জেলা প্রশাসকের (বান্দরবান) সম্মেলন কক্ষ থেকে: পর্যটনের বিকাশে বান্দরবান জেলা প্রশাসন অত্যন্ত আন্তরিক জানিয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) দিলীপ কুমার বণিক বলেছেন, বান্দরবানে এখন যেসব পর্যটন স্থাপনা তৈরি হয়েছে, বেশিরভাগই জেলা প্রশাসন স্থাপিত।
‘এখন অনেক সরকারি-বেসরকারি পর্যটন স্থাপনা হচ্ছে।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি তিন পার্বত্য জেলার পর্যটন সম্ভাবনা নিয়ে শুক্রবার (২১ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টায় বান্দরবান জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বাংলানিউজের বিশেষজ্ঞ আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।
আলোচনায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, বিশেষজ্ঞ, স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা অংশ নিয়েছেন।
সরকার ঘোষিত ‘পর্যটন বর্ষ-২০১৬’ এর শুরু থেকে বাংলানিউজের ‘বছরজুড়ে দেশ ঘুরে’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কক্সবাজার ও বৃহত্তর সিলেটে পর এবার ‘পাহাড়ে পর্যটন’ শীর্ষক এই আলোচনা হচ্ছে।
দিলীপ কুমার বণিক বলেন, পার্বত্য ৩ জেলার মধ্যে বান্দরবান ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এই জেলা দেশের সেরা পর্যটন স্পট হয়ে উঠছে। প্রশাসন এ ব্যাপারে অত্যন্ত আগ্রহ সহকারে কাজ করছে।
তিনি বলেন, পর্যটনের সম্ভাবনা নিয়ে কাজের বিষয়ে বাংলানিউজ যখন প্রস্তাব দিলো। আমরা আগ্রহ সহকারে এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে এগিয়ে এলাম।
জেলা প্রশাসক এ সময় কিছু পর্যটন স্থাপনা নির্মাণ এবং দারিদ্র্য দূরীকরণ ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে কিছু পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।
তিনি জানান, পর্যটনের বিষয়ে প্রশাসন এতো আন্তরিক যে জেলা প্রশাসকের বাসভবনও নৈসর্গিক সৌন্দর্যের প্রতীক হয়ে উঠেছে।
তিনি বান্দরবানের শৈলপ্রপাত, চিম্বুকসহ অন্যান্য পর্যটন স্পটের উন্নয়নে পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন। তিনি জানান, জেলা প্রশাসন ইউএনওদের বলে দিয়েছে, পর্যটনের বিকাশে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখতে হবে।
জেলা প্রশাসক বলেন, আমরা উপজেলার ইউএনওদের সঙ্গে কথা বলে কাজ করছি। এমনকি স্থানীয় তরুণদের নিয়ে গাইডিং কার্যক্রমেরও ব্যবস্থা করেছি। তাদের কীভাবে পর্যটকদের সেবা করতে হয় সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছি।
পর্যটনের বিকাশে আইন-কানুনও শিথিল করা হয়েছে জানিয়ে দিলীপ কুমার বণিক বলেন, সবাই জানেন, এ জেলা নানা দিক থেকে অত্যন্ত স্পর্শকাতর। তবু পর্যটকরা যেন সহজে এখানে আসতে আগ্রহী হোন, সেজন্য আমরা সার্বিক উদ্যোগ নিয়েছি।
তিনি পাহাড়ি নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর ব্যাপারে বলেন, এখানে ১১টি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী বসবাস করেন। এখন তারা ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী বলার চেয়ে পাহাড়ি ডাকলেই খুশি হন বেশি। সুতরাং উপজাতি ডাকাটা বর্জন করতে হবে।
দিলীপ কুমার বণিক পর্যটনের বিকাশে জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের কথাও উল্লেখ করেন।
দুই দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানের প্রথম দিন শুক্রবার পাহাড়ের জীববৈচিত্র্য, ঝরনা-লেক আর সবুজে ঘেরা বান্দরবানসহ তিন পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটির অবারিত সৌন্দর্য উন্মোচনের পাশাপাশি বাংলানিউজ কর্মীদের করা বিভিন্ন প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
আলোচনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. শাকের আহমদ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক জহির বিন আলম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মহিবুল্লাহ ও হিয়ামুল ইসলাম, সরীসৃপ বিশেষজ্ঞ শাহরীয়ার সিজার রহমান অংশ নিয়েছেন।
আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন বান্দরবান পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করছেন বাংলানিউজের এডিটর ইন চিফ আলমগীর হোসেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত আছেন-বান্দরবান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল কুদ্দুস, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) দিদারে আলম মো. মাকসুদ চৌধুরী, নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) হোসাইন মুহাম্মদ আল-মুজাহিদ, জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার চৈতী সর্ববিদ্যা, মো. আবদুল্লাহ আল মামুন, নাহিদা আক্তার তানিয়া, পর্যটন পুলিশের পরিদর্শক সুহৃদ চাকমাসহ পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলানিউজের এ উদ্যোগে সহযোগিতা করছে বেসরকারি উড়োজাহাজ পরিবহন সংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড, বান্দরবান পার্বত্য জেলা প্রশাসন ও ট্রাভেল এজেন্সি ফড়িং।
বাংলাদেশ সময: ১০৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৬
এইচএ/এসএইচ