ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

খেলা

শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে খেলা হয়নি ৮ বছর

টি. এম. মামুন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৪
শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে খেলা হয়নি ৮ বছর ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বগুড়া: আট বছরের বেশি সময় ধরে কোনো খেলা হয়নি উত্তরাঞ্চলের একমাত্র আন্তর্জাতিকমানের ক্রিকেট ভেন্যু বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে।

বিদেশি পর্যবেক্ষকসহ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের একাধিক কর্মকর্তা এক সময় এই স্টেডিয়ামের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন।

তারপরও রাজনৈতিক প্রতিহিংসাসহ কিছু কারণে অনেকদিন ধরে কর্তৃপক্ষ এখানে খেলার আয়োজন করে না বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।

বগুড়ায় থাকার জন্য আন্তর্জাতিকমানের চার তার‍কা হোটেল, পর্যটন মোটেল ও একাধিক মানসম্পন্ন আবাসিক হোটেলসহ ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকার পরও এ মাঠে খেলা না হওয়ায় হতাশ উত্তরাঞ্চলবাসী।

উত্তরাঞ্চলের ক্রীড়ামোদী মানুষ এ মাঠে খেলা দেখার জন্য চেয়ে আছেন। অনেকদিন ধরে খেলা না হওয়ায় অযত্ম আর অবহেলায় স্টেডিয়াম কমপ্লেক্সের দেওয়ালসহ বিভিন্ন অংশ ধসে পড়েছে। ইনডোর ক্রিকেট ফ্যাসেলিটি ভবনের বেশকিছু অংশের কাচও ভেঙে গেছে। রঙ করা হয়নি অনেক দিন ধরেই।  

বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মাত্র ৮ মাস সময় নিয়ে ২০০৩-২০০৪ অর্থবছরে প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় বগুড়া শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম। ২০০৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া এ স্টেডিয়ামের উদ্বোধন করেন।

প্রায় ১৮ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন এ স্টেডিয়ামের গ্যালারি, প্রেসবক্স, প্যাভিলিয়ন গ্যালারি, ভিআইপি গ্যালারিসহ প্রয়োজনীয় সব কিছুই রয়েছে।

উদ্বোধনের কয়েক দিন পরই ১৫, ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি আইসিসি যুব বিশ্বকাপ ক্রিকেটের তিনটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় এ স্টেডিয়ামে। এতে অংশ নেয় অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলঙ্কা, জিম্বাবুয়ে ও কানাডা দল। মার্চে অনুষ্ঠিত হয়, জিম্বাবুয়ে ‘এ’ ক্রিকেট দল এবং বাংলাদেশ ‘এ’ ক্রিকেট দলের চার দিনের একটি ও এক দিনের ক্রিকেট ম্যাচ। এভাবে নিয়মিত খেলা চলতে থাকে এ ক্রিকেট ভেন্যুতে।

এরপর ২০০৬ সালের ৩০ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) বগুড়া শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যু হিসেবে ঘোষণা করে। ওই বছরেই দুটি এক দিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ ও একটি টেস্ট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। এ মাঠেই ২০০৬ সালে তিনটি ম্যাচে শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুইয়ে দলকে হারিয়ে জয়লাভ করে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল।

স্থানীয় ক্রিকেট সংশ্লিষ্টরা জানান, রাজশাহী ও রংপুর বিভ‍াগসহ উত্তরাঞ্চলের ১৬টি জেলার একমাত্র আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম বগুড়া শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম। অথচ এখানে খেলা হয়না।

তারা বলেছেন, সবকিছুকে রাজনৈতিকভাবে দেখা উচিত নয়।

রাজনৈতিক বিবেচনার বাইরে এসে দ্রুত বগুড়া শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক খেলা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।  

বগুড়া জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, এটা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বিষয়। তাই, এ বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না।

বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান মিলন জানিয়েছেন, শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে আর্ন্তজাতিক ক্রিকেট ম্যাচ আয়োজনের জন্য এর আগে কর্তৃপক্ষকে অনেকবার বলা হয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। তবে বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থা ক্রিকেট ম্যাচ আয়োজনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামের ভেন্যু ব্যবস্থাপক জামিলুর রহমান জামিল জানান, বিসিবি থেকে জানানো হয়েছে, বিমান যোগাযোগের সুবিধা না থাকায় বগুড়ায় আন্তর্জাতিক খেলার আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছে না।

বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৪ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।