কিন্তু এ সময় দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে এপ্রিল মাস থেকে শুরু হয় দরপতন।
ফলে পুঁজিবাজারের সাড়ে ২৯ লাখ বিনিয়োগকারী, ব্রোকারেজ হাউজ, মার্চেন্ট ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কথা চিন্তা করে ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের বাজেটে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানোর পাশাপাশি সরকার আমানতের ওপর আবগারি শুল্ক বসানো হচ্ছে। এর ফলে নতুন অর্থবছরের বাজেটের পর থেকে চাঙ্গা হবে পুঁজিবাজার- এমনটাই আশা প্রকাশ করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।
ব্যাংকিং খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এমনিতে ব্যাংক ডিপোজিটে আমানতের সুদের হার ৪-৫ শতাংশ। তার ওপর আবগারি শুল্ক বাড়ানো হলে। আবগারি শুল্ক দ্বিগুণ হবে। তাতে সাধারণ সঞ্চয়কারীরা ব্যাংকে আর টাকা রাখবে না। ফলে ব্যাংক ও সঞ্চয়পত্রের সঞ্চয়কারী মুনাফার আশায় এই টাকা বিনিয়োগ করবেন পুঁজিবাজারে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক রকিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমান মানি মার্কেটের যে অবস্থায় আছে, তাতে ব্যাংকে ডিপোজিট না রেখে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করলেই লাভবান হবে। এছাড়াও নতুন করে সঞ্চয়পত্রে সুদের হার কমাচ্ছে বলে শুনেছি। যদি এগুলো কমানো হয়, তবে বাজেটের পর থেকেই পুঁজিবাজার ভাল হবে।
সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে আগামী ১ জুলাই থেকে ব্যাংকে স্থায়ী আমানতের ওপর আবগারি শুল্ক বসানো হলে- স্থায়ী আমানতে গ্রাহকের মুনাফা তো হবেই না বরং আরো লোকসান হবে।
সিদ্ধান্ত অনুসারে, এক লাখ টাকার উপর থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত আবগারী শুল্ক (এক্সাইজ ডিউটি) ধরা হচ্ছে এক হাজার টাকা। সরকারি ব্যাংকে কেউ এক লাখ টাকা তিন মাস মেয়াদে এফডিআর করলে মেয়াদ শেষে সাড়ে ৪ শতাংশ হারে (বেসরকারি ব্যাংকের ক্ষেত্রে সুদ ১ শতাংশের মতো বেশি) সুদ পাবেন ১ হাজার ১২৫ টাকা। উৎসে কর হিসেবে এর ১৫ শতাংশ (১৬৯ টাকা) কেটে নেওয়া হবে। আর আবগারী শুল্ক হিসেবে কাটা যাবে ১ হাজার টাকা। অর্থাৎ মোট ১ হাজার ১৬৯ টাকা কেটে নেওয়া হবে। এতে তিন মাস পরে গ্রাহক ফেরত পাবে ৯৯ হাজার ৯৫৬ টাকা। অর্থাৎ তিন মাস টাকা খাটানোর পর লাভের পরিবর্তে নিজের আসল টাকা থেকেই কম পাবেন গ্রাহক। আর মূল্যস্ফীতির কারণে টাকার ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিলে এ লোকসান আরও বেশি। ফলে এই টাকা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করবে। আর বিনিয়োগ বাড়লেই শেয়ারের দাম বাড়বে। বাজারও ভাল হবে।
এদিকে বাজেটে করপোরেট টেক্স কমানোর পাশাপাশি শর্তসাপেক্ষে অপ্রদর্শিত অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ থাকছে বলে জানাগেছে।
সার্বিক বিষয়ে অর্থনীতিবিদ আবু আহমদে বাংলানিউজকে বলেন, পুঁজিবাজারবান্ধব বাজেট হলে, বাজেটের পর পুঁজিবাজার ভাল হতে পারে। তিনি বলেন, এখন দেশের মানুষের হাতে যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ রয়েছে কিন্তু বিনিয়োগের পরিবেশ না থাকায় এ টাকা বিনিয়োগ হচ্ছে না।
বাংলাদেশ সময়: ১০০৮ ঘণ্টা, ৩১ মে, ২০১৭
এমএফআই/এসএইচ