ঢাকা, শুক্রবার, ৩ মাঘ ১৪৩১, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬ রজব ১৪৪৬

খেলা

সিদ্দিকুরময় কুর্মিটোলা গলফ কোর্স

সাজ্জাদ খান, স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৪ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১৬
সিদ্দিকুরময় কুর্মিটোলা গলফ কোর্স ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর

গলফ কোর্স ঘুরে: কুর্মিটোলা গলফ কোর্সের প্রবেশদ্বারে রাখা একটি স্ট্যান্ডবোর্ড-তাতে লেখা ‘বেস্ট অব লাক সিদ্দিকুর রহমান, ২০১৬ রিও অলিম্পিক। ’ মূল ভবনের সঙ্গে ঝোলানো বিশাল আকৃতির ব্যানার, ক্যাফেটেরিয়ার সামনে আরও একটি স্ট্যান্ডবোর্ড।

এভাবে পুরো গলফ কোর্সই যেন হয়ে উঠেছে ‘সিদ্দিকময়’।

শুক্রবার (২২ জুলাই) ছুটির দিন হওয়ায় দেশি-বিদেশি গলফারদের পদচারণায় মুখর ছিল গলফ কোর্স। কারও চোখই এড়িয়ে যাচ্ছে না ওই ব্যানারগুলো। তাদের ক্লাবের সদস্যই তো যাচ্ছেন অলিম্পিকে। এটা ভেবে গর্বের কিছুটা ভাগীদার তারাও।

অলিম্পিকে অংশ নিতে যাওয়ার আগে অনুশীলনে ব্যস্ত ছিলেন সিদ্দিকুর। সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত অনুশীলনের পর বিশ্রাম নিতে বসেন গলফ কোর্সের ক্যাফেটেরিয়ায়। ক্লাবের দেশি-বিদেশি সদস্যরা সিদ্দিকুরকে শুভকামনা জানাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। সবার সঙ্গে ‍হাই-হ্যালো করতে হয় প্রায় ৩০ মিনিট ধরে। বিশ্রাম নেয়াই হলো না তার! তাতে অবশ্য মোটেও আফসোস নেই সিদ্দিকুরের।

বরঞ্চ মানুষের এই উৎসাহ, অভিবাদন অনেক বেশি প্রেরণা যোগাচ্ছে সিদ্দিকুরকে, ‘আমি অনেক বেশি প্রেরণা পাচ্ছি। এই যে দেখেন... সবাই আমাকে শুভকামনা জানাচ্ছে। আমি বলে বোঝাতে পারবো না যে এটা আমাকে কতটা উৎসাহ যোগাচ্ছে। আমি এমনটা কখনো চিন্তাও করিনি। গলফ ক্লাবের সবাই বেশ উ‍ৎসাহী এই ব্যাপারটা নিয়ে। এটা আবেগের একটা ব্যাপার। এই আবেগের সাথে যেন আমি মিশে যাচ্ছি। ’

মানুষের ভালোবাসায় তৈরি হওয়া এই আবেগটাকে খেলায় ইতিবাচকভাবে লাগাতে পারলে অলিম্পিকে অনেক ভালো কিছু হবে বলে বিশ্বাস দেশসেরা এই গলফারের, ‘এই আবেগটা যদি আমার খেলায় ইতিবাচকভাবে চলে আসে  আমি অনেক ভালো করতে পারবো। তবে এই আবেগটা যদি বিপরীত হয়ে যায় তাহলে ভালো করা মুশকিল। ’

আগামী ০৫ আগস্ট ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে শুরু হবে অলিম্পিক গেমস। গলফ ইভেন্ট ১১ থেকে ১৪ আগস্ট। তার আগে আগামী পরশু (২৪ জুলাই) থাইল্যান্ডে একটি টুর্নামেন্টে অংশ নেবেন সিদ্দিকুর।

০১ আগস্ট দেশে ফিরে সিদ্দিকুর ০২ আগস্ট রওয়ানা হবেন রিও ডি জেনিরার উদ্দ্যেশে। অলিম্পিকে যাওয়ার আগে থাইল্যান্ডের টুর্নামেন্টটিকে অলিম্পিকের প্রাক-প্রস্তুতি হিসেবে দেখছেন সিদ্দিকুর,  ‘এখানকার (কুর্মিটোলো গলফ কোর্স) নিরিবিলি পরিবেশে আমার প্রস্তুতি খুব ভালো হচ্ছে। এটাই যদি আমি ধরে রাখতে পারি...। থাইল্যান্ডের অপরিচিত গলফ কোর্সে আমি খেলতে যাচ্ছি। আগে কখনো খেলা হয়নি ওখানে। অলিম্পিকের আগে এটা আমার জন্য প্রি-টুর্নামেন্ট হয়ে যাচ্ছে। আমি যে প্রস্তুতি নিয়েছি আশা করি সেটা ওখানে অনেকটা প্রকাশ পাবে। ’

সিদ্দিকুর রহমানের সঙ্গে এবারের অলিম্পিকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন আরও ছয় জন। এরা হলেন-শুটার আবদুল্লাহ হেল বাকি, সাঁতারু মাহফিজুর রহমান সাগর ও সোনিয়া আক্তার টুম্পা, আরচ্যার শ্যামলী রায়, স্প্রিন্টার মেজবাহ আহমেদ ও শিরিন আক্তার। তারা সবাই ওয়াইল্ড কার্ডের মাধ্যমে সুযোগ  পেয়েছেন এবারের অলিম্পিক গেমসে। গলফার সিদ্দিকুর সরাসরি ডাক পেয়েছেন। তাইতো বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে রিওতে মার্চপাস্টে বাংলাদেশের পতাকা বহন করবেন সিদ্দিকুরই।

এমন ঘোষণা আসার পর সিদ্দিকুরের আনন্দ দ্বিগুন হয়ে গেছে,  ‘এটা আমার জন্য অনেক বড় একটা পাওয়া, আমি সরাসরি সুযোগ পেয়েছি। এটা ছিল প্রথম আনন্দের বিষয়। কিছু দিন পর  বাংলাদেশের পতাকাটা আমার হাতে দেয়া হবে-এটা শুনে আরও ভালো লাগছে। সবকিছু মিলিয়ে আমার ‍কাছে স্বপ্নের মতো লাগছে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ ঘণ্টা, ২২ জুলাই ২০১৬
এসকে/এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।