ঢাকা: পুঁজিবাজার উন্নয়ন এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় গঠিত পুঁজিবাজার পরামর্শক কমিটির দ্বিতীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
দীর্ঘ তিন বছর পর বুধবার (১২ নভেম্বর) বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কার্যালয়ে পরামর্শক কমিটির এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বিএএসইসি’র চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের পরামর্শক কমিটিতে রয়েছেন- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্সের (বিএবি) সভাপতি, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএবি) সভাপতি, সেন্ট্রাল ডিপজিটরি অব বাংলাদেশ’র চেয়ারম্যান, ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশনের (আইসিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) পরিচালক, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান, দি ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস পত্রিকার সম্পাদক প্রমুখ।
বৈঠক শেষে বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক ও কমিশন মুখপাত্র মো. সাইফুর রহমান বলেন, গত তিন বছর ধরে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে আমরা যেসব সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনা করেছি, আজকের বৈঠকে তা আলোচনা হয়েছে। তবে বৈঠকে পুঁজিবাজার নিয়ে সবাই ইতিবাচক ধারণা পোষণ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর মধ্যে- দুই স্টক এক্সচেঞ্জের প্রশাসন থেকে মালিকানা পৃথকীকরণ, বিএসইসি’র সার্ভিলেন্স সিস্টেম, প্লেসমেন্ট নীতিমালা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া বিএসইসি ‘এ’ ক্যাটাগরিতে উন্নিত ও আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
পরামর্শক কমিটি বাজার নিয়ে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন এবং কমিশন তা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে বলেও জানান তিনি।
বৈঠকে আইসিবি’র এমডি ফায়েকুজ্জামান নতুন কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি, বাংলাদেশ ফান্ডের বর্তমান অবস্থা, ওটিসি মার্কেট নিয়ে আলোচনা করেন।
তিনি বলেন, বাজারে আসা নতুন কোম্পানির শেয়ার দাম অস্বাভাবিক বাড়ার কারণে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীদের রক্ষা করতে করণীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বিএসইসিকে আহ্বান জানান তিনি।
বৈঠকে সিএসই’র চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ বলেন, পরামর্শক কমিটিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের রাখা যেতে পারে। কারণ, পুঁজিবাজার আয়করের সঙ্গে জড়িত। এমতাবস্থায় কমিটিতে এনবিআরের কর্মকর্তারা জড়িত থাকলে পুঁজিবাজার উপকৃত হবে।
এছাড়া বাজারে বিনিয়োগকারীদের অবাধ অংশগ্রহণের জন্য স্টক হোল্ডারদের নতুন শাখা খোলা যেতে পারে বলে মত দেন তিনি।
এছাড়া কমিটির সদস্যরা- বাংলাদেশের বন্ড মার্কেট উন্নয়নে করণীয়, বাজারে নতুন পণ্য আনা, বিএসইসি যে সব কোম্পানিকে জরিমানা করে তার কারণ বিস্তারিত প্রকাশ করা, বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বিএসইসি’র মধ্যে আলোচনা, ফিন্যান্সিয়াল আইন, আইপিও প্রাইসিং নিয়ে বিশদ আলোচনা করেন।
২০১১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি গঠিত পরামর্শক কমিটির সঙ্গে দীর্ঘ তিন বছর পর বিএসইসির বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো। এর আগে ২০১১ সালের ২৫ জুলাই প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
পরামর্শক কমিটির প্রধান দায়িত্ব নির্ধারণ করা হয়েছিল- পুঁজিবাজার উন্নয়নে এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় নীতি নির্ধারণে ও বাস্তবায়নে বিএসইসিকে পরামর্শ প্রদান করা।
কমিটি গঠনের টার্মস অফ রেফারেন্সে বলা আছে, কমিটি প্রতি ৬ মাসে অন্তত একবার বৈঠকে মিলিত হবে। তবে কমিটি প্রয়োজন মনে করলে একাধিকবার বৈঠক করতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৪