ঢাকা: পুঁজিবাজারে লেনদেনে জড়িত কোম্পানিগুলোর অডিট রিপোর্টে সঠিক তথ্য দেওয়া হলে একদিন দেশের এ পুঁজিবাজার আবারও ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম।
শনিবার সন্ধ্যায় আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের সিএ ভবন মিলনায়তনে দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) আয়োজিত ‘উইমেন ইন দ্য অ্যাকাউট্যান্সি প্রফেশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক কনফারেন্সে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এইচ টি ইমাম বলেন, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টরা (সিএ) কোম্পানির অডিট রিপোর্ট তৈরি করেন। শেয়ারহোল্ডাররা তাদের তথ্যের উপর ভিত্তি করে বিনিয়োগ করে থাকেন। অনেক সময় ভুল তথ্য পেয়ে বিনিয়োগকারীরা লোকসানের সম্মুখীন হন। তবে তারা যদি কোম্পানির অডিট রিপোর্টে সঠিক তথ্য তুলে ধরেন তবে বিনিয়োগকারীরা লাভবান হবেন।
তিনি বলেন, মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল (এমডিজি) অর্জনের শর্ত অর্থনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানো। আমাদের দেশে নারীরা আগের চেয়ে অনেক ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাচ্ছে। তারা অর্থনীতিতে অবদানও রাখছে। তারপরও বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ সন্তোষজনক নয়। অবশ্য এ বিষয়ে সরকার নারীদের বিভিন্ন সহায়তা দিয়ে আসছে।
তিনি আরও বলেন, সরকার সকল ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করছে। এমনকি দেশের সেনাবাহিনী, প্রশাসন ও সিভিল সার্ভিসের বিভিন্ন পদেও নারীদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। ফলে অনেক ক্ষেত্রে দেশের পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেক পরিবর্তন হয়েছে।
উদাহরণ স্বরূপ তিনি বলেন, দেশের পুলিশ বিভাগে ৬ হাজারের বেশি নারী সদস্য রয়েছেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়ে যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন নারীরা।
সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. জাভেদ সিদ্দিকী।
তিনি বলেন, আইসিএবি থেকে ১৯৮৯ সালে দেশের প্রথম নারী চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট পাস করেন। বর্তমানে নারী চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে, পেশাগত কাজে তাদের অবদান কম। হিসাব পেশাসহ অন্যান্য পেশাতে ২২ দশমিক ৯ শতাংশ নারী। যেখানে পুরুষের অংশগ্রহণের হার ৬৮ দশমিক ৩০ শতাংশ।
এ পেশায় নারীদের পিছিয়ে থাকার পেছনে দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা, নীতি-নির্ধারণের অভাব এবং নারীর প্রতি প্রথাগত সনাতনী ধ্যান-ধারণাই দায়ী বলে উল্লেখ করেন তিনি।
জাভেদ সিদ্দিকী বলেন, হিসাব পেশায় নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধির জন্য আইসিএবি অনুঘটক হিসেবে কাজ করতে পারে। দেশের অডিট ফার্মাগুলো নারী শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি, নিয়োগকারীরা উচ্চপদে নারীর নিয়োগ বৃদ্ধি, নমনীয় কাজের ঘণ্টা এবং ডে-কেয়ার ব্যবস্থা চালু করতে পারে। এছাড়া, হিসাব পেশায় নারীদের উৎসাহী করতে সরকার নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে উচ্চপদে নারী চার্টার্ড অ্যাকউন্ট্যান্ট নিয়োগ দিতে পারে।
কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন আইসিএবি’র সাবেক সভাপতি ও গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্ট’র এমডি পারভীন মাহমুদ, ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সাউথ এশিয়া অঞ্চলের সিনিয়র ফাইন্যান্সিয়াল ম্যানেজম্যান্ট স্পেশালিস্ট সুরাইয়া জান্নাত, আইসিএবি’র প্রেসিডেন্ট শওকত হোসেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট দেওয়ান নুরুল ইসলাম প্রমুখ।
পারভীন মাহমুদ বলেন, দেশে সিএ পেশায় নারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে কাজের পরিবেশ উন্নয়নের ক্ষেত্রে আরও অনেক কাজ করতে হবে।
নারীদের পরিবার, ব্যক্তিগত কাজ, শিক্ষা অর্জনের ক্ষেত্রে ভারসাম্য রাখতে ভেঙে না পড়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৮ ঘণ্টা, মার্চ ০৮, ২০১৪