ঢাকা: প্রথম বিপিএলের পারফরমেন্স মোহাম্মদ আশরাফুলকে সুযোগ করে দেয় টি-টোয়েন্টি জাতীয় দলে খেলার। গত জুনে জাতীয় দলের হয়ে জিম্বাবুয়েতে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে যান।
প্রশ্ন: কখন সেঞ্চুরির চিন্তা মাথায় এসেছে?
আশরাফুল: ১০ ওভার শেষে আমার রান ছিল ৫৬। তখন মনে হয়েছে পুরো সময় খেলতে পারলে সেঞ্চুরিটা হয়ে যাবে।
প্রশ্ন: পুরো সময় খেলার লক্ষ্য নিয়েই কি শুরু করেছিলেন?
আশরাফুল: উইকেট দেখে মনে হয়েছে খুবই ভালো। এতদিনের মধ্যে সেরা উইকেট বলেই মনে হয়েছিল আমার। শুরু থেকে আক্রমণাত্মক খেলার লক্ষ্য ছিল। ওরা ১৭৭ করলে আমরা বোলাররা বলাবলি করছিলাম যে ধরনের উইকেট, তাতে ওরা ২০টা রান কম করেছে। বিদেশি ক্রিকেটাররা আমাকে বলছিলেন ‘স্ট্রেট’ মারতে। আমিও প্রথম বাউন্ডারিটা মারার পর থেকে স্ট্রেট খেলার চেষ্টা করেছি।
প্রশ্ন: অন্য সেঞ্চুরির মতোই কী এই সেঞ্চুরি, না কোন পার্থক্য আছে?
আশরাফুল: অন্যান্য সেঞ্চুরির চেয়ে টি-টোয়েন্টিরটা একটু ভিন্ন তো লাগেই, যেহেতু এটা ২০ ওভারের খেলা। তাছাড়া আজকের পরস্থিতিও অন্যরকম ছিল। চারটা উইকেট পড়ে যাওয়ার পর জেতার ব্যাপার ছিল। টি-টোয়েন্টিতে শতক মারতে পারলে আসলে অন্যরকম অনুভূতি হয়।
প্রশ্ন: আজ চেজ করে জেতার প্রস্তুতিও হলো কিনা?
আশরাফুল: সেমিফাইনালের আগে আমরা এত বড় একটা স্কোর চেজ করে জিতলাম। এর আগে আমরা প্রথমে ব্যাট করে এই মাঠেই দুইশ করেছি তিনবার। চেজ করেছি কমই। তাই আমাদের সবার মধ্যে এ লক্ষ্যটা ছিল যে সেমিফাইনালের আগে সব পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া।
প্রশ্ন: আগে বলতেন রান পেতে ভাগ্য লাগে। আজ কি ভাগ্য সঙ্গে ছিল?
আশরাফুল: অবশ্যই, বড় রান করতে ভাগ্য লাগে। গত দুটো ম্যাচে আমি এমন জায়গায় আউট হয়েছি যেখানে ফিল্ডার ছিল। আজ যেটা মেরেছি শাহরিয়ার নাফীস যেতেই পারেনি। ভাগ্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যেকটা ব্যাটসম্যানেরই রান করতে ভাগ্য লাগে।
প্রশ্ন: অনেকে বলে এক ম্যাচ ভালো খেলার পর পাঁচ ম্যাচে আপনাকে খুঁজে পাওয়া যায় না?
আশরাফুল: সেটা যাতে না হয় সে চেষ্টাই করছি। আসলে আজকে ১০০ করার পর কাল যদি ২০-২৫ করি, তাহলে সবার কাছে মনে হবে যে ফ্লপ করেছি। এটাই সমস্যা হয়ে যায়। গত দুই ম্যাচে যথার্থ শট খেলেই আউট হয়েছি। আমার কিছু করার ছিল না। কিন্তু সবাই বলেছে যে, ভালো করিনি। এই প্রেসারটা যদি কম পেতাম তাহলে মনে হয় ভালো হত। এ প্রেসারটা একটু বেশি হয়ে যায়।
প্রশ্ন: এনসিএলে ভালো যায়নি, বিএসএলে সেঞ্চুরি পেয়েছেন, এরপর বিপিএলেও সেঞ্চুরি। তাহলে এটা কী বলা যায় আশরাফুল ফর্মে?
আশরাফুল: এনসিএলে যেমন ব্যাটিং করছিলাম তাতে ক্রিকেট খেলতে পারি না বলে মনে হচ্ছিল আমার কাছে। বিসিএলে প্রথম ম্যাচ খেলার পর চিন্তা ছিল যে খেলব না। রিয়াদ ও সানোয়ার ভাই, বাবুল ভাই বলল যে খেল। তাছাড়া ভাগ্যও সহায় হয়েছে। বগুড়ার ফ্ল্যাট উইকেট পেয়েছিলাম। খেলেছি, ভালো হয়েছে। আর বিপিএলে যে আমি ভালো খেলব সেই বিশ্বাসটা ছিল। কারণ টি-টোয়েন্টিতে শট খেলা যায়।
প্রশ্ন: প্রথম বিপিএলের পর জাতীয় টি-টোয়েন্টি দলে। এই বিপিএলের পর শ্রীলঙ্কা সফরের দলে থাকার জন্য আশাবাদী?
আশরাফুল: আশা তো করি। কারণ শ্রীলঙ্কার সঙ্গে যদি রেকর্ড দেখেন, তাহলে আল্লাহর রহমতে আমার রেকর্ড ভালো। যদি নির্বাচকরা ওইসব চিন্তা করেন, তাহলে সুযোগ পেতে পারি। কারণ শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আমার চারটি টেস্ট সেঞ্চুরি আছে। তাছাড়া শ্রীলঙ্কার মাঠে আমি সবসময় আল্লাহর রহমতে কিছু না কিছু করেছি। আমারও বিশ্বাস আছে শ্রীলঙ্কা সফরে সুযোগ পেলে আমি ভালো কিছু করব।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৩
এসএ/এএইচবি