ঢাকা, বুধবার, ২৪ আশ্বিন ১৪৩১, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৫ রবিউস সানি ১৪৪৬

অপার মহিমার রমজান

জাকাতের পরিমাণ ও উৎস

কাজী আবুল কালাম সিদ্দীক, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৭ ঘণ্টা, জুলাই ৪, ২০১৫
জাকাতের পরিমাণ ও উৎস

মাসয়ালা: স্বর্ণের ক্ষেত্রে নেসাব- সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি। রূপার ক্ষেত্রে নেসাব- সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) তোলা বা ভরি।

টাকা-পয়সা ও ব্যবসায়িক পণ্যের ক্ষেত্রে নেসাব হলো সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া। -মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ৯৯৩৭

মাসয়ালা: যার ওপর জাকাত ফরজ তার জন্য জাকাতের পরিমাণ হচ্ছে- সম্পদের ৪০ ভাগের এক ভাগ তথা আড়াই শতাংশ। -হেদায়া: ১/১৮৫-১৯৫

চার ধরনের সম্পদে জাকাত ফরজ
১. ভূমি থেকে উৎপাদিত শস্য ও ফল-ফলাদী। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা তোমাদের বৈধ উপার্জন এবং আমরা তোমাদের জন্য ভুমি থেকে যে শস্য উৎপন্ন করি তা থেকে আল্লাহর নির্দেশিত পথে ব্যয় কর। ’ -সূরা বাকারা : ২৬৭

অন্য আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আর তোমরা ফসল কাটার সময় তার হক (জাকাত) আদায় কর। ’ -সূরা আনআম : ১৪১

জাকাত প্রসঙ্গে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আসমান ও ঝর্ণার পানিতে কিংবা স্বেচ্ছা উৎপাদিত ফসলের মধ্যে এক দশমাংশ আর যা সেচের মাধ্যমে আবাদ হয় তার মধ্যে বিশভাগের এক ভাগ জাকাত প্রদেয়। ’

ফসলের ওপর জাকাত ফরজ হওয়ার নির্ধারিত পরিমাণ হলো পাঁচ ওসক। কারণ হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- ‘শস্য বা ফল-মূলের ওপর জাকাত ফরজ হবে না। যতক্ষণ তা পাঁচ ওসক পরিমাণ না হয়। ’

ওসকের পরিমাণ হলো; হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ব্যবহৃত সা-এর ৬০ সা সমপরিমাণ। তাহলে নেসাব হলো, তিনশ সা, আর এক সা’র পরিমাণ হলো- ২০৪০ গ্রাম (দুই কেজি চল্লিশ গ্রাম)। সুতরাং নেসাবের পরিমাণ দাঁড়ালো ৬১২ কেজি। তাই এর কমে জাকাত ফরজ নয়। ওই নেসাবে বিনাশ্রমেপ্রাপ্ত ফসলের জাকাতের পরিমাণ হলো- এক দশমাংশ আর শ্রমব্যয়ে প্রাপ্ত ফসলের এক বিশমাংশ।

মাসয়ালা: আমাদের দেশে যে সব জমিতে সেচ বৃষ্টি বা নদীর পানিতে সম্পন্ন হয় এবং সেচকাজে ডিপটিউবয়েল বা অন্য কোনো খরচ না লাগে- তাহলে ফসল যে পরিমাণই হোক তার দশভাগের একভাগ যদি ডিপটিউবয়েলের মাধ্যমে সেচ দিতে হয় তাহলে বিশভাগের একভাগ জাকাত দেওয়া উচিৎ। একে উসর বলা হয়।

উল্লেখ্য উসর আদায়ের ক্ষেত্রে সার, সেচ ও জমি চাষের খরচ বাদ না দিয়ে পূর্ণ ফসলের দশভাগের কিংবা বিশভাগের একভাগ উসর আদায় করতে হবে। -হেদায়া: ১/২০১-২০২

