ঢাকা: শেয়ারবাজারে আশানুরূপ লেনদেন না হলেও বর্তমানে বাজারে স্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছে বলে মনে করছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)।
সোমবার সিএসই’র ঢাকার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ সাজিদ হোসেন এ কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দ সাজিদ হোসেন বলেন, ২০১০ সালের ধসের পর সূচক নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যে আতঙ্ক ছিল, এখন তা আর নেই। তবে লেনদেন আশানুরুপ হচ্ছে না। তারপরও বর্তমানে বাজার মোটামুটি স্থিতিশীল রয়েছে। বাজারের ওঠানামা এখন অনেকটাই স্থিতিশীল।
বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মধ্যে ভালো সমন্বয় হয়েছে। এখন এক্ষেত্রে তেমন কোনো সমস্যা নেই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ ঘোষিত মুদ্রানীতি পুঁজিবাজার বান্ধব হয়েছে। পুঁজিবাজার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এমন কিছু মুদ্রানীতিতে নেই।
ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের বিষয়ে সাজিদ বলেন, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য মিউচ্যুয়াল ফান্ড সবচেয়ে বেশি উপযোগী। কিন্তু সচেতনতার অভাবে দেশের ক্ষুদ্র বিনিয়োগাকারীরা মিউচ্যুয়াল ফান্ডে আগ্রহী না। অথচ আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতে মিউচ্যুয়াল ফান্ড খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, বিনিয়োগের আগে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে কে আছেন। পরিচালনা পর্ষদে কারা আছেন। তারা কতটুকু দক্ষ সেসব তথ্য দেখে এবং যাচাই করে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ করা উচিত। এ জন্য তালিকাভুক্ত কোম্পানির ওয়েবসাইট আপডেট থাকা উচিত।
এ বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে সাজিদ বলেন, তালিকাভুক্ত কোম্পানির ওয়েবসাইট আপডেট আছে কি-না তা যাচাই করে বিএসইসিকে জানানোর দায়িত্ব দুই স্টক এক্সচেঞ্জের। তবে আগে আমরা এ বিষয়ে সিরিয়াস ছিলাম না। এখন এ বিষয়ে আমরা সিরিয়াস হবো।
সিএসই’র এমডি জানান, ১৯৯৮ সাল থেকেই সিএসই’র ইন্টারনেট ট্রেডিং ছিল। বর্তমানে সিএসইতে রিয়েল টাইম ইন্টারনেট ট্রেডিং চালু রয়েছে। এর মাধ্যমে একজন বিনিয়োগকারী ঘরে বসেই রিয়েল টাইমে লেনদেন করতে পারবেন।
ইন্টারটেন ট্রেডিংকে জনপ্রিয় করতে আগামী অক্টোবারের শেষের দিকে সিএসই ইন্টারনেট ট্রেডিং ফেয়ার (মেলা) করবে বলে জানান সাজিদ হোসেন। তিনি বলেন, এই ফেয়ার থেকে স্মার্টফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেটের মাধ্যমে সরাসরি লেনদেন পদ্ধতি দেখানো হবে।
দুর্বল কোম্পানি তালিকাভুক্তির বিষয়ে সাজিদ বলেন, এক্ষেত্রে ইস্যু ম্যানেজারেরও দায়িত্ব রয়েছে। ইস্যু ম্যানেজারদের যখন ধরতে পারবো তখন তারা আর্থিক প্রতিবেদন ফুলিয়ে দেখাতে পারবে না। সব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আইন পরিবর্তনে বিএসইসিতে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আইন পরিবর্তন হলেই সমস্যা সমাধান হবে।
তিনি আরও বলেন, আশা করছি ২০১৬ সালের মধ্যে ট্রেডিং ক্লিয়ারিং কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে। ক্লিয়ারিং কর্পোরেশন হলে ডেরিভেটিভ মার্কেট চালু করা সম্ভব হবে। অবশ্য এর আগে ফিউচার ইনডেক্স চালু করতে হবে। ডেরিভেটিভ মার্কেট চালু হলে স্টক এক্সচেঞ্জের আয় বাড়বে। বর্তমানে আমরা আয়ের যে সমস্যায় ভুগছি, আশাকরি আগামী ৪ থেকে ৫ বছরের মধ্যে কাটিয়ে ওঠতে পারবো।
বিনিয়োগকারীদের প্রশিক্ষিত করে তোলার বিষয়ে তিনি বলেন, শুধু সরকারের একার পক্ষে বিনিয়োগাকরীদের প্রশিক্ষিত করে তোলা সম্ভব না। এ জন্য বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেটকে শুধু সরকারি খাতে না রেখে বেসরকারি খাতেও অংশীদারিত্ব দেওয়ার বিষয়ে আমরা চিন্তা করছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৪