ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

হ্রদের জলে কার ছায়া গো!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৬
হ্রদের জলে কার ছায়া গো! ছবি: আবু বকর

রাঙামাটি থেকে: সন্ধ্যার শরতের স্বচ্ছ আকাশ। সেই আকাশে পূর্ণিমার চাঁদ।

তার আলো পড়ছে পাহাড়ঘেরা হ্রদের জলে। আর এই জলের আলোয় আলোকিত চারপাশ, এমনকি ঘন অরণ্যের সবুজাভ পাহাড়ের সারিও।

পূর্ণিমা চলছে। ভর পূর্ণিমার মায়া উপভোগ করতে প্রকৃতিপ্রেমীদের তোড়জোড় লেগে গেছে হ্রদ-বিল ঘিরে। কিন্তু ভর পূর্ণিমা আসার আগে কাপ্তাই হ্রদকে এভাবেই যেন সবটুক জোছনা ঢেলে দিচ্ছে মায়াবী চাঁদ। কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র ঘুরে রাঙামাটি ফেরার পথে দেখা সেই মায়ায় আবিষ্ট থাকতে হলো রাতভর।

রাঙামাটি থেকে কাপ্তাই যাওয়ার সড়কটির নয়নাভিরাম সৌন্দর্য নিয়ে আগে থেকেই দারুণ আগ্রহ-উদ্দীপনা ছিল, বাংলানিউজে ‘স্বর্গের রাস্তায় পাহাড় পাড়ি’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন পড়ে। রাঙামাটি শহর ছেড়ে কাপ্তাই হ্রদের মাঝ দিয়ে যাওয়া সড়ক ধরে সামনে চলতে চলতে সেই আগ্রহ-উদ্দীপনা রূপ নিলো রোমাঞ্চ-অ্যাডভেঞ্চারে।

উঁচু-নিচু পাহাড়ি সড়ক, এই সড়কের U আকৃতির বাঁক, থেকে থেকে ফল-ফলাদির গাছ-গুল্মে মোড়ানো সড়কের টানেলের মতো রূপ, পাহাড়ি সড়কের দু’পাশে স্বচ্ছ জল, পানির মাঝে বন ভান্তের ভিটের স্মৃতিস্তম্ভ কেবলই মুগ্ধতায় ডুবিয়েছে। বাংলানিউজের সেই প্রতিবেদনের ভাষ্যমতেই সঙ্গীদের কেউ একজন বলে উঠলেন, সত্যিই এ সড়ক স্বর্গের।

কিন্তু সন্ধ্যায় ফেরার পথে যে নৈসর্গের চেয়েও বেশি কিছু অপেক্ষা করছে কে ভেবেছিল? কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও আশপাশের পর্যটন স্থাপনাগুলো ঘোরা শেষ করে গাড়ি যখন রাঙামাটি শহরের পথে ফিরছিল, তার কিছু আগে সন্ধ্যা নেমে গেছে।

দিনমান ঘোরাঘুরির কারণে এ যাত্রা যেন সন্ধ্যার সঙ্গে সঙ্গেই সুনশান হতে থাকলো। তবে, বাহন যেই হ্রদের ধারে আসতে থাকলো, নৈসর্গের চেয়েও বেশি কিছু হয়ে উদ্ভাসিত হতে থাকলো কাপ্তাই হ্রদের আকাশ। যেন চাঁদ-জল-জোছনা-আকাশ আর পাহাড়-টিলার সৌন্দর্য একাকার হয়ে গেছে।

রাতের উঁচু-নিচু সড়কের ভাবনায় যে নিস্তব্ধতা নেমেছিল, তা যেন উবে গেলো নিমিষে। সঙ্গীদের সবাই তখন আকাশ-চাঁদ-জলের মিলনে অপরূপ রূপ নেওয়া হ্রদের উপমা খুঁজছিলেন। সড়কের বুনো অন্ধকার থাকলেও হ্রদটাকে তখন রাতের বেলারই ভাবতে ধাঁধায় পড়তে হচ্ছিল, যেন ভোরের আকাশ!

কেউ বলছিলেন, এখন চাঁদটা নেই হয়ে গেলেও হ্রদের আলোয় আলোকিত থাকবে চারপাশ। আবার কেউ বলছিলেন, চাঁদটাই তো হ্রদকে এই মায়া দিলো। কিন্তু আকাশ-চাঁদ-জলের মিলনে কাপ্তাই হ্রদ যে ঠিক এই মুহূর্তে পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ সুন্দরের রূপ নিয়েছে তা বোঝা গেল সবার অভিব্যক্তিতে।

রাতে দ্রুত ফেরার তাগাদার মধ্যেও গাড়ি থেকে ক্যামেরা আর স্মার্টফোনে কেবল ক্লিক হতে থাকলো। এরমধ্যে টিমের প্রধান বললেন, এই হ্রদের আলোটা জোছনার ঝলকমাত্র। আসল জোছনা তো বান্দরবানের প্রবারণা পূর্ণিমায় দেখা যাবে।

রাঙামাটির পর্ব চুকেই যাত্রা হবে বান্দরবানে। তাই আপাতত কাপ্তাই হ্রদের জোছনা বুক-পকেটে পুরে যাত্রা চলতে থাকলো রাঙামাটির নৈসর্গিক রাস্তা ধরে।

** সড়ক যেন আকাশছোঁয়ার খেলায় (ভিডিও)
** সাজেকের ভাঁজে ভাঁজে প্রকৃতির সাজ
** মানিকছড়ির ফুলের ঝাড়ুতে পরিচ্ছন্ন সারাদেশ
**নট ইউজিং ‘ইউজ মি’

বাংলাদেশ সময়: ১১২৩ ঘণ্ট, অক্টোবর ১৭, ২০১৬
এইচএ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