ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

কটকায় এখনও সিডরের ক্ষত

মবিনুল ইসলাম, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৬
কটকায় এখনও সিডরের ক্ষত সিডরের ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের কটকা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য - ছবি: দেলোয়ার হোসেন বাদল ও মানজারুল ইসলাম

২০০৭ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে তীব্র আক্রোশে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় সিডর। সেই থেকে দীর্ঘ নয় বছর। সময় নেহায়েত কম নয়।

কটকা (সুন্দরবন) থেকে: ২০০৭ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে তীব্র আক্রোশে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় সিডর। সেই থেকে দীর্ঘ নয় বছর।

সময় নেহায়েত কম নয়। কিন্তু এতো বছরেও সিডরের ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের কটকা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য।

সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) সকাল পৌনে সাতটায় যখন কটকা পৌঁছাই তখনও ভোরের আলো তেমন ফোটেনি। কুয়াশাচ্ছন্ন পুরো এলাকা। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতেই ছুটে এলো একদল বানর। একটু এগুতেই দেখা পেলাম বন্য শুকরেরও। সিডরের ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের কটকা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য

এখানে একটি কাঠের পাটাতন বিছানো হাঁটাপথ রয়েছে। যার শেষের অংশটি ধ্বংসপ্রাপ্ত। বনরক্ষী দেলোয়ার জানালেন, সিডরে এর কিছু অংশ ধ্বংস আর বাকিটা নড়িয়ে দিয়ে যায়। নড়বড়ে সে অংশটা একটু একটু করে ভেঙে ফেলার কাজটি করে বঙ্গোপসাগর।

টাইগার টিলা থেকে ফেরার পথে কটকার দক্ষিণে সমুদ্র সৈকতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সেখানে এখনও সিডরের দগদগে ক্ষত। সিডরের ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের কটকা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য

ভাঙা গাছের শত শত গুঁড়ি সেখানে। কোনো কোনো গাছকে মুচড়িয়ে ভেঙে ফেলা হয়েছে। বহু গাছ শেকড়সমেত উপড়ে পড়ে রয়েছে। নয় বছরে গুঁড়িগুলো সাগরের লবণ পানিতে পচে গেছে।

জোয়ারের পানিতে গুঁড়িগুলো ডুবে যায়। এছাড়া বর্ষাকালে জোয়ারের পানি বেশি থাকায় ডুবে থাকে গুঁড়িগুলো। সাগর এদিকে ভাঙতে ভাঙতে বন বিভাগের অফিসের কাছাকাছি চলে এসেছে। জোয়ারের পানি নেমে গেলে কটকায় দেখা যায় বিস্তৃত সৈকত। সৈকতটি বিপজ্জনক, চোরাবালিতে ভরা। সিডরের ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের কটকা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য

কচিখালী গিয়ে দেখা গেছে, বন বিভাগের দু’টি অফিসের একটি সিডরে উড়িয়ে নিয়ে গেছে। শুধু পড়ে রয়েছে নিচের কনক্রিটের পিলার। আর অন্য অফিসটি এখন ধ্বংসস্তূপ।

সুন্দরবনের কটকা-কচিখালীর এ অংশটিতে বাঘের ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি। এখানে হরিণ ও বানরের সংখ্যাও বেশি। রয়েছে বন্য শুকর। পানিতে রয়েছে কুমির ও ডলফিন। সিডরের ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের কটকা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য

বনরক্ষী দেলোয়ার জানান, সিডর শুধু সুন্দরবনের নয় এর বন্যপ্রাণীরও অপূরণীয় ক্ষতি করে গেছে। যা হয়তো পুরণ হওয়ার নয়।

আরও পড়ুন...

** লবণ-কেমিক্যাল মুক্ত দুবলার চরের শুঁটকি
** ঝড়ের চেয়েও বেশি ভয় দস্যুতে
** জেলেদের প্রাণ দুবলার চরের ‘নিউমার্কেট’
** বনরক্ষীদের জীবনই অরক্ষিত
** মংলা হতে পারে সুন্দরবন ভ্রমণের প্রবেশদ্বার (ভিডিও)
** গাইড থেকে ট্যুর অপারেটর


সহযোগিতায়

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৬
এমআই/এসএনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