বাণিজ্যিক রাজধানী মতিঝিলসহ দেশের ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। পুরনোদের পাশাপাশি এরইমধ্যে প্রায় ২০ হাজার বিনিয়োগকারীও টানতে সক্ষম হয়েছে বাজার।
অন্যদিকে তারল্য সংকটে থাকা প্রধান পুঁজিবাজারের লেনদেনও ৩০০ কোটি টাকার গড় থেকে হাজার কোটি টাকায় পৌঁছেছে। তাতে লোকসানে থাকা হাউজগুলো ব্যবসায় ফিরছে। কর্তৃপক্ষ মনে করছে, এবার তারা ‘মুনাফার মুখ দেখতে পারবেন’।
বিনিয়োগকারীদের তথ্য সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) তথ্য মতে, প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) এবং সেকেন্ডারি মার্কেটে মিলে মোট ২৭ লাখ ৯৩ হাজার ৫৪৮ জন বিনিয়োগকারী বাজারে রয়েছেন। এর মধ্যে মূল মার্কেট অর্থাৎ সেকেন্ডারি মার্কেটে লেনদেন করা বিনিয়োগকারীর সংখ্যা প্রায় ১০-১২ লাখ। যাদের অধিকাংশই এখন সক্রিয় হয়েছেন।
মতিঝিলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ভবনের আনোয়ারা সিকিউরিটিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. আজম খান বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচনের পর থেকে এখন প্রতিদিনই হাউজে বিনিয়োগকারীর উপস্থিতি বাড়ছে। পাশাপাশি ফোনে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা।
লংকাবাংলা সিকিউরিটিজের এক বিনিয়োগকারী বাংলানিউজকে বলেন, ২০১৯ সালে পুঁজিবাজার ভালো থাকবে এমন প্রত্যাশায় গত ডিসেম্বর থেকে আমরা ৫-৭ জন বন্ধু একসঙ্গে বেশ কিছু কোম্পানির শেয়ার কিনেছি।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালের পর থেকে গত নভেম্বর পর্যন্ত ব্রোকারেজ হাউজে আসিনি। ফোনে যা খোঁজখবর নিয়েছি। কিন্তু এখন নিয়মিতই আসছি, শেয়ার কেনা-বেচা করছি।
তার মতে, নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সরকার ক্ষমতায় এসেছে, তাই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থাও একটু বেড়েছে। এ কারণে ব্যাংক, বিমা এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ বেশির ভাগ খাতের কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ছে।
নাম না প্রকাশ শর্তে রেপিড সিকিউরিটিজ লিমিটেডের এক কর্মকর্তা বলেন, ২০১০ সালের পর ২০১৪ সালে কিছুদিন বিনিয়োগকারী এসেছিলেন। কিন্তু তারপর গত তিন-চার বছর ধরে লোকশূন্য ছিলো হাউজ। ফলে হাউজে চেয়ার কমিয়েছি।
তবে লোকজন এখন বাড়ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এখন লোকজন আসতে শুরু করেছে। ফলে হাউজের চেয়ারগুলো সম্পূর্ণ ভরে যাচ্ছে। আর কয়েকদিন গেলে হয়তো নতুন চেয়ার কিনতে হবে।
ডিএসইর সাবেক প্রেসিডেন্ট ও ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) প্রেসিডেন্ট শাকিল রিজভী বাংলানিউজকে বলেন, জাতীয় সংসদের নির্বাচন নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের শঙ্কা ছিলো, যা এখন কেটেছে। এখন বাজার ভালো থাকবে, এমন প্রত্যাশায় ব্রোকারেজ হাউজে বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতি একটু বাড়ছে।
ডিবিএ’র সিনিয়র সহসভাপতি শরীফ আনোয়ার হোসেন বলেন, এবার মন্ত্রিসভায় ‘পুঁজিবাজারবান্ধব’ অর্থমন্ত্রী এসেছেন। এছাড়াও অনেক মন্ত্রী এমপি আছেন যারা বাজার ভালো রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন। ফলে পুঁজিবাজার ভাল থাকবে। এই আশায় বিনিয়োগকারীরা আবারো বাজারে ফিরছেন।
এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেছেন, ২০১৯ সালে পুঁজিবাজার ভালো হবেই। একই কথা একাধিকবার বলেছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খায়রুল হোসেন।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৯
এমএফআই/জেডএস