মান্দারিন ভাষায় মালয়েশিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় দৈনিক পত্রিকা সিন চিওয়ের সিনিয়র রিপোর্টার এবং অনলাইনের উপস্থাপিকা কোহ চিউ হিয়ংয়ের আরেক নাম আঁখি। নিঃসন্দেহে এজেএফ ফেলোশিপ টিমের সবচেয়ে উচ্ছ্বসিত ও প্রাণোচ্ছল সাংবাদিক তিনি।
নিজে যেমন আমোদে থাকেন, তেমনি সবাইকে রাখেন আনন্দে। সিঙ্গাপুরের চায়না টাউনে গেলো শনিবার (২৯ জুলাই) থেকে শুরু হয়েছে ৫০ সেন্টের ফুড ফ্যাস্টিভাল।
৫০ সেন্ট বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩০। আঁখি টিমের সবাইকে প্রথম সংবাদটা দিলেন। তিনি নিজেও সেখানে যাবেন তার পুরানো এক প্রতিবেশীর সঙ্গে দেখা করতে।
যিনি এখন সিঙ্গাপুরে থাকেন। সেদিন আর যাওয়া হলো না আমাদের। বরং রোববার (৩০ জুলাই) বিকেলে মুম্বাই মিররের সিনিয়র রিপোর্টার চৈতন্য মারপেকার এবং জাকার্তা পোস্টের অনলাইন এবং আন্তর্জাতিক পেজের সম্পাদক দামার হারসানতোকে সঙ্গে নিয়ে রওনা হলাম চায়না টাউনের উদ্দেশে।
চায়নিজদের এলাকা মানেই খাবারের অনেক দোকান এবং আশপাশের এলাকাজুড়ে খাবারের ঘ্রাণ। তবে সবসময় এটাকে সুঘ্রাণ বলা যাবে না। আর পরিবেশটা কিছুটা নোংরাও হয়।
সোমবার (৩১ জুলাই) বিকেলে চায়না টাউনজুড়ে রমরমা ভিড়। হাজার হাজার মানুষ লাইন ধরে খাচ্ছে। টেবিল চেয়ারে জায়গা না পেলে দাঁড়িয়েও খাচ্ছে অনেকে। আবার সুস্বাদু খাবারের জন্য লাইন ধরেও দাঁড়িয়ে আছেন।
পুরো এলাকায় লণ্ঠন দিয়ে সাঁজানোর কারণে রঙিন হয়ে ওঠেছে। খাবারের পাত্রগুলোতে গরম ধোঁয়া উড়ছে। বোঝা যায় চায়নিজরা কতো ভোজনপ্রিয়। গায়ে গায়ে ধাক্কা লাগলেও খাবার গ্রহণ করছে দাঁড়িয়েই।
ছোট ছোট কাগজের বাটিতে খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে। বোঝা যায় এই বাটিগুলো একবারই ব্যবহৃত হবে। খাবারে শূকরের মাংস এবং চিংড়ির আধিক্য বোঝা যায়।
রং বেরংয়ের খাবার, সব খাবারের নাম জানা বা উপাদানগুলো জানা সম্ভব নয়। লাল ওয়াইনে ভেজানো মুরগির মাংসের দোকানে দেখলাম বেশ ভিড়।
মুরগির মাংসকে কুচিকুচি করে রেডওয়াইনে মেশানো হয়েছে। নাম রেড গ্লুটিনাস ওয়াইন চিকেন। বোঝা গেলো সব খাবারের দাম ৫০ সেন্ট নয়। দু’টি ৫০ সেন্ট দিলেই যে এক ডলার হয় সেটি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তালপাতার মতো এক ধরনের পাতার ভেতরে খাবার মুড়ে আগুনের উপর গ্রিল করা হচ্ছে। এটা দেখতে বাংলাদেশে উপজাতি জনগোষ্ঠীর তৈরি পাতার পিঠার মতো।
এক পিসের দাম ৫০ সেন্ট এবং দুই পিস পাওয়া যাচ্ছে ১ ডলারে। এই খাবারটার নাম ওটাহ। বিক্রেতা যত্ন দিয়ে পাতাগুলোকে উল্টে পাল্টে নিচ্ছেন।
এখানে চায়নিজদের ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলো পরিবেশন করা হয়। যেমন পর্ক লেগ বি হুন। শূকরের মাংসের এ আইটেম এক ডলারে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া নুডলসের দোকান তো রয়েছেই। হাতে হাতে ঘুরছে খাবার। প্রায় দেড়শ মিটার লম্বা গলির শেষ প্রান্তে মঞ্চে চলছে গান। খাবারের সঙ্গে গান উপভোগ করছে মানুষ। এখানে সিঙ্গাপুরের চায়নিজদের উপস্থিতিই বেশি।
আর চায়নিজ যেহেতু বেশি সেখানে পানীয়ের জায়গা দখল করে নিবে বিয়ার এটাইতো স্বাভাবিক। তবে বিয়ারের দাম কিন্ত ৫০ সেন্ট নয়। তিন ডলার।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০১, ২০১৭
এমএন/এমএ