মাসয়ালা: ফলমূল, শাক-সবজি, তরমুজ ও এ জাতীয় ফসলের ওপর জাকাত ফরজ নয়। কেননা হজরত উমর (রা.) বলেছেন, ‘শাক-সবজিতে জাকাত নেই। ’ হজরত আলী (রা.) বলেছেন, ‘আপেল বা এ জাতীয় ফলের ওপর জাকাত ফরজ নয়। তাছাড়া যেহেতু এগুলো (নিত্যপ্রয়োজনীয়) খাবার জাতীয় শস্য বা ফল নয়, তাই এর ওপর জাকাত নেই। তবে যদি এসব টাকার বিনিময়ে বিক্রি করা হয় তাহলে মূল্যের ওপর নেসাব পূর্ণ হয়ে একবছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর জাকাত ফরজ হবে।  

যে সব প্রাণীর (থাকলে) ওপর জাকাত ফরজ
মাসয়ালা: উট, গরু, ছাগল, ভেড়া ও মহিষ। যদি এ সব প্রাণী ‘সায়েমা’ হয় তথা মাঠে চরে চষে খায় এবং এগুলোকে বংশ বৃদ্ধির জন্য পালন করা হয় এবং তা নেসাব পরিমাণ হয়, তাহলে এদের জাকাত দিতে হবে। উটের নেসাব ন্যূনতম ৫টি, গরুর ৩০টি, আর ছাগলের ৪০টি।

‘সায়েমা’ ওই সব প্রাণীকে বলে, যেগুলো সারা বছর বা বছরের অধিকাংশ সময় চারণভূমিতে ঘাস খেয়ে বেড়ায়। যদি এসব প্রাণী সায়েমা না হয়, তবে এর ওপর জাকাত ফরজ নয়। কিন্তু যদি এগুলো দ্বারা টাকা-পয়সা কামাই করার উদ্দেশ্য থাকে; যেমন বেচা-কেনা, স্থানান্তর ইত্যাদির মাধ্যমে টাকা-পয়সা আয় করা, তাহলে তা ব্যবসায়িক পণ্য হিসেবে বিবেচিত হবে; আর তখন সেগুলো সায়েমা কিংবা মালুফাহ (যাকে ঘাস কেটে খাওয়ানো হয়) যা-ই হোক না কেন তাতে ব্যবসায়িক পণ্যের জাকাত আসবে; যদি তা স্বয়ং নেসাব পরিমাণ হয় অথবা এসবের মূল্য অন্য ব্যবসায়িক সম্পদের সঙ্গে যুক্ত করলে নেসাব পরিমাণ হয়।

স্বর্ণ ও রূপার হিসাব
স্বর্ণ-রৌপ্যের ওপর (নেসাব পরিমাণ হলে) সর্বাবস্থায় জাকাত ফরয। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেন- ‘আর যারা সোনা ও রূপা জমা করে রাখে অথচ তা আল্লাহর নির্দেশিত পথে ব্যয় করে না (জাকাত দেয় না)। আপনি তাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সংবাদ প্রদান করুন। কিয়ামত দিবসে ওই সোনারূপাকে জাহান্নামের আগুনে উত্তপ্ত করে তা দ্বারা তাদের ললাট, পার্শ্ব ও পৃষ্ঠে ছ্যাঁকা দেয়া হবে এবং বলা হবে এ হলো তোমাদের সে সকল ধন-সম্পদ যা তোমরা নিজেদের জন্য সঞ্চয় করে রাখতে। সুতরাং আজ জমা করে রাখার স্বাদ গ্রহণ কর। ’ -সূরা তওবা: ৩৪-৩৫
 
আয়াতে ‘জমা করে রাখা’ বলতে আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় না করা বুঝানো হয়েছে। আর আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করার সবচেয়ে বড় খাত হচ্ছে, জাকাতে ব্যয় করা। তাছাড়া সহিহ মুসলিমে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন- ‘যে সব সোনা-রূপার মালিকগণ তাদের সম্পদ থেকে নির্ধারিত হক (জাকাত) আদায় না করে, কিয়ামত দিবসে তার জন্য কতগুলো আগুনের পাত প্রস্তুত করে তা জাহান্নামের আগুনে উত্তপ্ত করে তা দ্বারা ওই লোকদের ললাট ও পিঠে চেপে ধরা হবে। তাপ কমে গেলে উত্তপ্ত করে পুনরায় চেপে ধরা হবে। পঞ্চাশ বছর দীর্ঘ সময় বান্দাদের হিসাব-নিকাশ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এভাবে শাস্তি চলতেই থাকবে। ’

