ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১১ রবিউস সানি ১৪৪৬

অপার মহিমার রমজান

মুসলমানদের সঙ্গে প্রথম ইফতার করলেন জার্মান চ্যান্সেলর মার্কেল

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৫ ঘণ্টা, জুলাই ৩, ২০১৫
মুসলমানদের সঙ্গে প্রথম ইফতার করলেন জার্মান চ্যান্সেলর মার্কেল

পবিত্র রমজান মাসে মুসলমানদের সঙ্গে এবারই প্রথম ইফতার মাহফিলে অংশ নিলেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল। ইফতারে অংশ নিয়ে তিনি আশা প্রকাশ করলেন, আগামী বছর নিজে একটি ইফতার অনুষ্ঠান আয়োজন করার।



মুসলমানদের ইফতার আয়োজনে শরিক হয়ে ইসলামকে জার্মানির অংশ হিসেবে আখ্যায়িত করেন মার্কেল। এ সময় জার্মানির সরকারি মুখপাত্র স্টিফেন সেইবার্ট ঘোষণা করেন, মার্কেল আগামী বছর প্রথমবারের মতো মুসলমানদের জন্য একটি ইফতার পার্টি আয়োজনের পরিকল্পনা করছেন। এ ইফতার চ্যান্সেলরের সরকারি দফতরে অনুষ্ঠিত হবে এবং এটি হয়ে যাবে বার্ষিক অনুষ্ঠানমালার একটি অংশ।

মঙ্গলবার (২৯ জুন) রাজধানী বার্লিনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সরকারি গেস্ট হাউস ‘ভিলা বোর্সিগ’-এ আয়োজিত ইফতার মাহফিলে অ্যাঞ্জেলা মার্কেল জার্মানি এবং ইউরোপজুড়ে আন্তঃধর্মীয় আস্থা ও সম্মান গড়ে তোলার আহবান জানান। তিনি রমজানের রোজাকে মুসলিমদের প্রকৃত আদর্শের প্রতিফলন ও পরীক্ষা বলে আখ্যায়িত করেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিভিন্ন ধর্মের নামে সংঘটিত সহিংস কার্যক্রমের সংখ্যা বৃদ্ধির কথা স্মরণ করে মার্কেল বলেন, ‘এ কাজের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী করা হয় ইসলামকে যা দুঃখজনক। ’

মার্কেল বলেন, জার্মান মুসলমানদের বিরুদ্ধে বৈষম্যকে তিনি অনুমোদন করেন না এবং ইসলামকে জার্মানির অংশ বিবেচনা করেন। যারা মুসলমানদের সন্দেহের চোখে দেখে তিনি তাদের বিরোধিতা করেন। গত জানুয়ারিতে দেশটিতে কথিত প্যাট্রিয়টিক ইউরোপিয়ান্স অ্যাগেইন্স দ্য ইসলামাইজেশন অব দ্য ওয়েস্ট তথা পেগিডা ইসলাম ও অভিবাসনবিরোধী আন্দোলন গড়ে তুললে মার্কেল তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে বিবৃতি দেন। এসময় তিনি প্রথম বলেন, ইসলাম হচ্ছে জার্মানির অঙ্গ। তিনি মধ্য জানুয়ারিতে তার বিবৃতির উল্লেখ করে পেগিডা, তার প্রতিনিধি ও সমর্থকদের জার্মানবাসীর অন্তরে ঘৃণা প্রবেশ করানোর দায়ে অভিযুক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘ঘৃণা, বর্ণবাদ এবং চরমপন্থার কোনো স্থান এদেশে নেই। দেশ টিকে আছে গণতন্ত্র, সহনশীলতা ও বহুমতের ওপর।

মঙ্গলবারের ইফতার বক্তৃতায় মার্কেল মুসলিমদের মসজিদে হামলার কথা উল্লেখ করে বলেন, কোনো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলা গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ, এটা ধর্মীয় স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রবিরোধী। তিনি আরো যোগ করেন, এ বিষয়ে সোচ্চার হওয়া একান্ত কর্তব্য।

মার্কেলের সঙ্গে ইফতারে আরো যোগ দেন তুর্কি বংশোদ্ভূত জার্মান রাজনীতিবিদ ইমিগ্রেশনমন্ত্রী আয়দান ওজোগ, জার্মানিতে মুসলমানদের সমন্বয় পরিষদের মুখপাত্র নুরহান সয়কান, জার্মানিতে ইহুদিদের সেন্ট্রাল কাউন্সিল প্রেসিডেন্ট জোসেফ স্কুস্টার, জার্মান ইভানজেলিক্যাল চার্চের প্রেসিডেন্ট হাইনরিশ বেডফোর্ড এবং জার্মান ক্যাথলিক কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডেন্ট অ্যালোয়িজ গ্লুক।

জার্মান চ্যান্সেলর হিসেবে মার্কেল এই প্রথমবার কোনো ইফতারে অংশগ্রহণ করলেন। এসময় সরকারি মুখপাত্র স্টিফেন সেইবার্ট আরো ঘোষণা করেন যে, মার্কেল আগামী বছর প্রথমবারের মতো একটি ইফতার পার্টি আয়োজনের পরিকল্পনা করছেন। তিনি বলেন, ইফতার চ্যান্সেলরের সরকারি দফতরে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে এবং জার্মানিতে মুসলিম সুশীল সমাজের সংগঠনের প্রতিনিধিরা এতে আমন্ত্রিত হবেন। তার মতে, জার্মানিতে ইফতার একটি বার্ষিক অনুষ্ঠানের অংশ হয়ে যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৭ ঘন্টা, জুলাই ০৩, ২০১৫
এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।