ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পর্যটন

রোদেলা বিকেলে দেড় কেজি রূপচাঁদায় নৈশভোজ

আসিফ আজিজ, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২২ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৬
রোদেলা বিকেলে দেড় কেজি রূপচাঁদায় নৈশভোজ ছবি: আসিফ আজিজ/বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম থেকে: চট্টগ্রামে এসে অভিজাত রেস্টুরেন্ট রোদেলা বিকেলে একবেলা না খেলে যেন অপূর্ণ থেকে যায় খাওয়া-দাওয়া। মেন্যু সব চাটগাঁইয়া না হোক বিভিন্ন এলাকার ট্রেডমার্ক তাজা মাছ, সবজি, ডিম, মাংস মেলে এখানে।

 

তবুও দেড় কেজি ওজনের ঢাউস সাইজের রূপচাঁদার দেখা পাবো এটা আশা করিনি। এটা ছিলো রেস্টুরেন্টটির সত্বাধিকারী রফিকুল বাহারের সারপ্রাইসজ। এ বাণিজ্য নগরীর কাজির দেউড়ি বাজারের সবচেয়ে বড় মাছটি কেনার নাম তার বরাবরই। রান্না মসলা ব্যবহারের ক্ষেত্রেও তিনি সম্মিলন ঘটান বিদেশের নানান অভিজ্ঞতা। এই রেস্টুরেন্টে তার অনেক অভিজ্ঞতা একীভূত হয়েছে এডিটর ইন চিফের অভিজ্ঞতার সঙ্গে।

স্পেশাল ম্যাংগো লাচ্ছি, পুদিনা, অরেঞ্জ জুসের পর আলুভর্তা, ডাল আর বাঁশখালীর বিখ্যাত মুরগি পাতে নিয়েই যখন তুষ্টি তখন ওয়েটার হাজির সুন্দর ডেকোরেশন করা রান্না রেডি রূপচাঁদা। রূপচাঁদা এতো বড়!

 

কাছেই ছিলেন রফিকুল বাহার। কথা টেনে বললেন, এটা আসলে চায়নিজ রূপচাঁদা। সচরাচার এটি পাওয়া যায় না। পাওয়া গেলেও খুব কম। সব চলে যায় বাইরের দেশে। কিন্তু মাছটির স্বাদও ভিন্ন। আর আমরা এটির রান্না করি কানাডিয়ান ক্যানোলা অয়েল, ক্যাপসিকাম, বিভিন্ন ইন্ডিয়ান মসলা দিয়ে প্রস্তুত করি। তবে মসলা যে খুব বেশি ব্যবহার হয় তা না।

ওয়েটার বিশাল মাছটি কেটে যখন সবার পাতে ভাগ করে দিলেন তখন বোঝা গেলো উনি যা বলেছেন মাছটি বোধহয় তার চেয়ে একটু বেশিকিছু। খুব স্বাদী, কাঁটাও খেয়ে ফেলা যায় চিবিয়ে।

সন্ধ্যা থেকে কাজির দেউড়ি রোডের মাথায় এমএ আজিজ স্টেডিয়াম ঘেঁষা এ রেস্টুরেন্টে জায়গা মেলাই কঠিন। যারা ভালো ভিন্ন স্বাদ ও নিরাপদ খাবার খেতে চান তারা ভিড় জমান এখানে। সাদা গ্লাসের বাইরে দিয়ে রাস্তা থেকেই দেখা যায় এর রসুঁইঘর। তাই মান, পরিচ্ছন্নতা নিয়ে ভাবতে হয় না ভোক্তাদের।  

বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ, দেশি জ্যান্ত মাছ, বাঁশখালীর দেশি মুরগি, কুষ্টিয়ার খাসি, মিরসরাইয়ের দেশি গরু, হাতিয়ার হাঁস থাকে এখানকার প্রতিদিনের মেন্যুতে। এছাড়া সকাল, দুপুর, বিকেল, রাতের অলাদা আলাদা সব মেন্যু তো আছেই। আর এসব মনোরম নিরিবিলি পরিবেশে স্টেডিয়ামের মাঠে চোখ রেখেই খেতে পারেন সবাই।

এখানে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় থেকে শুরু করে দেশবরেণ্য কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, অভিনেতা, রাজনীতিক সবাই খেয়েছেন, চট্টগ্রাম এলে খেতে আসেন বলে জানালেন রফিকুল বাহার।

রোদেলা বিকেলের নতুন সংযোজন মিষ্টি। নতুন এ আয়োজনের নাম রাখা হয়েছে- প্লাটিনাম সুইটস।  এখানের মিষ্টিতেও আনা হয়েছে খাবারে মতো স্বতন্ত্রতা। রসমালাই, রসগোল্লা, ছানার জিলাপি, রাজভোগ, নলেন গুড়ের সন্দেশসহ কয়েকপদের মিষ্টি পাওয়া যায় এখানে। ভিন্নতা আনতে ব্যবহার করা হয় আল্পস পর্বত থেকে নামা বোতলজাত পানি, বিশেষ চিনি, গেরস্থের ঘরের খাঁটি দুধ। মিষ্টিতে সর্বশেষ সংযোজন জাফরান। তাই দাম কেজিপ্রতি ১ হাজার থেকে ১২শ হলেও চাহিদার কমতি নেই। দেশের মিষ্টি জগতেও ভিন্নতা এনেছে চট্টগ্রামের নজরকাড়া এ রেস্তোরাঁটি।

চাইলে আগে থেকে মেন্যু অর্ডার করে, বুকিং রেখেও চলে আসতে পারেন। সময় যখনই হোক ভালোই কাটবে রোদেলা বিকেলে।

বাংলাদেশ সময়: ১০১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৬
এএ/এসএনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।