ঢাকা, শনিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ মে ২০২৪, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

তারার ফুল

ডাব্বুর সঙ্গে কিছুক্ষণ

‘বাংলাদেশ আমাকে মুক্তভাবে কাজ করতে দিয়েছে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০১৫
‘বাংলাদেশ আমাকে মুক্তভাবে কাজ করতে দিয়েছে’ ডাব্বু/ ছবি: নূর- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ডাব্বু। ওপার বাংলার ছেলে।

দুই বছর আগে ওপার বাংলার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের ‘বাঙালি বাবু ইংলিশ মেম’ ছবির মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে সংগীত পরিচালনায় অভিষেক হয় তার। এর ‘হানি বানি’, ‘হাওয়ারা চুপি চুপি’, ‘দোল দুলুনি’ এবং ‘ওরে মন উদাসী’ গানগুলো শ্রোতামহলে সাড়া ফেলে। ফলে এক ছবিতেই জনপ্রিয় গান তৈরির মেশিন বনে গেছেন তিনি!

ডাব্বুর সুরে ‘জামাই ৪২০’ ছবির ‘ঢিচকিয়াও’ গানটিও জনপ্রিয়তা পেয়েছে। মুক্তি প্রতীক্ষিত যৌথ প্রযোজনার ছবি ‘ব্ল্যাক’-এর দুটি গান তার তৈরি করা। এর মধ্যে ‘হালকা হালকা’র ভিডিও দেখা হয়েছে লাখ বারেরও বেশি। সোহমের সঙ্গে এতে অভিনয় করেছেন এপারের বিদ্যা সিনহা মিমও।

ডাব্বু শুধু ওপারে নয়, এপারের ছবিতেও কাজ করছেন। শামীম আহমেদ রনি পরিচালিত ‘মেন্টাল’ ছবির শিরোনাম-গান, ‘প্রেমটা তোদের নেশা’, ‘মন নাজেহাল’, ‘খাইনা জনাব’, ‘উড়েছে ধূলো’ গানগুলো তার সুর করা। তবে এগুলোকে ছাড়িয়ে গেছে মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ পরিচালিত ‘সম্রাট’ ছবির শিরোনাম-গান। এটিও ইউটিউবে দেখা হয়েছে লাখ বারেরও বেশি।  ৩৬ বছর বয়সী এই সংগীত পরিচালক তাই আছেন খোশমেজাজে। বাংলানিউজের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেছেন তিনি।

বাংলানিউজ : ‘সম্রাট’ গানটি নিয়ে বলুন।
ডাব্বু : ইউটিউবে গানটার হিট লাখের ঘর পেরিয়েছে, এটা সত্যি অভূতপূর্ব। এজন্য ধন্যবাদ পরিচালক মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজকে। তিনি আমার ওপর আস্থা রেখেছেন। এটাই তার ছবিতে আমার প্রথম কাজ। এ গানের রেকর্ডিং হয়েছে মুম্বাইয়ে। এটি গেয়েছেন শত্রুজিৎ দাশগুপ্ত, লিখেছেন জনি হক। সম্রাটের কাজ করার আগে ‘মেন্টাল’ ছবির ছ’খানা গান করলাম।

বাংলানিউজ : এপারের ছবিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন?
ডাব্বু : সত্যি কথা বলতে, বাংলাদেশের ছবিতে কাজ করতে এসে স্বাধীনতা বেশি পেয়েছি। বিশ্বসংগীতের চলমান ধারা মাথায় রেখে আমি যে ধরনের ট্র্যাক বানাতে চাই, এখানকার নির্মাতারা আমাকে এ ক্ষেত্রে পুরো স্বাধীনতা দিয়েছেন। এদিক দিয়ে কলকাতার চেয়ে বাংলাদেশে কাজ করে আমি অনেক গুণ বেশি খুশি। কলকাতায় যেমন একটা গান করার কথা চূড়ান্ত হলে বলে দেওয়া হয়- ‘এভাবে করতে হবে, ওভাবে করতে হবে। ’ সুর করার জায়গা থেকে বাংলাদেশই আমাকে মুক্তভাবে কাজ করতে দিয়েছে।   