মাসয়ালা: সোনা-রুপার অলঙ্কার সবসময় বা কালেভদ্রে ব্যবহৃত হোক কিংবা একেবারেই ব্যবহার না করা হোক, সব অবস্থায় তার জাকাত দিতে হবে। -সুনানে আবু দাউদ: ১/২৫৫, হাদিস: ১৫৬৩; সুনানে কুবরা, নাসায়ি: হাদিস: ২২৫৮

মাসয়ালা: সোনা-রূপার যাবতীয় প্রকারে জাকাত ফরজ হবে। চাই তা হোক টাকা পয়সা, চাকা বা টুকরা, পরিধেয় অলংকার বা ধার দেওয়ার মতো অলংকার অথবা অন্য প্রকার সোনা-রূপা এসব কিছুর ওপর জাকাত ফরজ। কারণ সোনা-রূপার ওপর জাকাত ফরজ করে বর্ণিত সকল আয়াত বা হাদিস ব্যাপকভাবে এর উপর প্রমাণবহ। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- ‘একদা একজন মহিলা তার মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সম্মুখে এলেন। ওই মেয়ের হাতে স্বর্ণের দু’টি ভারি ও মোটা বালা ছিলো। তা দেখে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, তুমি কি এসবের জাকাত দাও? মেয়েটি বলল, না। তিনি বললেন, তুমি কি এটা পছন্দ কর যে কিয়ামতের দিন আল্লাহ এসবের দ্বারা দু’টি আগুনের চুড়ি বানিয়ে তোমার হাতে পরিয়ে দেবেন? মেয়েটি এ কথা শুনে বালা দু’টি খুলে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) কে দিয়ে বলল, এসব আল্লাহর রাস্তায় দান করলাম। ’

অন্য এক হাদিসে হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) আমার কাছে এলেন, তখন আমার হাতে কয়েকটি বড় বড় রূপার আংটি ছিল। তিনি বললেন, এসব কী? আমি বললাম, আপনার সামনে সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য এগুলো তৈরি করেছি। তিনি বললেন, তুমি কি এসবের জাকাত প্রদান করো? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, তোমার জাহান্নামে যাওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট। ’ 

ব্যবসার পণ্য
ব্যবসায়ী পণ্য বলতে বুঝায়- এমন যাবতীয় বস্তু যা দ্বারা মুনাফা অর্জন কিংবা ব্যবসার উদ্দেশ্য নির্ধারণ করে রাখা হয়েছে। যেমন, জমি, জীব-জন্তু, খাবার, পানীয় ও গাড়ী ইত্যাদি সব ধরনের সম্পদ। সুতরাং বছরান্তে সেগুলোর মূল্য নির্ধারণ করে তার চার দশমাংশ বা ৪০ ভাগের একভাগ জাকাত দিতে হবে। চাই সেটার মূল্যমান ক্রয়মূল্যের সমপরিমান হোক, অথবা কম হোক অথবা বেশি হোক।
 
মুদি দোকানদার, মেশিনারি দোকানদার বা খুচরা যন্ত্রাংশ বিক্রেতা ও এ জাতীয় ব্যবসায়ীদের কর্তব্য হলো, ছোট বড় সকল অংশের মূল্য নির্ধারণ করে নেবে, যাতে কোনো কিছু বাদ না পড়ে। পরিমাণ নির্ণয়ে যদি জটিলতা দেখা দেয়, তাহলে সতর্কতামূলক বেশি দাম ধরে জাকাত আদায় করবে, যাতে সে সম্পূর্ণভাবে দায়িত্বমুক্ত হতে পারে।

মাসয়ালা: যে সময় জাকাত আদায় করা হচ্ছে সে সময়ের টাকার হিসেব করা হবে। উদাহরণত জাকাত যখন ওয়াজিব হয়েছিল তখন ব্যক্তির কাছে ছিল ৫ লাখ টাকা। কিন্তু যখন বছরান্তে যখন জাকাত আদায় করছে, তখন লোকটির কাছে আছে ৭ লাখ টাকা বা ৪ লাখ টাকা। তাহলে ওই সময় ৭ লাখ বা ৪ লাখ টাকার জাকাত আদায় করতে হবে। বছরের শুরতে যখন জাকাত ওয়াজিব হয়েছিল সে সময়কার টাকা হিসেবে নয়। -রদ্দুল মুহতার: ৩/২১৪, বাদাইউস সানায়ে: ২/১৫

