পাশাপাশি কোম্পানিটি হয়ে পড়েছে ঋণগ্রস্ত। আশাহত হয়ে কোম্পানির উদ্যোক্তা এবং দেশি-বিদেশি শেয়ারহোল্ডাররা তাদের হাতে থাকা শেয়ারগুলো বিক্রি করে দিচ্ছেন।
কোম্পানির কর্তাব্যক্তিরা হলেন চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শফিকুল ইসলাম, পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম ও তরিকুল ইসলাম। এছাড়াও কোম্পানির মনোনীত পরিচালক আজিজুল হক। তালিকাভুক্তির আগে থেকেই তারা সবাই কোম্পানি পরিচালনা করে আসছেন।
শেয়ারহোল্ডারদের অভিযোগ, কোম্পানিটি প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) পুঁজিবাজারে আসার সময় মুনাফা, সার্বিক অবস্থা এবং ভবিষ্যতের আশা জাগানিয়া ছবি তুলে ধরেছিল। বাস্তবে ঘটেছে উল্টো। তালিকাভুক্ত হওয়ার পর থেকেই বিপরীত চিত্র দেখা গেছে।
ডিএসইর তথ্যমতে, পুঁজিবাজারে আসার আগে, অর্থাৎ ২০১২, ১৩ এবং ১৪ সালে, এই কোম্পানির ইপিএস দেখানো হয়েছিলো যথাক্রমে ৪ দশমিক ৯৭ পয়সা, ৪ দশমিক ৯০ পয়সা এবং ৪ দশমিক ৯৭ পয়সা।
এরপর ২০১৫ সালে কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ওই বছর হঠাৎ করেই কোম্পানির ইপিএস বাড়িয়ে দেখানো হয় ৫ দশমিক ০৭ পয়সা। অথচ বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ২০১৬ সালে ইপিএস কমিয়ে দেখানো হয় ৪ দশমিক ৪৮ পয়সা।
একইভাবে তালিকাভুক্তির আগের তিন বছর (২০১২, ২০১৩ এবং ২০১৪ সাল) যথাক্রমে এনএভি দেখানো হয় ১৯ দশমিক ০৫ টাকা, ২৫ দশমিক ৫০ টাকা এবং ৩০ দশমিক ৭৭ টাকা। কিন্তু তালিকাভুক্তির বছর একই কায়দায় বাড়ানো হয় ৩৫ দশমিক ৯০ টাকা। কিন্তু এরপরের বছর আবারো কমিয়ে দেখানো হয় ৩৪ দশমিক ১৮ টাকা।
ফলে বছরজুড়ে একই খাতের অন্য কোম্পানির শেয়ারের দামের চেয়ে এই কোম্পানির শেয়ারের দাম তুলনামূলকভাবে ছিলো কম।
অনুসন্ধ্যানে দেখা গেছে, গতবছরের জুন মাসে উদ্যোক্তাদের শেয়ারের মালিকানা ছিলো ৭৫ শতাংশ। যা গত তিন মাসে সাড়ে ৪ শতাংশ শেয়ার কমে সেপ্টেম্বর মাসে দাঁড়িয়েছে ৭০ দশমিক ৫০ শতাংশে।
ঠিক সেই সময়ে ভাল মুনাফার প্রত্যাশায় কেনা দশমিক ২৮ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন বিদেশি শেয়ারহোল্ডারা।
এরা একই খাতের কোম্পানি আরমিট, বার্জার পেইন্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি লিমিটেড, জিকিউ বলপেন ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এবং উসমানিয়া গ্লাস কোম্পানিতে বিনিয়োগ করছেন। ফলে গত তিন মাসে এসব কোম্পানিতে বিদেশিদের শেয়ারের পরিমাণ বেড়েছে।
এসবের পাশাপাশি কোম্পানির ভবিষৎ নিয়ে শঙ্কায় পড়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও শেয়ার বিক্রি করেছেন। তারা তাদের হাতে থাকা ১৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ শেয়ার থেকে ৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন।
এদিকে সম্প্রসারণ ও ব্যাংকঋণ পরিশোধের কথা বলে পুঁজিবাজার থেকে ৭২ কোটি উত্তোলন করে কোম্পানিটি। কিন্তু তারপরও কোম্পানি এখনও ঋণগ্রস্তই থেকে গেছে। কোম্পানির তথ্য অনুসারে, এখন ১২৪ কোটি ১২ লাখ ৭০ হাজার টাকা ব্যাংক ঋণ রয়েছে কোম্পানিটির। তবে বিনিয়োগকারীরা বলছেন, ব্যাংক লোন আরো বেশি হবে।
এসব বিষয়ে কোম্পানি সচিব মনিরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
** আইপিও’র টাকা ব্যবসায় নয়, ব্যাংকে রেখেছে আমান ফিড
বাংলাদেশ সময়: ১২১৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১৭
এমএফআই/জেএম