কোম্পানি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এদিকে কোনো সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই কোম্পানিটির শেয়ারের দর ‘অস্বাভাবিক হারে’ বাড়ায় দেশের দুই পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) কর্তৃপক্ষ কোম্পানিকে দর বৃদ্ধির কারণ জানতে চেয়ে চিঠি দেয়।
ডিএসই’র তথ্য মতে, ২০১১ সাল থেকে লোকসানে থাকা কোম্পানিটি তাদের শেয়ারহোল্ডারদের এখন পর্যন্ত কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি। ফলে কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে লেনদেন হচ্ছে। সবশেষ ২০১০ সালে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দেয়।
এরপর টানা ৬ বছর ধরে লোকসানে থাকার পাশাপাশি নতুন করে গত এক বছর ধরে উৎপাদন বন্ধ থাকা কোম্পানিটির শেয়ারের দাম গত চার মাসে ৩৯ টাকা থেকে বেড়ে ১৪৯ টাকায় কেনাবেচা হয়েছে। আর গত আট মাসে দাম বেড়েছে ১২৭ টাকার মতো।
এসব অনিয়ম দেখেও দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ এবং নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) নীরব ভূমিকা পালন করছে বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
আর এ সুযোগে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে শেয়ার গছিয়ে বাজার থেকে কোটি কোটি টাকা তুলে নিচ্ছে উদ্যোক্তাসহ কারসাজি চক্র।
ডিএসই’র তথ্য মতে, গত ১ আগস্ট কোম্পানিটির শেয়ার ৮০ দশমিক ৫ টাকায় কেনাবেচা হয়। এদিন কোম্পানিটির শেয়ারের মোট লেনদেন ভলিউম ছিলো ২৮ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। এরপর থেকে কে অ্যান্ড কিউ’র শেয়ারের দাম বাড়তে থাকে। যা অব্যাহত ছিলো সবশেষ ২৮ আগস্ট পর্যন্ত। এতে গত ১৮ কার্যদিবসে শেয়ারটি দাম বেড়েছে ৬০ টাকা।
২ আগস্ট ৮৩ টাকায় মোট ১৪ লাখ ১ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এরপরের দিনগুলোতে পর্যায়ক্রমে ১৫ লাখ ৪ হাজার, ১৯ লাখ ৩৪ হাজার, ১৮ লাখ ৫৬ হাজার, ৭৮ লাখ ৯৯ হাজার, ১৯ লাখ ৯৭ হাজার, ৫৬ লাখ ৯৩ হাজার, ৬০ লাখ ৯ হাজার, ৮৮ লাখ ৫ হাজার, ৭৭ লাখ ৬৮ হাজার, ৯৬ লাখ ৭১ হাজার, ৪২ লাখ ৪৬ হাজার, ৮১ লাখ ৬ হাজার, ১৯ লাখ ৯ হাজার, ৮৬ লাখ ৭৪ হাজার, ১ কোটি ৩৭ লাখ ৩৪ হাজার টাকা এবং ২৮ আগস্ট এ কোম্পানির শেয়ার সর্বোচ্চ ১৪৯ দশমকি ৭ টাকা দরে ১ কোটি ৩৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।
অথচ গত বছরের ডিসেম্বর মাসে যে কোম্পানির শেয়ারের দাম ২২ টাকায় নেমে যায়। সেই শেয়ার মাত্র আট মাসের ব্যবধানে চলতি বছরের ২৮ আগস্ট (সোমবার) সর্বোচ্চ ১৪৯ টাকায় কেনাবেচা হয়েছে। সেই হিসেবে আট মাসে শেয়ারটির দাম বেড়েছে ১২৭ টাকা।
এ বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবু আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, কোম্পানি উদ্যোক্তা ও কারসাজি চক্রের কারণে শেয়ারটির দাম ক্রমাগত বাড়ছে। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিএসইসি’র উচিৎ এদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া, কঠোর শাস্তির আওতায় আনা। কিন্তু স্টক এক্সচেঞ্জ ও কমিশন দেখেও না দেখার ভূমিকা পালন করছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১৭
এমএফআই/জেডএস