কোম্পানির পক্ষ থেকে ডিএসইকে পাঠানো গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইপিও’র অর্থ ব্যয় পর্যালোচনার এক প্রতিবেদনে এ চিত্র দেখা গেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোম্পানিটি প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, কোম্পানির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের দূরদর্শিতা ও দক্ষতার অভাবেই কোম্পানির এমন দশা। তিনি বলেন, কোম্পানির ভবিষ্যৎ নির্ভর করে এর সুদক্ষ পরিচালনার ওপর। কিন্তু তারা অক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে।
ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, নির্ধারিত সময় আইপিও’র অর্থ ব্যবহার না করার প্রকৃত কারণ খতিয়ে দেখা হবে। এরপর স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে অবহিত করা হবে।
বিএসইসি’র একাধিক কর্মকর্তা জানান, কিছু কোম্পানি সময়মতো আইপিও’র টাকা কাজে লাগাচ্ছে না, তা কমিশনের পর্যবেক্ষণে আছে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে কমিশন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য মতে, ২০১৪ সালে তিনটি খাতে ব্যয়ের জন্য ১৭৫ কোটি টাকা উত্তোলন করে ২০১৫ সালে পুঁজিবাজারে বস্ত্রখাতে তালিকাভুক্ত হয় কোম্পনিটি। আবেদনের সময় কোম্পানিটি বলেছিলো, চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আইপিও’র সব অর্থ ব্যয় করবে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের পরেও কোম্পানি কর্তৃপক্ষ বিনিয়োগকারীদের ২৯ কোটি ৬৭ লাখ ৬ হাজার ১০৯ টাকা ব্যয় করেনি। যা শতাংশের হিসাবে ১৭ শতাংশ।
কোম্পানির তথ্য মতে, আইপিও’র মাধ্যমে পুঁজিবাজারে আসার সময় কোম্পানিটি আইপিও খরচ বাবদ ২ কোটি ৭৭ লাখ ১০ হাজার টাকা, কোম্পানির ব্যাংক লোন পরিশোধ বাবদ ১৮ কোটি ২২ লাখ ৯০ হাজার টাকা এবং ক্যাপিটাল ইনভেস্টমেন্ট বাবদ ১৫৪ কোটি টাকা ব্যয় করার প্রতিশ্রুতি দেয়।
কিন্তু নির্ধারিত সময়ে কোম্পানিটি আইপিও’র ব্যয় ও ব্যাংক লোন বাবদ সব টাকা পরিশোধ করলেও ক্যাপিটাল ইনভেস্টমেন্ট বাবদ মাত্র ১২৪ কোটি ৩২ লাখ ৯১ হাজার ৮৯১ টাকা ব্যয় করেছে। এ খাতে এখনো বাকি রয়েছে ২৯ কোটি ৬৭ লাখ ৬ হাজার ১০৯ টাকা।
নির্ধারিত সময়ে এ টাকা ব্যয় করতে না পেরে কৌশলে কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) নতুন করে আগামী মার্চ পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করেছে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। আর বিনিয়োগকারীদের টাকা ব্যাংকে রেখে সবশেষ বছর অন্তত ৪ কোটি টাকা সুদ নিয়েছে কোম্পানিটি।
এসব বিষয়ে কোম্পানি সচিব আসলাম আহমেদ খান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা প্রথমে যে পরিকল্পনা নিয়ে টাকা উত্তোলন করেছি, পরে তার কিছুটা পরিবর্তন করেছি। তাই নির্ধারিত সময়ে কাজ সমাপ্ত করতে পারনি। তবে নতুন করে যে সময় নিয়েছি, সেই সময়ের মধ্যে অবশিষ্ট কাজ শেষ করতে পারবো।
পকিল্পনার ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, নতুন পরিকল্পনা অনুসারে প্রি-ফেব্রিকেটেড (একতলা টিনশেড) ভবনের পরিবর্তে বহুতল ভবন করেছি। অত্যাধুনিক দু’টি বড় বড় মেশিন কেনা হয়েছে। এসব কারণে শর্তমতো প্রক্রিয়া শেষ করতে একটু দেরি হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৭
এমএফআই/জেডএস