শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) মুক্তি পেয়েছে ‘ডুব’খ্যাত এই অভিনেত্রীর অষ্টম সিনেমা ‘মায়াবতী’। অরুণ চৌধুরী পরিচালিত সিনেমাটি একযোগে সারাদেশে ২২টি প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত হচ্ছে।
বাংলানিউজ: ‘মায়াবতী’ নিয়ে কিছু বলুন...
নুসরাত ইমরোজ তিশা: ‘মায়াবতী’র গল্প মায়া দিয়ে ঘেরা। ‘না মানে না’, প্রত্যেক মানুষের না বলার অধিকার আছে এবং সেই ‘না’কে সবার সম্মান করা উচিত। এই মেসেজটার উপর ভিত্তি করেই মূলত ‘মায়াবতী’ নির্মাণ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি সিনেমাটিতে গান, নাচ, ভালোবাসা এবং সংঘাতও দর্শক দেখতে পাবেন। আমি চাই দর্শকরা প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে সিনেমাটি দেখুন। তাহলেই সিনেমাটি সম্পর্কে বুঝতে পারবেন।
বাংলানিউজ: ‘মায়াবতী’র প্রচারণায় কেমন সময় দিচ্ছেন?
নুসরাত ইমরোজ তিশা: আমার প্রত্যেক সিনেমা মুক্তির আগেই আমি প্রচারণায় অনেক সময় দেই। একটি ভালো সিনেমা আসছে, সেটা যদি মানুষ না জানে তাহলে তো তারা প্রেক্ষাগৃহে আসবেন না।
বাংলানিউজ: ২২টি প্রেক্ষাগৃহে ‘মায়াবতী’ মুক্তি পেয়েছে। প্রেক্ষাগৃহ সংখ্যা কম হয়ে গেলো না?
নুসরাত ইমরোজ তিশা: আমরা প্রেক্ষাগৃহ কম পেয়েছি বললে ভুল হবে, আমরা কম নিয়েছি। আমাদের পরিচালকই চেয়েছেন প্রেক্ষাগৃহ কম দিয়ে শুরুটা করতে। এইটুকু আমি জানি। তবে প্রেক্ষাগৃহ বেশি পেলেই যে সিনেমা অনেক বিখ্যাত হবে, এমনটি আমি বিশ্বাস করি না। আমি বিশ্বাস করি একটা ভালো গল্প থাকলে সিনেমাটি অনেক বেশি বিখ্যাত হবে বা অনেক বেশি মানুষের কাছে যাবে। বাংলানিউজ: সিনেমাটিতে ইয়াশ রোহান আপনার বিপরীতে কাজ করেছেন। তিনি আপনার অনেক জুনিয়র। তার সঙ্গে কাজ করে কেমন লেগেছে?
নুসরাত ইমরোজ তিশা: ওর সঙ্গে কাজ করে অনেক ভালো লেগেছে। ও অভিনয় প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ করতে এসেছে। ইয়াশের বাবা একজন বিখ্যাত পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার (নরেশ ভূঁইয়া) এবং তার মা একজন ভালো অভিনেত্রী (শিল্পী সরকার অপু)। তাই ইয়াশের অভিনয় নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। তবে একজন মানুষ হিসেবে সে অনেক ভালো। কাজ করে আমার খুব ভালো লেগেছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, বাদাম খেতে খেতে আমাদের শুটিংয়ের কাজ যে কখন শেষ হয়ে গেছে, আমরা কেউই তা টের পাইনি। এখন আমরা দু’জন খুব ভালো বন্ধু।
বাংলানিউজ: সিনেমাটির জন্য আপনাকে দৌলতদিয়ার রেড লাইট এরিয়াতে শুটিং করতে হয়েছে। সে অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
নুসরাত ইমরোজ তিশা: এর আগেই দৌলতদিয়া আমি শুটিং করেছি। এবার তৃতীয়বারের মতো কাজ করলাম। সেখানে কাজ করে অবশ্যই খুবই ভালো অভিজ্ঞতা। আসলে দৌলতদিয়া নিয়ে অনেকে অনেককিছু মনে করেন। কিন্তু বিষয়টি তেমন না। তারা (যৌনকর্মী) খুব সাধারণ আর দশজন মানুষের মতোই। অন্যদের মতো তারাও একটা কাজের মধ্যে থাকে, হয়তোবা তাদের কাজের ধরনটা অনেক ভিন্ন। আমাদের শুটিং অনেকদিন ধরে সেখানে করা সম্ভব হয়েছে কেবল তাদের সমর্থন ও সহযোগিতার কারণেই। ‘মায়াবতী’ তাদের উৎসর্গ করা উচিৎ। কারণ তারা সমর্থন না দিলে আসলে এতো সুন্দর করে সিনেমাটি করা সম্ভব হতো না।
বাংলানিউজ: আপনি সিনেমাটিতে মায়া চরিত্রে অভিনয় করেছেন। চরিত্রটি করতে দৌলতদিয়াবাসীর ভূমিকা কেমন ছিল?
নুসরাত ইমরোজ তিশা: অবশ্যই তাদের অনেক ভূমিকা আছে। শুধু তাদের নয়, আমার পুরো ইউনিটের ভূমিকা আছে। চরিত্রটি করতে গিয়ে একাই যে আমাকে প্রস্তুতি নিতে হয়েছে বিষয়টি তা নয়। আমার পরিচালক থেকে শুরু করে সহশিল্পী এবং পুরো টিম যদি আমাকে সাহায্য না করতো, তাহলে চরিত্রটি রূপদান করা সম্ভব ছিল না। দৌলতদিয়াবাসীর সাপোর্ট অনেক ছিল। তাদের পরিবেশে শুটিং হওয়ার কারণে আমার চরিত্রে ঢুকতে খুব সুবিধা হয়েছে। বাংলানিউজ: অরুণ চৌধুরীর সঙ্গে কাজ করে কেমন লেগেছে?
নুসরাত ইমরোজ তিশা: তিনি একজন সিনিয়র পরিচালক। অবশ্যই সিনিয়র পরিচালকদের সঙ্গে সবসময় কাজ করতে ভালো লাগে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে উনি সিনিয়র পরিচালক বলে যে আমার কোনো কথা শোনেননি, এমনটি কিন্তু নয়। আমাদের মধ্য খুব ভালো শেয়ারিং ছিল। যখন যেটা শেয়ার করেছি উনি তা বিবেচনা করেছেন এবং সে অনুযায়ী চেষ্টা করেছেন যুক্তিসঙ্গতভাবে যতটুকু করা যায়। তিনি খুব ভালো এবং আন্তরিক একজন পরিচালক।
বাংলানিউজ: দর্শকের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন।
নুসরাত ইমরোজ তিশা: দর্শকদের প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে সিনেমা দেখতে হবে, তারা যদি সিনেমা বাঁচাতে চায়। কারণ সিনেমা বানানোই হয় দর্শকদের জন্য। প্রথমত প্রেক্ষাগৃহে এসে দর্শকদের সিনেমা দেখতে হবে। দ্বিতীয়ত, ‘মায়াবতী’ দেখতে হবে, কারণ সিনেমাটি দেখা উচিৎ। এটি দর্শকদের জন্য এবং তারা সিনেমাটিতে নিজেদের খুঁজে পাবেন, মেসেজসহ সুন্দর একটি গল্পও দেখতে পাবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৯
জেআইএম/এইচএ/