক ভ্রমণে এনে দেবে ভিন্নমাত্রা।

রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি আর্মি ক্যাম্পে পৌঁছালাম সাড়ে দশটার একটু আগেই। সিরিয়াল দিতে গিয়ে কর্তব্যরত আর্মি অফিসারকে জিজ্ঞাসা করলাম প্রতিদিন গড়ে কতটি গাড়ি সাজেক যায় আর পর্যটকের সংখ্যা কতো? তিনি জানালেন, সিজন মাত্র শুরু হচ্ছে। বর্তমানে ১০০ গাড়িতে হাজারেরও অধিক পর্যটক সাজেকে যান। সিজনে পর্যটক সংখ্যা দৈনিক ৫ হাজার অতিক্রম করে।

নিরাপত্তার জন্য পর্যটকবাহী সবগুলো গাড়ি একসাথে করে আর্মি প্রহরায় সাজেক নিয়ে যাওয়া হয়। আর্মি প্রহরা ভেঙে একা একা যাওয়া নিরাপদ নয়। যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক যেতে দীর্ঘ ৬৬ কিলোমিটার সড়কে অসংখ্য ভয়ঙ্কর ইউটার্ন, ওটার্ন। রাস্তা ভালো হওয়ায় বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালায় ড্রাইভাররা। ফলে হরহামেশা দুর্ঘটনা লেগেই আছে। রিজার্জ গাড়ি হলে ড্রাইভারকে একটু ধীরে গাড়ি চালানোর পরামর্শ দেওয়া উচিত।

পুরো রাস্তার দু’ধারে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বাস। তাদের বাড়ির সামনে শোভা পাচ্ছে রঙ্গন, রক্তজবা, কসমস, কলাবতি ফুলসহ নাম না জানা অসংখ্য পাহাড়ি ফুল। একটি চকোলেট এর আশায় পুরো রাস্তা জুড়েই টা টা দিচ্ছে নৃ-গোষ্ঠীর ছেলে-মেয়েরা। এ এক অভূতপূর্ব দৃশ্য। দেশের কোথাও এমন দৃশ্য আর দেখা যায় না।
 
এভাবেই ভয়, আনন্দ, উত্তেজনা আর শিহরণের মধ্য দিয়ে দুপুর নাগাদ পৌঁছে গেলাম স্বপ্নের সাজেক ভ্যালি।

** সর্পিল পথের বাঁকে বাঁকে ভয়ঙ্কর সৌন্দর্য
** ‘ধরলে বলবেন পর্যটক’

বাংলাদেশ সময়: ১২২৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৬
এমআই/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