ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১১ রবিউস সানি ১৪৪৬

শেয়ারবাজার

পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ বৃদ্ধির সুযোগ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৫
পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ বৃদ্ধির সুযোগ

ঢাকা: সাবসিডিয়ারি কোম্পানির বিনিয়োগ ব্যাংকের বিনিয়োগ এক্সপোজারে হিসাব না করার নির্দেশ দেওয়ার মাধমে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগের বৃদ্ধির সুযোগ করে দিলো বাংলাদেশ ব্যাংক। শেয়ারবাজার চাঙ্গা করতে সাবসিডিয়ারি কোম্পানির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করার সুযোগ পেলো ব্যাংক।



রোববার (২০ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপন জারি করে কার্যরত দেশি-বিদেশি সব তফসিলি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়েছে। পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারী ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীসহ সংশ্লিষ্টদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নতুন নির্দেশনা কার্যকর হবে আগামী বছরের ১ জানুয়ারি।

ঢাকা স্টক একচেঞ্জের সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আহমেদ রশীদ লালী বলেন, এ ছাড়ের ফলে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগের সুযোগ বাড়বে। ফলে বাজার গতিশীল হবে। সর্বোপরি বাংলাদেশ ব্যাংক পুঁজিবাজারের স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে। যা বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পুঁজিবাজারে তফসিলি ব্যাংকগুলোর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ বিনিয়োগ সংক্রান্ত ঝুঁকি নূন্যতম পর্যায়ে রাখার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে ব্যাংক কোম্পানি আইনের আওতায় বিভিন্ন নিদের্শনা জারি করেছে।

ব্যাংকগুলোর পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সর্বশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিগত সমর্থন বাড়ানোর জন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে তফসিলি ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনক্রমে প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন সাবসিডিয়ারি কোম্পানিতে দেওয়া মূলধনের বিপরীতে ধারণকৃত ইক্যুইটি শেয়ার ব্যাংকের একক পুঁজিবাজার বিনিয়োগ হিসাবায়নের ক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্ত হবে না। ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৪৫ ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সাবসিডিয়ারি কোম্পানির মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর সর্বমোট ৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে। বর্তমানে পুঁজিবাজারে ব্যাংকিং খাতের বিনিয়োগ ব্যাংকগুলোর মোট মূলধনের ৩৪ শতাংশ। সাবসিডিয়ারির বিনিয়োগ বাদ দিলে এটি দাঁড়াবে ২৫ দশমিক ৮৭ শতাংশ, যা নির্ধারিত সীমার খুব কাছাকাছি। দু’একটি ব্যাংক ছাড়া অধিকাংশ ব্যাংকের বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

একটি ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ওই ব্যাংকের মোট বিনিয়োগ রয়েছে ৫৭০ কোটি টাকা। যা তার মূলধনের ৩৩ শতাংশ। সাবসিডিয়ারি কোম্পানির বিনিয়োগ রয়েছে ২০৯ কোটি টাকা। এখন হিসাব থেকে ২০৯ কোটি টাকা বাদ দিলে বিনিয়োগের হার ১৯ থেকে ২০ শতাংশে নেমে আসবে। এর ফলে নতুন করে বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

এদিকে ২০১০ সালে পুঁজিবাজারে শেয়ার দর বাড়তে থাকে সেক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছিল ব্যাংকের বিনিয়োগ। কিন্তু হঠাৎ করেই সে সময় বাণিজ্যিক ব্যাংকের বিনিয়োগের সীমা মোট মূলধনের ২৫ শতাংশের মধ্যে রাখার নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে বাজার ধস শুরু হয়। এরপর ব্যাংকগুলোর শেয়ার বিনিয়োগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরই অংশ হিসেবে তফসিলি ব্যাংকগুলোর শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ কমিয়ে দেওয়া হয়।

বিশেষ করে ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন করে ব্যাংকের বিনিয়োগের সুযোগ ব্যাপকভাবে কমিয়ে দেওয়া হয়। তবে সাবসিডিয়ারি কোম্পানির বিনিয়োগ ব্যাংকের বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য হওয়ার বিষয়টি পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা শুরু থেকেই বিরোধিতা করে এসেছেন। পাশাপাশি এ অবস্থান থেকে সরে আসতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনও বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ নেয়। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক এ সিদ্ধান্ত নিলো।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৫
এসই/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।