মারিয়া নয়, লেখা উচিত- ইয়াশনা। এ নামেই তো লোকজন আজকাল ডাকছে তাকে।
রীতিমতো টিভি পর্দা দখল করে রেখেছেন মারিয়া! পরিস্থিতি তো সে পরিসংখ্যানই দিচ্ছে। এখানেই ডটকমের বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজের সূত্রে মারিয়ার মুখখানা এখন মুখস্ত দর্শকদের। চলছে সিরিজের দ্বিতীয় বিজ্ঞাপনচিত্র। এ বছরের জুনে প্রচারে আসে প্রথমটি। তিনি জানালেন, ‘এই প্রতিষ্ঠানের পাঁচ-ছয়টি বিজ্ঞাপনচিত্র আসবে। কাজ শুরুর সময় তেমনই বলা হয়েছিলো আমাকে। ’ যার হাত ধরে তার এই সাফল্য, তিনি মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। ‘দুষ্টুমি করো না প্রিয়তম’ তারই নির্মাণ।
আশপাশে ঘন চা বাগান। মাঝখানে চলে গেছে এবড়ো-থেবড়ো সরু পথ। সেখানে দাঁড়িয়ে মারিয়া নাচছেন। পরনে তার লাল রঙের পোশাক। একটু দূরে তার স্বপ্নের নায়ক প্রতীক। আরও দূরে বাইনকুলারে চোখ রেখে ভিলেন হাতেম। মাথার ওপরে টিভি পর্দায় এমন দৃশ্য থেকে চোখ ফিরিয়ে মনোযোগ দেওয়া হলো মারিয়ার কথায়। বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে হোম সিরিজের তৃতীয় টেস্ট চলছে। উপলক্ষ এটাই- ‘ক্রিকেট এক্সট্রা’ নিয়ে জিটিভিতে মারিয়া। অনুষ্ঠান বিরতিতে মুঠোফোনে তার সঙ্গে আলাপ। তিনি বললেন, ‘বিজ্ঞাপনচিত্রটির জন্য ঢাকা-সিলেট মিলিয়ে মোট চার দিন কাজ করেছি। ওই সময়টায় চা বাগানে ভ্যাপসা গরম থাকে। ক্লান্তি লাগে। আমাকে আবার নাচতেও হবে। ফারুকী ভাই ‘অ্যাকশন’ বলে উঠতেই সব ক্লান্তি কোথায় যে পালাতো!’
চা বাগান ছাড়া দৃশ্যধারণ হয়েছে রাতারগুলেও। সিলেটের গোয়াইনঘাটে গুয়াইন নদীর দক্ষিণে এই বন। বাংলাদেশের একমাত্র জলাবন। এ জায়গাটির পরিচিতি আছে ‘সোয়াম্প ফরেস্ট’ কিংবা ‘বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য’ হিসেবেও। নিচে টলমলে পানি, ওপরে সবুজ ছাউনি নিয়ে ঘন ডালপালা। চারপাশে শুধু নির্জনতা, নিস্তব্ধতা। এমন পরিবেশে থাকলে মুগ্ধতা বেড়ে যায়। মারিয়ার জন্য তাই ছোটখাটো চ্যালেঞ্জ ছিলো। প্রকৃতির মুগ্ধতা একপাশে সরিয়ে ইয়াশনা হয়ে ওঠার চ্যালেঞ্জ।
মারিয়া বলছেন, ‘শুটিংয়ে আমরা প্রচুর মজা করতাম। ফারুকী ভাই এমনিতে মজার মানুষ। সংলাপগুলো নিজে অভিনয় করে বলে দিতেন। আমার নাচের দৃশ্য নেওয়ার আগে, তিনি নেচে দেখিয়ে দিয়ে বলতেন- আমার এমনটাই চাই। ইরেশ ভাইও কম রসিক নন। সুতরাং হাসতে হাসতেই কাজ হয়ে গেছে। ’
বিজ্ঞাপনচিত্রটি নাকি চলচ্চিত্রের অফারও বয়ে এনেছে মারিয়ার দুয়ারে। খুব ভালো কথা। কিন্তু তার কি জবাব? কাজ করবেন ছবিতে? কৌশলী মারিয়া, কৌশলী তার জবাবও, ‘উপস্থাপনা নিয়েই যা ব্যস্ততা! আরও কিছু বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজের কথা চলছে। ছবির ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করবো, সে সময় কোথায়!’
মারিয়ার পরিচিতি উপস্থাপিকা হিসেবেই। ২০০৯ থেকে টানা চার বছর এফএম রেডিওতে আরজে ছিলেন। তারপর টিভি পর্দায়। সেখানেও উপস্থাপনাই কাজ। ২০১২ সালে চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের একটি অনুষ্ঠান দিয়ে শুরু করলেন। টিভি অনুষ্ঠানের চাপে রেডিও ছেড়েছেন বেশ আগে। আরজে মারিয়া এখন টিভি অনুষ্ঠানের, বিজ্ঞাপনের, নাটকের। তিনি যে অভিনয়ও করছেন, সেটাই তো বলা হলো না এখনও। মাবরুর রশীদ বান্নাহর ‘ইট ক্যান হ্যাপেন’-এ ছিলেন, কাজ করেছেন ‘কবিতার নারী, অকবিতার নারী’তেও। শেষটা গোলাম মুক্তাদিরের পরিচালনা। এখন সময় দিচ্ছেন রেদোয়ান রনির ‘ঝালমুড়ি’ ধারাবাহিকে। তার কথায়, ‘অভিনয়ের ব্যাপারে এখন একটু একটু করে ভাবছি। ’
বাংলাদেশ সময় : ১৫০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৪