ঢাকা, বুধবার, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৫ মে ২০২৪, ০৬ জিলকদ ১৪৪৫

তারার ফুল

নাচ এমনও হয়!

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০১৫
নাচ এমনও হয়! ছবি: নূর /বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সাদা শার্ট, কালো কোট-প্যান্ট পরা এক মধ্যবয়সী লোক। গান শোনাতে চীন থেকে উড়ে এসেছেন ঢাকায়।

হলভর্তি লোক সামনে রেখে তিনি গাইছেন- ‘আমি চিনি গো চিনি তোমারে ওগো বিদেশিনী’। ভাঙা ভাঙা উচ্চারণ, কিন্তু অদ্ভুত সুন্দর গায়কী। এই চীনা শিল্পীর কণ্ঠে গানটি ভিন্ন দ্যোতনা পেলো যেন!


হাততালি তাই থামে না আর। মিলনায়তনজুড়ে হুলস্থূল করতালির শব্দ গানকেও নিষ্প্রভ করে দেয় মাঝে মধ্যে। ২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় এমনই কিছু আশ্চর্য সুন্দর দৃশ্যের জন্ম হয়েছিলো বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীতে। এবং পরদিনও। ৪ ফেব্রুয়ারি এসব দৃশ্যের সমাহার হল থেকে বেরিয়ে ছড়িয়ে পড়েছিলো খোলা মাঠে। আর্মি স্টেডিয়ামেও দর্শকদের চোখ জুড়িয়েছে এগুলো।

এসব মুগ্ধতা ছড়াতে ঢাকায় এসেছিলো গানসু অপেরা হাউস। এটি চীনের নাচ-গান-জাদুর দল। তিনটি প্রদর্শনী করতেই তাদের এই সফর। দু’টি শিল্পকলায়, একটি আর্মি স্টেডিয়ামে। বাংলাদেশ-চীন ফ্রেন্ডশীপ সেন্টার, বাংলাদেশস্থ চীন দূতাবাস ও শিল্পকলা একাডেমী মিলেমিশে করেছিলো আয়োজনটি। উপলক্ষ হিসেবে সামনে ছিলো একটি সংখ্যা- ৪০। বাংলাদেশ ও চীনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ৪০ বছর উদযাপন করতেই গানসু অপেরা হাউসের এ পরিবেশনা- ‘ডানহুয়াং মেলোডি : চার্ম অফ দ্য সিল্ক রোড’।

প্রথমে কিছুক্ষণ আলোচনা পর্ব ছিলো। এরপর অন্ধকার মঞ্চে হঠাৎ আলো ছড়ায় একদল মেয়ে। হাতে বাদ্যযন্ত্র নিয়ে দেখায় শৃঙ্খলিত মুদ্রার বিষ্ফোরণ।

এরপর খানিকটা চমকিত হওয়ার মতো ঘটনা। যে উপস্থাপিকা অনুষ্ঠানের শুরু থেকে মিষ্টি হেসে চীনা ভাষায় ঘোষণা দিচ্ছিলেন, তিনি মঞ্চের মাঝামাঝি দাঁড়ালেন। নাম ঘোষণা করতে নয়, গাইতে। পরপর দু’টি গান করলেন তিনি। দর্শকদের কেউ কেউ উজ্জল চোখমুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে পাশের জনের কানে কিছু একটা পৌঁছে দিলেন। শুনে শ্রোতাও দোলালো মাথা। হয়তো কথার বিষয় ছিলো- মেয়েটির গান। হয়তো বলেছিলেন এমন- অদ্ভুত গায় তো!

মেয়েটি যখন গানের মাঝামাঝি- সজ্জাঘরে তখন প্রস্তুত আরও একদল মেয়ে। পরনে উজ্জল সাদা পোশাক। নৃত্যের তালে তালে জমিয়ে গেলো তারাও।

শুধু নাচ-গানেই মুগ্ধতা নয়, মুগ্ধতা ছিলো জাদুতেও। মঞ্চে এলেন জাদুকর, সঙ্গে দুই কিশোরী। ছোট ছোট ম্যাজিক দেখিয়ে জিতে নিলেন অজস্র করতালি।

রাত সাড়ে ৭টা থেকে সাড়ে ৯টা- এ স্বল্প সময়ে গানসু দেখিয়ে ফেললো ১৪টি পরিবেশনা। মাঝে অ্যাক্রোবেটিকস ছিলো, বাদ্যযন্ত্র পরিবেশনা ছিলো। তবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় পরিবেশনা ‘থাউজেন্ড হ্যান্ড কুয়ান-ইন’। নৃত্য দিয়েও যে ইলুশন তৈরি করা যায়, পরিবেশনাটি তার অন্যতম উদাহরণ। সামনে হাস্যোজ্জল দেবী। পেছনে দেবীর অজস্র হাত। হাত ঢেউ তোলে, লুকায়, প্রকাশিত হয়।

২ ও ৩ ফেব্রুয়ারি গানসু অপেরা হাউস যে তৃপ্তি দিয়ে গেলো শিল্পকলা একাডেমীর দর্শকদের, পরদিন আবার আর্মি স্টেডিয়ামের দর্শকদের; সে তৃপ্তির স্বাদ বহু বছর লেগে থাকতে বাধ্য। পরিবেশনা শেষে হল থেকে বেরুতে বেরুতে মনোযোগ গেলো কয়েকজন দর্শকের কথায়- ‘নাচ এমনও হয়!’



















































বাংলাদেশ সময় : ১৮৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

তারার ফুল এর সর্বশেষ