বাংলানিউজ : নতুন কী কী গান আসবে সামনে?
ডাব্বু : ‘পাগলু’র পরিচালক রাজীবের পরের ছবি ‘ক্রাইম’-এর গান তৈরি করেছি। এতে বাংলাদেশের পড়শী আমার সুরে একটি বিরহের গান গেয়েছেন। এ ছাড়া ‘ব্ল্যাক’ ছবির একটি আইটেম গানও বের হবে সামনে। এটি গেয়েছেন আকৃতি কাক্কার। ‘ব্ল্যাক’-এর শান ও অন্বেষার গাওয়া ‘হালকা হালকা’ নিয়ে দারুণ সাড়া পাচ্ছি।

বাংলানিউজ : অডিও অ্যালবামের মিউজিক করেছেন?
ডাব্বু : একটা সময় অডিওতে প্রচুর কাজ করেছি। বাবুল সুপ্রিয়, অলকা ইয়াগনিক, শানের অ্যালবামে কাজ করেছি। এর মধ্যে রবীন্দ্রসংগীতও ছিলো। এসব অভিজ্ঞতা থেকেই এতোদূর আসার স্বপ্ন তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া কলকাতায় অনেক ছবির আবহসংগীতে কাজ করেছি।

বাংলানিউজ : কোনো ব্যান্ডে আছেন?
ডাব্বু : কলকাতার ইংলিশ রক ব্যান্ড হিপপকেটে বাজাই। এটা আমার মনের খোরাক। কারণ আমি রক, জ্যাজ ও ব্লুজ শিখেছি। এটা আমার আত্মতৃপ্তির জায়গা। এ ছাড়া ফিউশন ও রক শো করতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কনসার্টে অংশ নিয়েছি।

বাংলানিউজ : আপনার গানের বৈশিষ্ট্য কী?
ডাব্বু : আমার নিজস্ব একটা স্টাইল আছে। আমি যখন গান বানাই তখন সেই স্টাইলটা ধরে রাখি। বিশেষ রেফারেন্স শুনে গান বানাই না। আর মানের ব্যাপারে আপোস করি না। মুম্বাইয়ের সেরা প্রোগ্রামারকে দিয়েই আমার সব গানের কাজ করাই।

বাংলানিউজ : নিজের সুরে গেয়েছেন?
ডাব্বু : এখনও গাইনি। তবে ইচ্ছে আছে। হয়তো আগামীতে কোনো ছবিতে আমার সুরে আমারই কণ্ঠ শুনবেন।

বাংলানিউজ : ছোটবেলায় কি হতে চেয়েছিলেন?
ডাব্বু : সংগীতশিল্পীই হতে চেয়েছিলাম। তিন-চার বছর বয়স থেকে আমি গিটার বাজাই। ১৮-১৯ বছর থেকে গিটারশিল্পী ও অ্যারেঞ্জার হিসেবে ভারতীয় সংগীতে কাজ করেছি। এরপর মুম্বাইয়ে গিয়ে প্রীতম চক্রবর্তী ও বিশাল-শেখরের গানের প্রোগ্রামিং করতাম, গিটার বাজাতাম। তারপর আস্তে আস্তে মনে হলো, সংগীত পরিচালক হিসেবে এককভাবে কাজ করা উচিত। এরপর কলকাতায় শুরু হলো কাজ।

বাংলানিউজ : আপনার লক্ষ্য কি বলিউড?
ডাব্বু : হ্যাঁ। বলিউডের ছবিতে কাজ করার কথাবার্তা চলছে। তবে বলিউডে এখনকার সবচেয়ে জনপ্রিয় গায়ক অরিজিৎ সিং এরই মধ্যে আমার সুরে গেয়েছেন। তার গাওয়া বিরহের গান ‘ওরে মন উদাসী’ জনপ্রিয়ও হয়েছে। ওর সঙ্গে নতুন ধরনের সংগীত নিয়ে কাজ করার ইচ্ছে আছে।

বাংলানিউজ : সংসারের খবর বলুন।
ডাব্বু : ভালো চলছে। আমার এক ছেলে। নাম রিমো। ওর বয়স পাঁচ বছর। ও আমার গান নিয়ে পছন্দ-অপছন্দের জায়গা দেখায়, কথাবার্তা বলে। ও যখন অন্যমনস্ক হয়ে একটা গানে গেয়ে ফেলে, তখন বুঝে ফেলি এটা হিট হবে! যেমন ‘হানি বানি’ যখন আমি গিটার বাজিয়ে শোনার পর গেয়েছিলো ও, বুঝেছি এটা হিট হবে। হয়েছেও!

 

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০১৫
জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

তারার ফুল এর সর্বশেষ