ঢাকা: পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট (বিও হিসাব) নবায়নের সময় ৩০ জুন (বৃহস্পতিবার) শেষ হবে।
নির্ধারিত এ সময়ের মধ্যে প্রতিটি বিও হিসাবকে ৫০০ টাকা ফি দিয়ে নতুন করে নবায়ন করতে হবে।
সিডিবিএল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে শেয়ার সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) তথ্য মতে, দেশের পুঁজিবাজারে বর্তমানে ৩২ লাখ ১৮ হাজার বিও হিসাব রয়েছে। প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) আবেদন এবং সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগকারীরা বিও হিসাবের মাধ্যমে বিনিয়োগ করেন। এ বিনিয়োগকারীরা ঢাকা ও চট্টগ্রামের ব্রোকারেজ হাউজের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে লেনদেন করেন।
সিডিবিএলএ’র নিয়ম অনুসারে বিও হিসাব নবায়ন করতে ৫০০ টাকা লাগবে। এরমধ্যে সিডিবিএল ১৫০ টাকা, হিসাব পরিচালনাকারী ব্রোকারেজ হাউস ১০০ টাকা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড একচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ৫০ টাকা এবং বিএসইসির মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে ২০০ টাকা জমা হয়। গত বছর এ খাত থেকে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে ৮১ কোটি টাকা।
প্রতিবছরের ৩০ জুন পর্যন্ত আগের বছরের সব বিও হিসাবগুলোকে নতুন করে নবায়ন করতে হয়। তবে এবার অতিরিক্ত ফি দিয়ে ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে বিও নবায়নের সুযোগ দেওয়া হবে। এখন পুঁজিবাজারে ৩২ লাখ বিও হিসাব রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকাতে ২৫ লাখ এবং ঢাকার বাইরে ৭ লাখ। ৩২ লাখ বিও হিসাবের মধ্যে শেয়ার কেনা-বেচা করেন এমন বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবের সংখ্যা ১৫ লাখ ৯১ হাজার ৫১৮টি। আর বাকি ১৬ লাখ বিও বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবে চলতি বছরে প্রথম দিন থেকে শেয়ার শূন্য অবস্থায় পড়ে আছে।
তবে আরো কষ্টকর বিষয় হলো ১৬ লাখ বিও হিসাবের মধ্যে ৪ লাখ ৮৪ হাজার ১০১টি বিও হিসাব চালুর পর কখনো শেয়ার কেনা বেচা হয়নি। অথাৎ এ হিসাবগুলোর পেছনে প্রতি বছর বিনিয়োগকারীদের সর্বনিম্ন খরচ হচ্ছে ১হাজার টাকা। এর মধ্যে ব্যাংক চার্জ বাবদ ৫শ আর বিও নবায়ন বাবদ ৫শ টাকা।
ব্রোকারেজ কর্মকর্তারা জানান, এসব বিও অ্যাকাউন্ট সাধারণত আইপিওর জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। লটারিতে কোনো শেয়ার বরাদ্দ পায়নি বলে এসব অ্যাকাউন্টে কোনো শেয়ারের কেনা-বেচাও নেই।
অন্যদিকে ঢাকাতে বিও অ্যাকাউন্টের জন্য মেশিন রিডেবল হিসাব ব্যবহারের নিয়ম রয়েছে। কিন্তু ঢাকাতে ২৫ লাখ বিও হিসাবের মধ্যে বেশ কিছু হিসাবে মেশিন রিডেবল হিসেব নেই।
বিনিয়োগকারী সিমা আক্তার বাংলানিউজকে জানান, ফি জামা দেওয়ার সময় আরো বাড়ানো প্রয়োজন। বেশির ভাগ বিনিয়োগকারী লোকসানে থাকায় বিও হিসাবগুলোর কথা ভুলে গেছেন। তাই ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের কথা চিন্তা করে নবায়ন কমানোর পাশাপাশি নবায়নের সময় আরো বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিডিবএলএ’র কর্মকর্তা শুভ্রকান্তি চৌধুরী বাংলানিউজকে জানান, প্রতি বছর ৩০ জুনের মধ্যে নতুন বছরের জন্য বিও হিসাবগুলো নবায়ন করতে হয়। এবারের জন্য বিও প্রতি ৫০০টাকা ফি নির্ধারণ করেছে সিডিবিএল। ব্যাংকের মাধ্যমে প্রতিটি বিও হোল্ডারকে এ টাকা জমা দিতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নবায়ন ফি দিতে ব্যর্থ হওয়ায় অ্যাকাউন্টগুলোর বন্ধ করা হবে।
তবে যেসব বিও হিসাবে শেয়ার থাকবে সেগুলো সাসপেন্ড (স্থগিত) করা হবে। পরে নবায়ন ফ্রি দিয়ে বিও স্বচল করতে পারবেন। আর যেসব বিও হিসাবে শেয়ার থাকবে না সেগুলো নির্ধারিত সময়ে নবায়ন না করলে বন্ধ হয়ে যাবে বলে জানান তিনি।
নতুন করে সময় বাড়ানো হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নতুন করে সময় বাড়ানো হবে না।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক শাকিল রিজভী বাংলানিউজকে জানান, ৩০ জুনের মধ্যে বিও হিসাবগুলো নবায়ন করতে হবে। বাংলানিউজকে একই কথা জানান চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম সাইফুর রহমান মজুমদার।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০১ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০১৬
এমএফআই/এসএইচ