ঢাকা: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বিভিন্ন ক্যাটাগরির মোট নয় কোম্পানির পুঞ্জীভূত লোকসান কোম্পানিগুলোর পরিশোধিত মূলধনের দ্বিগুণ থেকে দশগুণেরও বেশি। কোনো কোনো কোম্পানির পুঞ্জীভূত লোকসান প্রতিবছরই বাড়ছে।
কোম্পানিগুলো হলো- ‘এ’ ক্যাটাগরিভুক্ত বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন (বিএসসি), ‘জেড’ ক্যাটাগরির মেঘনা কনডেন্স মিল্ক, ‘জেড’ ক্যাটাগরির আজিজ পাইপস, ‘জেড’ ক্যাটাগরিভুক্ত মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ, ‘জেড’ ক্যাটাগরির জুট স্পিনার্স, ‘জেড’ ক্যাটাগরিভুক্ত নর্দার্ন জুট মিল, ‘এ’ ক্যাটাগরিভুক্ত রেনউইক যজ্ঞেশ্বর, ‘জেড’ ক্যাটাগরির দুলামিয়া কটন এবং ‘জেড’ ক্যাটাগরিভুক্ত শ্যামপুর সুগার মিলস লিমিটেড।
জানা যায়, পুঁজিবাজারের অধিকাংশ কোম্পানি প্রতিবছর মুনাফা করলেও এই নয়টি কোম্পানি পুঞ্জীভূত লোকসান কমাতে পারছে না। এ নয় কোম্পানির মোট পরিশোধিত মূলধন ১৩৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা। অন্যদিকে, তাদের মোট পুঞ্জীভূত লোকসান ৬৪৮ কোটি ২০ লাখ ৩০ হাজার টাকা।
সুতরাং নয় কোম্পানির মোট পরিশোধিত মূলধনের চেয়ে মোট পুঞ্জীভূত লোকসান ৫১৪ কোটি ৬০ লাখ ৩০ হাজার টাকার বেশি।
এর মধ্যে- আজিজ পাইপস কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা। আর এ কোম্পানির পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ ৪৩ কোটি ৩৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
বাংলাদেশ শিপিং কপোরেশন (বিএসসি) কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৮২ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আর এ কোম্পানির পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ ১৯০ কোটি টাকার বেশি।
দুলামিয়া কটন কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা। আর এ কোম্পানির পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ ৩২ কোটি ৩৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
মেঘনা কনডেন্স মিল্ক কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ১৬ কোটি টাকা। আর এ কোম্পানির পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ ১০৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।
মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ১২ কোটি টাকা। আর এ কোম্পানির পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ ১৬ কোটি ৯৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
রেনউইক যজ্ঞেশ্বর কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ২ কোটি টাকা। আর এ কোম্পানির পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ ৭ কোটি ৬৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
শ্যামপুর সুগার মিলস লিমিটেড কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৫ কোটি টাকা। আর এ কোম্পানির পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ ২২৫ কোটি ৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা।
জুট স্পিনার্স কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আর এ কোম্পানির পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ ১৪ কোটি ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
নর্দার্ন জুট ম্যানুফেকচারিং কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আর এ কোম্পানির পুঞ্জীভূত লোকসান ১২ কোটি ৯ লাখ ১০ হাজার টাকা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস (এআইএ) বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, সাধারণত কোম্পানিগুলোর ইক্যুইটি ঋণাত্বক থাকার কারণে পুঞ্জীভূত লোকসান বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও বিনিয়োগকারীদের যেসব কোম্পানির পুঞ্জীভূত লোকসান ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে সেসব কোম্পানির শেয়ার ক্রয় বিক্রয়ে সচেতন থাকা উচিত।
তিনি আরও বলেন, যেসব কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের চেয়ে পুঞ্জীভূত লোকসান কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে তাদের চলমান অবস্থা বিবেচনা করা উচিত। ভবিষ্যতে যদি ওই কোম্পানিগুলোর মুনাফা করার কোনো সম্ভাবনা বা সামর্থ না থাকে তবে সেগুলো বিলুপ্ত করা উচিত। তা না হলে কোম্পানিগুলো বাজারে এক ধরনের প্যানিক সৃষ্টি করবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৪ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৪