মাসয়ালা: ব্যাংক-ব্যালেন্স, ফিক্সড ডিপোজিট, বন্ড, ট্রেজারি বিল, ব্যাংক গ্যারান্টি মানি ইত্যাদি নগদ টাকা-পয়সার মতোই। এসবের ওপর জাকাত ফরজ হবে।

মাসয়ালা: ব্যবসায়িক পণ্যের ক্ষেত্রে পাইকারি বাজারদর অনুযায়ী মূল্য নির্ধারণ করে জাকাত আদায় করবে।

মাসয়ালা: দোকানে, অফিসে যে সব ডেকোরেশন করা হয় সেগুলো যতই দামি হোক না কেন তার ওপর জাকাত দিতে হবে না। কেননা সেগুলো ব্যবসার মাল নয়। তবে ফার্ণিচারের দোকানে ব্যবসার জন্য যে আলমারী, শোকেস ইত্যাদি রাখা হয় সেগুলোর জাকাত দিতে হবে। অনুরূপ ডেকোরেশনের দোকানে লাখ লাখ টাকার সামানা থাকে সেগুলোর ওপরও কোনো জাকাত আসবে না বরং সেগুলো ভাড়া খাটিয়ে যে মুনাফা অর্জিত হয় সেগুলোর ওপর শর্তসাপেক্ষে জাকাত আদায় করতে হবে। তদ্রুপভাবে প্রিন্টিং প্রেস, কলকারখানার মূল্যবান যন্ত্রপাতির ওপরও কোনো জাকাত আসবে না। কেননা সেগুলো আয়ের মাধ্যম। তবে সেগুলোর ব্যবসা করা হলে শর্ত সাপেক্ষে তার জাকাত দিতে হবে। -মাসায়েলে জাকাত: ১৩/৫৩

মাসয়ালা: হজের উদ্দেশ্যে কিংবা ঘরবাড়ি নির্মাণ, ছেলেমেয়ের বিয়ে-শাদি ইত্যাদি প্রয়োজনের জন্য যে অর্থ সঞ্চয় করা হয়, তা-ও এর ব্যতিক্রম নয়। সঞ্চিত অর্থ পৃথকভাবে কিংবা অন্যান্য জাকাতযোগ্য সম্পদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নেসাব পরিমাণ হলে বছরান্তে এর ওপরও জাকাত ফরজ হবে। অবশ্য বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই যদি খরচ হয়ে যায়, তাহলে তার জাকাত দিতে হবে না। -মুসান্নাফ আবদুর রাজ্জাক, হাদিস: ৭০৩২

জায়গা, জমি বা প্লটে জাকাত
মাসয়ালা: যদি কেউ জমি বা প্লট ইত্যাদি কিনে তাহলে কেনার সময় তার নিয়ত তিন রকমের হতে পারে। ১. এখন কিনে পরে সুবিধামত বিক্রি করে দেব। এমতাবস্থায় প্রতি বছর তার যে বাজার মূল্য হবে তার ওপর জাকাত দিতে হবে।
২. নিজে বাড়ি বানিয়ে বসবাস করব, তাহলে তাকে জাকাত দিতে হবে না।
৩. খরিদ করার সময় কোনোটার নিয়ত করেনি তাহলেও জাকাত দিতে হবে না। -আপকে মাসায়েল আওর উনকা হল: ৩৭১

মাসয়ালা: ভাড়ায় খাটিয়ে মুনাফা অর্জনের জন্য যে গাড়ি ক্রয় করা হয় সেগুলোর ওপর কোনো জাকাত দিতে হবে না। বরং সেগুলোর মাধ্যমে যে মুনাফা অর্জিত হবে সেগুলোর ওপর শর্তসাপেক্ষে জাকাত দিতে হবে। আর যদি ব্যবসার জন্য গাড়ি ক্রয় করা হয় তাহলে সেগুলোর ওপর জাকাত আসবে। -আপকে মাসায়েল আউর উনকা হল: ৩৭৬

বাংলাদেশ সময়: ১৭২২ ঘন্টা, জুলাই ০৪, ২০১৫
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।