ঢাকা, শনিবার, ২০ আশ্বিন ১৪৩১, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০১ রবিউস সানি ১৪৪৬

অপার মহিমার রমজান

নিজেকে আল্লাহর অনুগত হিসেবে প্রতিষ্ঠাই রমজানের শিক্ষা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৩ ঘণ্টা, মে ১, ২০২০
নিজেকে আল্লাহর অনুগত হিসেবে প্রতিষ্ঠাই রমজানের শিক্ষা

অফুরন্ত ফজিলতের বার্তা নিয়ে হাজির হয়েছে মহিমান্বিত মাস রমজানুল মোবারক। মহান আল্লাহ এই মাসকে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ করেছেন। ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম একটি হলো রোজা।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের ওপর রমজান মাসে রোজা ফরজ করেছেন। হাদিস শরিফে রমজানকে অভিহিত করা হয়েছে আল্লাহর মাস হিসেবে।

এ মাসটির শ্রেষ্ঠত্ব অনুধাবন এটি একটি তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়। ‘রমজান’ শব্দটি আরবি ‘রাম্দ’ ধাতু থেকে এসেছে। এর আভিধানিক অর্থ দহন, প্রজ্বলন বা পুড়িয়ে ভস্ম করে ফেলা।

রমজান মাসে সিয়াম সাধনার মাধ্যমে বান্দা নিজের জাগতিক কামনা-বাসনা পরিহার তথা আত্মসংযম ও কৃচ্ছপূর্ণ জীবনযাপনের মাধ্যমে রিপুকে দমন করে ও আল্লাহর অনুগত বান্দা হওয়ার সামর্থ্য অর্জন করে।

মাহে রমজান মুসলমানদের জন্য একটি বার্ষিক প্রশিক্ষণ কোর্স, যার মাধ্যমে রোজাদারদের জীবন প্রভাবিত হয়। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি পবিত্র রমজান মাস ভালোভাবে যাপন করবে, তার সমগ্র বছর ভালোভাবে যাপিত হবে। ’ (হিলয়া-৭ম খণ্ড পৃষ্ঠা-১৪০)। তিনি আরও বলেন, ‘আমার উম্মত যদি মাহে রমজানের গুরুত্ব বুঝত, তাহলে সারা বছর রমজান কামনা করত। ’ (মাজমাউজ যাওয়ায়েদ-৩য় খণ্ড পৃষ্ঠা ১৪১)।

রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বয়ং রমজান মাসের দুই মাস আগে থেকেই এর বরকত অর্জনের জন্য দোয়া করতেন ‘হে আল্লাহ! আমাদের রজব ও শাবানের বরকত দাও এবং রমজানের বরকত অর্জনের তৌফিক দান করো’ এ থেকে রমজান মাসের গুরুত্ব বোঝা যায়।

মাহে রমজান অভ্যন্তরীণ সব কুপ্রবৃত্তি, অহংকার, নফসের দাসত্ব জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছারখার করে শুদ্ধ মানুষে পরিণত করে বলে এ মহিমান্বিত মাসের নাম ‘রমজান’। ইসলামের অনুসারীদের জন্য আল্লাহতায়ালার বিরাট নেয়ামত পবিত্র রমজান মাস। এর প্রস্তুতি গ্রহণ করা না হলে মাহে রমজানের আধ্যাত্মিক মূল্যবোধের সঙ্গে একাত্ম হওয়া যায় না। ফলে এর দ্বারা উপকৃত হওয়া যায় না। তাই মাহে রমজানে রোজার প্রস্তুতির জন্য যত্নবান হতে হবে। সহিহ-শুদ্ধভাবে শরিয়তের মাসআলা অনুযায়ী রোজা পালনের বিধিবিধান রোজাদারদের জানা খুবই দরকার।

মাহে রমজানের পবিত্রতা রক্ষার্থে ইবাদত-বন্দেগি তথা সেহরি, ইফতার, তারাবি, কোরআন তেলাওয়াত, ইত্তিকাফ, তাহাজ্জুদ, জিকির-আজকার, তাসবিহ-তাহলিল, দোয়া-ইস্তিগফার, দরুদ শরিফ, জাকাত-ফেতরা, দান-সদকা তথা আল্লাহর হক আদায়ের জন্য বেশী বেশি ইবাদতে মশগুল থাকা উচিত। মনের হিম্মত কঠিন কাজকেও সহজ করে দেয়।

কেউ যদি হিম্মত করে আমি রোজা রাখবোই তাহলে সামান্য একটু গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা, একটু স্বাস্থ্যের দুর্বলতা, এসব অজুহাত কোনো বাধা হতে পারবে না। রমজানে শুধু উপবাস করা নয়, জীবনের সবক্ষেত্রে আল্লাহর নির্দেশ কায়েমে যত্নবান হতে হবে। নিজেকে পরিপূর্ণভাবে আল্লাহর অনুগত বান্দা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করাই রমজানের শিক্ষা। আল্লাহ আমাদের সে শিক্ষা অর্জনের তৌফিক দান করুন। আমিন।

ফাহিম মাহমুদ
পেশ ইমাম,
কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ,
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫০ ঘণ্টা, মে ০১, ২০২০
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।