ঢাকা: গত ২৪ থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর ইউনাইটেড এয়ারওয়েজে চরম বিশৃঙ্খল অবস্থা সৃষ্টির কারণ অনুসন্ধান করবে বাংলাদেশ সিকিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এজন্য তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিএসইসি।
রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে জানানো হয়, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের কার্যক্রম স্থগিত, পর্ষদ পুনর্গঠন এবং পুনরায় কার্যক্রম চালুসহ সম্প্রতি কোম্পানিটির বাণিজ্যিক পরিস্থিতি নিয়ে তদন্ত করবে বিএসইসি।
বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে বিএসইসির পরিচালক আবুল কালামকে। অন্য দুই সদস্য হলেন- বিএসইসির সদস্য নজরুল ইসলাম ও আল মাসুম মৃধা।
এদিকে একই কারণে কোম্পানিটিকে নোটিশ দিয়েছিল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ। জবাবে এ ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ কর্তৃপক্ষ।
গত সোমবার ক্যাপ্টেন তাসবিরুল আহমেদ চৌধুরী ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং পর্ষদ সদস্য থেকে পদত্যাগ করেন। হঠাৎ তার পদত্যাগে এয়ারওয়েজটিতে চরম বিশৃঙ্খল অবস্থা সৃষ্টি হয়। এরপর কোম্পানির পর্ষদ পুনর্গঠন করে ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক করা হয় শাহিনুর আলমকে।
শাহিনুর আলম বলেছেন, ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক করার পর কোম্পানির সেক্রেটারি তাকে এর কার্যক্রম সম্পর্কে কোনো দিক নির্দেশনা দেননি। এর প্রেক্ষিতে শাহিনুর আলমের অনুরোধে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এয়ারওয়েজটির সব ফ্লাইট স্থগিত করে। এ কারণে গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার ইউনাইটেডের সব ফ্লাইট বন্ধ ছিল। পরবর্তীতে ২৬ সেপ্টেম্বর আগের ব্যবস্থাপনা পর্ষদ দায়িত্ব নিলে স্বাভাবিক হয় এয়ারওয়েজটির কার্যক্রম।
কোম্পানির পুনর্গঠিত পর্ষদে, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মোহাম্মদ মাহাতাবুর রহমানকে। আর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে রাখা হয়েছে ক্যাপ্টেন তাসবিরুল আহমেদ চৌধুরীকে ও ভাইস চেয়ারম্যান হয়েছেন শাহিনুর আলম।
এদিকে, বৃহস্পতিবার এয়ারওয়েজটির সব ফ্লাইট বন্ধ হয়ে গেলে চরম ভোগান্তিতে পড়েন এর যাত্রীরা। বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। এক পর্যায়ে ওইদিন এ শেয়ারের দর সার্কিট ব্রেকারের সর্বনিম্ন সীমায় চলে আসে।
নানা ঘটনায় বিতর্কিত ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ ২০১০ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। তালিকাভুক্তির পরই এ শেয়ার নিয়ে কারসাজির অভিযোগ ওঠে। নানা ধরনের গুজব ছড়িয়ে শেয়ারটির দর অস্বাভাবিক বাড়িয়ে কোম্পানির পরিচালকরা ৭৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রি করে দেন।
কোম্পানিটির মোট ৫৬ কোটি ৮০ লাখ ৮ হাজার শেয়ার রয়েছে। এর মধ্যে কোম্পানির পরিচালকদের কাছে আছে মাত্র ৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ শেয়ার। অর্থাৎ কোম্পানিটি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশনাও তোয়াক্কা করছে না।
২০১০ সালে বাজার ধসের পর বিএসইসি কোম্পানির সব পরিচালকদের মোট ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের বাধ্যবাধকতা আরোপ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। ওই প্রজ্ঞাপনে একই সঙ্গে কোম্পানির পরিচালকদের পৃথক ভাবে ২ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে বলা হয়। ২ শতাংশ শেয়ার না থাকলে কোম্পানির পরিচালক পদে থাকতে পারবে না।
বাংলাদেশ সময় : ১৮০৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৪