ঢাকা: শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডেকে (এসপিসিএল) ৫৫ লাখ টাকা ও ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডকে (ইউপিজিসিএল) দুই লাখ টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
পাশাপাশি ইউপিজিসসিএল’র ইস্যু ম্যানেজার লংঙ্কা-বাংলা ইনভেস্টমেন্টকে ১ লাখ ও নীরিক্ষা প্রতিষ্ঠান হুদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোংকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বুধবার বিএসইসি’র ৫৩০তম নিয়মিত সভায় এ জরিমানা করার সিদ্ধান্ত হয়।
জরিমানার শিকার হওয়া কোম্পানি দুটির মধ্যে ইউপিজিসিএল এখনো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়নি। প্রতিষ্ঠানটিকে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিওতে) আসার আগেই জরিমানা করেছে বিএসইসি।
জানা গেছে, ইউপিজিসিএল বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার বিক্রি শেষ করে আইপিওর জন্য বিএসইসির কাছে প্রসপেক্টাস জমা দিয়েছে। এই প্রসপেক্টাসে ক্যাস ফ্লো ফরম অপারেটিং অ্যাক্টেভিটিস শিরোনামে ইনকামট্যাক্স পেমেন্ট, আউটফ্লো দেখানোর পরিবর্তে ইনফ্লো দেখিয়ে আবেদন করা হয়েছে। এ জন্য প্রতিষ্ঠানটিকে এবং প্রতিষ্ঠানটির ইস্যু ম্যানেজার ও নীরিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে।
জরিমানার শিকার হওয়া অপর কোম্পানি শাহজিবাজার পাওয়ারের প্রত্যেক পরিচালককে ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি শাহজিবাজারের প্রধান অর্থ কর্মকর্তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য এনফোর্সমেন্টে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, বিএসইসির নির্দেশনা অনুসারে নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান এ কাশেম অ্যান্ড কোম্পানি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস শাহজিবাজারের তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে বিশেষ নিরীক্ষা চালায়। যেখানে বিশেষ নিরীক্ষক জানায় বকেয়া খরচ (ডেফার্ড রেভিনিউ এক্সপেন্ডিচার) ১৩ কোটি ২৬ লাখ ১৭ হাজার টাকা ও প্রাথমিক ব্যয় ৪৩ লাখ ৫৪ হাজার টাকা বাংলাদেশ অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ড (বিএএস) অনুসারে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
নিরীক্ষকের মতে, বিএএস অনুসারে ডেফার্ড রেভিনিউ এক্সপেন্ডিচার বাবদ ৪৩ কোটি ৫৪ লাখ ৭২ হাজার টাকা দেখানো যেতে পারে। তবে এক্ষেত্রে বিএএস ১৬ অনুসারে এর ওপর অবচয় ধার্য করতে হবে।
এছাড়া কোম্পানিটি ডেফার্ড রেভিনিউ এক্সপেন্ডিচার বাবদ ১৩ কোটি ২৬ লাখ ১৭ হাজার টাকা ও প্রাথমিক ব্যয় ৪৩ লাখ ৫৪ হাজার টাকা প্রপার্টি প্লান্ট অ্যান্ড ইকুইপমেন্ট (পিপিপি) হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে। তবে তা পিপিপি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে দেখানো যাবে না।
কোম্পানির এ অর্থ এক্ষেত্রে ব্যয় হিসেবে মুনাফা থেকে বাদ দিতে হবে। ফলে কোম্পানিটি তা না করায় তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে নেট মুনাফা ১৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা বেশি দেখানো হয়েছে।
এর আগে শেয়ারের দামের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতির কারণে বিএসইসির নির্দেশে গত ১১ আগস্ট শাহজিবাজার পাওয়ারের লেনদেন স্থগিত করে দুই স্টক এক্সচেঞ্জ।
একই কারণে ২ আগস্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিএসইসি। এতে বেশ কিছু অনিয়ম খুঁজে পায় তদন্ত দল। এর মধ্যে মুনাফায় গড়মিলও ছিল। এমন অবস্থায় বিএসইসির নির্দেশে সংশোধিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে শাহজিবাজার পাওয়ার।
বাংলাদেশ সময়: ২৩৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৪