ঢাকা: আব্দুল্লাহ হেল বাকি। বাংলাদেশের শ্যুটিংয়ে এক উজ্জ্বল নাম।
শ্যুটিংয়ে লাল-সবুজের এই দুর্দান্ত পারফরমার প্রথমবারের মত যাচ্ছেন ৫ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া রিও অলিম্পিকে। ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে একমাত্র বাকিই দেশের হয়ে লাল-সবুজের পতাকা তুলে ধরবেন রিও’র ওই শ্যুটিং রেঞ্জে।
আব্দুল্লাহ হেল বাকিই বাংলাদেশের একমাত্র অ্যাথলেট যার ওয়াইল্ড কার্ড নিশ্চিত হয়েছে সবার আগে। তবে এই ওয়াইল্ড কার্ড বা বিশেষ বিবেচনায় অলিম্পিকে অংশ গ্রহন করে তিনি তুষ্ট নন। তার সন্তুষ্টির মাত্রা পরিপূর্ণ হত যদি তিনি অলিম্পিকের কোটায় বা সরাসরি অংশ গ্রহন করতে পারতেন। ‘ওয়াইণ্ড কার্ড নয়, আমার লক্ষ্য ছিল সরাসরি অলিম্পিকে অংশ নেয়া। আমি যদি অলিম্পিকের কোটাপ্লেসে সব গুলো গেমসে অংশ নিতে পারতাম তাহলে এটা সম্ভব ছিল। সেখানে অংশ নেইনি বলে আমার আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমার পারফরম্যান্স যোগ হয়নি। সেই জন্য আমি পিছিয়ে গেছি ফলে আমাকে ওয়াইল্ড কার্ড নিয়ে যেতে হচ্ছে। ’
কেন আপনি অলিম্পিকের কোটা ভিত্তিক ওই গেমসে অংশ নিতে পারেনি? উত্তরে বাকি জানালেন, ‘এই ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। এটা শ্যুটিং ফেডারেশন ও অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন জানে।
সরাসরি অলিম্পিকে যেতে পারেননি বাকি। তারপরতো যাচ্ছেন। হোক না সেটা ওয়াইল্ড কার্ড বা বিশেষ বিবেচনায়। একজন ক্রীড়াবিদের জীবনে অলিম্পিকে অংশ গ্রহন কম কিসে? আর এই বিষয়টিই এই মুহূর্তে তাকে স্বান্তনা দিচ্ছে। ‘একক গেমস যেগুলো আছে সেই গেমসে প্রতিটি ক্রীড়াবিদেরই স্বপ্ন থাকে অলিম্পিকে অংশ গ্রহন করা। সেখানে ভালো ভাবে অংশ গ্রহন এবং দেশকে একটি ভাল ফলাফল এনে দেয়া। শুটিং শুরু করার পর থেকেই আমার স্বপ্ন ছিল অলিম্পিকে অংশ নেয়া। আমার সেই স্বপ্নটা বাস্তবে রুপ নিতে যাচ্ছে। ’
আর এই স্বপ্নকে সত্যি করতেই পুরো বছর জুড়ে প্রস্তুতি নিয়েছেন বাকি। ‘ছয়মাস যাবত ক্যাম্পে আছি। কোচের নির্দেশনা অনুযায়ী অনুশীলন করেছি। বেশ ভাল অনুশীলন হয়েছে বলবো। প্রস্তুতির কোন কমতি নেই। আমি সন্তুষ্ট। ’
অলিম্পিকের প্রস্তুতির কথা জানাতে গিয়ে বাকি আরও বলেন, ‘এ বছর একটা ওয়ার্ল্ডকাপ করেছি। সেটা ছিল জার্মানিতে। সেখানে আমার স্কোর ছিল ৬২৪.৮। পজিশন ছিল বিশ্বের মধ্যে ২৮। পরেরটা ছিল আজারবাইজানে যা কোটা হিসেবে নয় ছিল অলিম্পিকের প্রস্ততি হিসেবে। আর তার পরেরটা ছিল ব্রাজিলে। ’
এই পর্যন্ত আপনি সর্বোচ্চ কত স্কোর করেছেন। আর অলিম্পিকে পদকের দৌঁড়ে থাকতে হলে আপনাকে কত স্কোর করতে হবে বলে মনে করেন? উত্তরে বললেন, ‘আমি জাতীয় পর্যায়ে সর্বোচ্চ ৫৯৫ করেছি। এটা ছিল টার্গেট পেপারে। টার্গেট পেপারে স্কোর সর্বোচ্চ ৬০০ করাও সম্ভব। তবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সর্বাধুনিক এখন যেটা বের হয়েছে সেটা হলো মনিটরে হিট করতে হবে। এখানে বিশ্বে এই পর্যন্ত সর্বোচ্চ আছে ৬৩২ যেখানে আমার ব্যাক্তিগত সর্বোচ্চ হচ্ছে ৬৩১.৮। এটা অবশ্য অনুশীলনে। আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে আমি এ পর্যন্ত ৬২৪.৮ স্কোর করতে সক্ষম হয়েছি। তবে অলিম্পিকের ফাইনালে থাকতে হলে ৬২৭ স্কোর থাকেত হবে। আর এটাই আমার মূল লক্ষ্য। ’
দেশের জন্য পদক জয়ের ব্যাপারে কতটুকু আশাবাদী? এমন প্রশ্নের উত্তরে এই এয়ার রাইফেল স্পেশালিস্ট জানালেন, ‘দেশের জন্য কিছু করার ব্যাপারে আমি খুবই আশাবাদী। আমি সচারাচর যে পারফরম্যান্সটা করি সেটা যদি নির্ধারিত দিনে করতে পারি তাহলে নিঃসন্দেহে ওটা মেডেলের জন্যই লড়াই হবে। আমি যেন এটাই করতে পারি সেদিকেই জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। আসলে একজন অ্যাথলেট এটাই চায় দেশের জন্য কিছু করতে। আর সে জন্য আমি শতভাগ চেষ্টা করবো। ’
বাকি ২০১৪ সালে গ্লাসগোতে কমনওয়েলথ গেমসে রৌপ্য জিতেছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, ১৩ জুলাই, ২০১৬
এইচএল/এমএমএস